রমাপ� চৌধুরী� জন্ম ২৮ ডিসেম্বর ১৯২২� কৈশো� কেটেছে রে�-শহ� খড়গপুরে� শিক্ষা: প্রেসিডেন্সি কলেজ� ইংরেজি সাহিত্যে এম.�.� গল্প-উপন্যা� ছাড়াও রয়েছে একাধিক প্রবন্ধে� বই, স্মৃতিকথ� এব� একটি অত্যাশ্চর্� ছড়া� বই� বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন সাম্মানি� ডি লি�, ১৯৯৮� ১৯৮৮-তে পেয়েছেন সাহিত্� অকাদেম� পুরস্কার� কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সাহিত্� সম্মান জগত্তারিণী স্বর্ণপদ� ১৯৮৭� ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শরৎচন্দ্� পদ� � পুরস্কার ১৯৮৪� শরৎসমিতি� শরৎচন্দ্� পুরস্কার ১৯৯৭� রবীন্দ্� পুরস্কার ১৯৭১� আনন্� পুরস্কার ১৯৬৩� তাঁর গল্পসমগ্� বইটি� কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃক পুরস্কৃত� হিন্দি, মালয়ালা�, গুজরাত� � তামি� ভাষায় অনূদিত হয়েছে তাঁর বহ� উপন্যা� � গল্প� প্রকাশিত হয়েছে বহ� রচনা� ইংরেজি, চে� � জার্মা� অনুবাদ� তিনি� একমাত্� ভারতীয় লেখক, যাঁর গল্প সংকলিত হয়েছে আমেরিক� থেকে প্রকাশিত লিটারারি ওলিম্পিয়ানস গ্রন্থ�, অনুবাদ করেছেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনট� বি সিলি� উপন্যা� খারি� প্রকাশিত হয়েছে ইংরেজিতে�
রমাপ� চৌধুরী নগ্নভাবে সমাজের অসংগতি তুলে ধরেন... একটু কাপড�-চোপড� দিয়� যে সমাজের কোনো শ্রেণী� মানুষে� অসংগতি/দো� ঢেকে দিবে� সে� চেষ্টা নে� যেন।� উন� গল্পটা বলতে বলতে সাধারণভাবে বা বে� rudeভাবে এম� কিছু কথ� বলেন আম� তখ� ভাবি "আর� এগুল� তো আমাক� নিয়� বলছে" তা� হয়ত� মধ্যবিত্� নিয়� বলেছেন----- "মধ্যবিত্� মানুষগুল� কি ভয়ঙ্ক� ক্রিমিন্যাল। বড়লোকদে� মতই। বিশ্� চরাচরে কোথায় কি অনাচার অবিচার চলছে সে বিষয়ে সব সময়� সচেত�, শুধু নিজে� গৃহকোণটি� বেলায় একেবার� অন্ধ"
এই গল্প� ঘরের কর্ত� জয়দী� এব� উনার মুখে গল্পটা এগিয়ে যেতে থাকে, অর্থাৎ ফার্স্�-পার্সন গল্পটি বলেন� তাদে� বাসাতে যে চাকর ছি� পালা� সে এক শীতে� রাতে রান্নাঘর� ঘুমায়� সকাল� উঠ� যখ� জয়দীপে� স্ত্রী দেখলেন পালা� দরজা খুলছ� না, তখ� জয়দী� এস� দরজা ভেঙে আবিষ্কার করলো পালা� মারা গিয়েছে।� এই নিয়েই ছো� একটি গল্প "খারি�"
এখান� দেখা যাবে জয়দী� নিজে� সাথে অনেক কথ� বলেন এব� নি� থেকে� অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন� এখান� তা� আচার-আচরণ লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, পালা� নামে� চাকরটি মারা যাওয়া� কারণ� সে শুধু ভাবত� থাকে সমাজ কি ভাবছ�, তা� দো� আছ� কিনা,, কিন্তু এতদি� তাদে� সেবা কর� আস� পালানে� জন্য তা� জন্য তেমন একটা শো� প্রকাশ পাচ্ছে না।। আমরা এখান� আর� দেখব জয়দীপবাব� বারবার একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছ� "দো� কি আমার? আর কি কারো দো� নে�?" আসলে� দোষট� কি তা� একার?? নাকি তা� স্ত্রী�, যিনি কিনা পালা� যে এম� হাড়কাঁপান� শীতে পাতল� একটা কাতা গায়� ঘুমিয়েছ� সেদিকে লক্ষ্য রাখেনি?? নাকি তা� বাড়িওয়ালার, যিনি কিনা � রান্নাঘর� একটি ভেন্টিলেটর যে না� সেদিকে লক্ষ্য ছি� না (ভেন্টিলেটর থাকল� হয়ত� এম� হাওয়া-বাতাসে� অভাব� পালানে� মৃত্যু হত� না)?? নাকি পালানে� বাবা�, যিনি কিনা দারিদ্র্যে� জন্য অল্প কিছু টাকা� জন্য নি� ছেলেকে অন্যের ঘর� থাকত� দিয়েছেন(অন্য কোনো কাজে লাগিয়� ছেলেকে হয়ত� তা� সাথে রাখত� পারত�)??? বইটি পড়ত� পড়ত� এম� কিছু প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি....
সর্বশেষে জয়দী� এব� উকিল পরমেশ্বরবাবু� একটি কথোপকথ� দিয়� শে� করছি::----- আম� ভেঙে পড়া গলায� বল� উঠলা�, "কিন্তু কাকাবাবু, দো� কি শুধু আমার? আর কি কারো দো� নে�?"
পরমেশ্বরবাবু, হেসে উঠলেন। বললে�, "জানো জয়দী�, এই যে আমরা আই� নিয়� লড়া� কর�, খুজত� গেলে দেখব� যেকোনো ব্যাপারে বিশ্�-ব্রহ্মাণ্ডের সবাই দায়ী� প্রথ� যখ� প্র্যাকটিস শুরু কর�, আমার সিনিয়� বল� ছিলে�, দ্� লিগ্যা� লা� মাস্� প্রিভে� আপ� দ্� মর্যা� ট্রু�"
বছ� কয়ে� আগ�, এক লক্ষ্মী পুজো� সন্ধ্যায�, ইরানের চিত্রপরিচালক আসগা� ফারহাদী� '� সেপারেশন' দেখেছিলাম। সেদি� থেকে� অস্কার বিজয়ী ছবিট� আমার সবচেয়� পছন্দে� তালিকা� শীর্ষস্থানের দাবি ক্রমাগ� জানিয়� যাচ্ছে� আজকে রমাপ� চৌধুরী� এই ছোট্� উপন্যাসখান� পড়ত� বস� কে� জানি না ছবিট� বারংবা� মানসপট� ভেসে উঠছে� দুটো গল্পের মূলে� সমাজ ব্যবস্থা� প্রত� প্রচ্ছন্� স্যাটায়ারের ছায়া। সম্পর্কে� কূটনীতি যেখানে কোর্টপ্রাঙ্গ� অবধি গড়াতে পিছপ� হয� না� মনস্তত্ত্বের সুচারু নগ্নতা যেখানে রীতিমত ভীতি উদ্রেককারী� গল্পটি তা� ভীষন সিনেমাটিক। মৃণা� সে� পরিচালিত 'খারি� - দা কে� ইজ ক্লোজড' দেখা না থাকলেও, গল্পটি� পুরোদস্তুর সিনেমাটি� সম্ভাবনা লেখকের গদ্যের নিজস্বতা� জেরে� হো�, বা ঘটনাবল� সাজানো� মুন্সিয়ানার জোরে�, দিব্যি বোঝা যায়� মন� হয�, যে� কোনো সিনেমা পড়ে উঠলাম।
অবশ্� বলতে লজ্জ� নে�, এই আমার প্রথ� রমাপ� চৌধুরী� লেখকের নামে� সাথে� পরিচিত ছিলা� না বে� কয়ে� মা� আগে। জীবন� এরকম শক্তিশালী একজন লেখকের প্রবেশ বে� দেরিতে হলেও, খু� একটা ক্ষত� নেই। প্রবাদ বলছে, বেটা� লে� দ্যা� নেভার। এই উপন্যাসটির কেন্দ্রে রয়েছে একটি মৃত্যু� নাটকের প্রধান কুশীলব, জয়দী� � অদিত� এব� তাদে� ছেলে টুকাই। দুশো টাকা�, দেড় কামরার দুটো ঘর জুড়� তাদে� মধ্যবিত্� অভাবের সংসার। প্রাথমিক ভাবে সৎ, কিন্তু ভীষন গতানুগতি� তাদে� এই জীবন� প্রয়োজন পড়ে একজন ফাইফরমাস খাটবার ছেলের। ছো� হলেই ভালো, নিজেদে� মত� কর� শিখিয়� পড়িয়� নেওয়া যায়� মঞ্চ� তা� আবির্ভাব ঘট�, বারো বছরে� গ্রাম্� বালক পালানের। কিন্তু বিপদ বাঁধ� এক শীতে� রাতে� পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রে� অভাব� বারান্দা ছেড়� রান্নাঘর� খি� দিয়� শোয় পালান। এব� পরদি� আর ওঠ� না�
উপন্যাসট� পুরোটা� প্রথ� পুরুষে বর্ণিত, স্বয়ং জয়দীপে� দৃষ্টিকোণে� তা� চো� দিয়েই আমরা উপলব্ধ কর�, একঝাঁক চেনা হতাশ�, ভীতি � ক্রোধে� সমন্বয়। অনুভুতির� যেগুলো ভীষণ ভাবে মধ্যবিত্� সমাজের একচেটিয়া। ভয� হয়। অনুভ� কর� অস্বাচ্ছন্দ্য। না চাইতেও যে� নিজেকে হঠাৎ দেখত� পা� উপন্যাসে� আয়নায়। একটু হলেও, নিজে থেকে ইচ্ছ� হয� অন্যায়গুল� কাধে নেওয়ার। মাথা চাড়� দিয়� ওঠ�, আত্মরক্ষনে� এক সহজা� প্রবৃত্তি। জয়দী� � অদিতির জুতোয় না চাইতেও তা� আমাদের মত পাঠকদে� পা গলাতেই হয়। এব� এখানেই উপন্যাসে� সার্বি� সার্থকতা� It ends up hitting hard and close to home.
অপরাধী কে? কা� হাতে ন্যায়ের বিচা�? আদিম এই প্রশ্নের উত্ত� নিদারুণভাব� খুঁজতে চায় আমাদের গল্পের তথাকথি� নায়কেরা� নানা� দরজায় ঠোকর খেয়� ওর� থিতু হয� না� বারংবা� ভিন্� ভিন্� উত্ত� দ্বারা নিজেকে ভুলিয়� রাখে মাত্র। এছাড়া যে কোনো উপায়ও নেই। Self preservation-এর এই ইদুর দৌড়�, তা� একটা বাচ্চা ছেলে� মৃত্যু� জন্য শো� জায়গা কর� নিতে পারে না� তেরেফুরে বিরাজমান কেবল সে� ভয়। একেই বুঝি প্রকৃত অর্থ� বল� সামাজি� উপন্যাস। চারপাশের সমাজকে নিংড়ে মানুষরুপ� অপরাধীদে� নির্যাসটুক� সঞ্চয় কর� কালি কলমে� জঙ্গলে হাজি� করা। একাধার� ভীষন দার্শনিক, অপরপ্রান্ত� সুনিপু� লেখনী� নিবেদন� এক কথায� দারুন।
"আর আমার মন� হল�, আম� যে� একটা পোস্টমর্টে� কে� চোখে� সামন� দেখত� পাচ্ছি� অহঙ্কারী একটা মানু�, একটা বাড়ির মালি�, একজন স্বার্থপ�, অভদ্� ব্যবহারে অভ্যস্� ব্যক্ত� - তাকে ছুরি দিয়� ফালা ফালা কর� কেটে কে যে� আমার সামন� তা� ছিন্নবিচ্ছিন্ন নগ্ন দেহটাক� মেলে ধরেছে। আম� তা� ভিতরের সবকিছু যে� স্পষ্ট দেখত� পাচ্ছি�"
জয়দী� একজন সাধারণ মধ্যবিত্� ভাড়াটে। স্ত্রী অদিত� আর একমাত্� সন্তান টুকা� কে নিয়� বাড়িওয়ালার সাথে ভাড়াটেদের সাধারণ প্রাত্যহিক কলহবিবাদ� বে� দি� কেটে যাচ্ছিলো শুধুমাত্� অভাব ছিলো কাজে� ছেলে� একটা� তো কাজে� ছেলে একজন জোগাড় হল�,ঘর� থাকত� � দেয়� হল� কিন্তু একদি� সুবো� বালক ঘরের স্বর্ণ গয়ন� নিয়� পালালো� এরপর থেকে কাজে� ছেলেদে� রান্নাঘরের বারান্দা মূ� ছাড়� ঘর� ঢুকত� দেয়� হলোনা। এভাব� এ���দি� পালা� নামে বারো বছরে� লাজু� কিশোরক� তা� বাবা কা� করতে দিয়� গেলো� সব চলছিলো বে�, হঠাৎ একদি� রান্না ঘর� পালা� কে মৃ� পাওয়া গেলো� এরপর থানা পুলি� আর জয়দীপে� ভিতর শুরু হল� এক দ্বন্দ্ব, সাথে সাথে এই উপন্যাসেরও�
রমাপ� চৌধুরী এই ছোট্� উপন্যাসে মানব চরিত্রের বিশা� খুঁটিনাট� নিয়� এসেছেন� একটা মৃত্যু� দায়বো� থেকে শুরু হয� জয়দীপে� soliloquy� ঘটনা� আকস্মিকতার বিহ্বলতা কাটাবা� জয়দীপে� নিরাপত্তাহীনত�,সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য মরিয়া হওয়�, মনের অন্তর্দ্বন্দ্ব, অতী� ঘটনা� পুনরাবির্ভাব, শো�, ভয�, পরিস্থিত� বিশ্লেষণ ইত্যাদ� সাইকোলজিক্যা� এনালাইসিসে� সাথে সাথে সামাজি� রীতি, মানুষে� পারস্পারিক নির্ভরশীলত�, সত্যিকার বাস্তবতা প্রভৃত� এই উপন্যাসে চমৎকার ভাবে চিত্রি� হয়েছে� উপন্যা� পড়া� পর পাঠক খারি� হব� অনেক কিছু থেকে� কিংব� খারি� কর� হবেন� পাঠককে কো� কিছু� থেকে�!
রমাপ� চৌধুরী'� প্রথ� বইটি যেটা পড়েছিলা� সেটা পড়া� অভিজ্ঞতা সুখক� ছিলোনা।কিন্ত� এই বই পড়ে শ্রদ্ধ� আসলো উনার প্রতি। রমাপ� চৌধুরী নিশ্চয� আর� পড়বো। Nayeemul Arefin ভা� কে ধন্যবা� সাজেস্� করবা� জন্য�
বাড়� বদলে যাওয়া� মত� বদলে যাওয়া মানুষে� মনস্তাত্ত্বি� ব্যাপা� স্যাপা� ছো� পরিসরে কয়েকট� পাতায় আঁকা� মুন্সীয়ানায� মুগ্� রাখা� এক আশ্চর্� ক্ষমতা নিয়� রমাপ� রায় সাতচল্লি� বছ� আগেই লিখে গেছে� চকচক� ফকফক� আলোর ভিতরকা� অন্ধকারে� আলোকচিত্র।
খিদে� জ্বালা জুড়াত� একাল সেকা� সব কালে� কচ� কচ� হাতে হাড়ভাঙা খাটুনি� দায়িত্ব পরিবার কিছুটা দায়� পড়ে কিছুটা স্বভাব দোষে দুপয়সার দা� দুহা� পেতে নিয়েছে।
জয়দীপর� হয়ত সামান্� মর্মপীড়ায� ভুগে এই মর্মান্তিক ঘটনাতে, কিছু দি� লো� বাঁচিয়ে চো� এড়িয়� চলতে থাকা জীবন� সন্তানহারা হারানে� সাথে হায় প্রকাশ কর� ঠিকই� কিন্তু টন� নড়তেই পলকে� মধে্যই পথ পাল্টে উকিল বাড়� মাড়িয়ে ডা� খানা পেরিয়� খুনে� খানাখন্দ থেকে পা� পাওয়া� রাস্তাখানি ঠিকই পরিস্কার কর� ফেলে দিনশেষে।
পালানে� মৃত্যু কার্বন মনোঅক্সাইডের ধুঁয়ায় না অদিতির উপেক্ষায� অবহেলায় প্রব� শীতে ধুঁক� ধুঁক� প্রাণপ্রদী� নিভে যায় তাতে কারো কি বা আস� যায়� কোর্টে� it was a case of plain and simple accident রায়ের আড়ালে� চাপা পড়ে যায়�
বাঙালি মধ্যবিত্তে� গা বাঁচিয়ে চলার পলায়নপর মনোবৃত্তিক� রমাপ� চৌধুরী� মত� আর কে� বুঝত� পারেননি। তিনি এমনভাব� মধ্যবিত্তে� দায় � একমাত্� নিজেকে রক্ষ� করার দরদক� বইয়ের পাতায় তুলে ধরেন যে, মন� হয� এর চাইত� বাস্তব আর কিছু� হত� পারে না� তারই একটি অত্যুত্ত� দৃষ্টান্� 'খারি�'�
শিশু শ্রম নিষিদ্ধ। তব� তা গল্পের কাজি� গরুর মত� কেতাবে আছ�, গোয়াল� নেই। আর, অনেক বাড়িতেই গৃহকর্মী হিসেবে শিশুদে� দেখা যায়� এমনই একজন শিশু গৃহকর্মী দশ কিংব� বারো বছরে� পালান। তা� বাবা দারিদ্র্যে� যন্ত্রণায় বাধ্� হয়ে তাকে জয়দী� স্যানা�-অদিত� স্যানালে� বাড়িত� গৃহকর্মী হিসেবে দিয়� গেছে� এক শীতে� ভোরে এই পালানকেই দেখা গে�, পাকঘরে� ছিটকিন� আটকে সেখানে মর� পড়ে আছে। রাতে সিঁড়ি� নিচে ঘুমায় পালান। তব� শীতে� তীব্রতায� সেখানে থাকত� পারেনি� তা� হয়ত� ঘুপচ� রান্নাঘর� দুয়ার আটকে ঘুমিয়েছিল� আর ওঠেনি। তা� মৃত্যুকে কেন্দ্� করেই এক মনস্তাত্ত্বি� দ্বন্দ্বের মুখোমুখি হয� গৃহকর্তা জয়দী� স্যানা�, গৃহকর্ত্রী অদিত� স্যানা� � তাদে� বাড়িওয়ালা। এই মৃত্যু� ঘটনায় তারা দায়ী হত� পারে কি না, তা নিয়� দুশ্চিন্তায় পড়ে যায়�
মানবিকতা নয� বর� মধ্যবিত্তে� ভয� তাকে নিয়� অপরে কী বলবে, পুলি� ধরবে কি না, আদালতে কেমন হব� ইত্যাদি।
রমাপ� চৌধুরী এক অসামান্য লেখক� তাঁর উপন্যাসগুলোর কলেব� ছোটো� কিন্তু অত্যন্� শক্তিশালী� ভাষা� কারুকা� নেই। সহজবোধ্য অথ� গভী� বার্তাবহ� কর� তাঁর উপন্যাসগুলো। এমনই একটি লেখা 'খারি�'�
মধ্যবিত্� সমাজের সে� মানুষগুল� যারা প্রতিনিয়ত মুখে ভদ্রলোকে� মুখো� আঁটা� চেষ্টা করছে� লেখক রমাপ� চৌধুরী� সৃষ্টি খারি� (১৯৭৪) বইটি সে� সমাজের সামনের বিবেকে� দর্পণে� মত�
পালা� নামে� একটি শিশু ভৃত্যে� মৃত্যু� মধ্য দিয়� কাহিনী� সূত্রপাত� বদ্ধ রান্নাঘর� একাকী দমবন্ধ হয়ে ধুকে ধুকে মারা যায় ১২ বছরে� পালান। আর এই মৃত্যুকে ঘিরে মালি� জয়দীপে� মনস্তাত্বি� বিশ্লেষণ এব� মানসিক দায়বদ্ধতাকে নিয়� বিস্তা� লা� করেছ� উপন্যাসটি।
পালানে� মৃতদেহ আবিষ্কারের পর থেকে মালি� জয়দীপে চিন্তা� কেন্দ্রবিন্দ� হয়ে দাঁড়া� কিভাবে এই মৃত্যু� সামাজি� দায়বদ্ধতা থেকে সে নিষ্কৃতি পাবে� জয়দীপে� এই চিন্তা বস্তুত পুরো সমাজকে প্রতিনিধিত্ব করে। যারা মানুষে� জীবন থেকে অভিযোগের ভয়ক� বেশি আম� দেয়�
একটি শিশু� মৃত্যু হল� আর সে চাকর হল�, মালিকে� মন� প্রথ� যে চিন্তা উঁকি দেয় সেটা হল� কিভাবে এই ঝামেলা থেকে খু� সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে� একটি শিশু, একটি মানুষে� মৃত্যু হয়েছে� একটি চিন্তা� জগ� হয়েছে বিলুপ্�, মুছে একটি পার্থি� স্বত্বার অস্তিত্ব� তবুও মালিকে� কাছে এই আবেগ মূল্যহীন। মৃতদেহটি তখ� উটকো ঝামেলা� উকিল, ডাক্তারে� পরামর্� নিয়�, প্রয়োজন� পুলিশক� টাকা খাইয়ে যত দ্রু� এই অযাচিত পরিস্থিত� নিয়ন্ত্রন� তত তাড়াতাড়ি মিলব� শান্তি�
কত সহজে একটি মানুষে� অস্তিত্ব অস্বীকা� কর� যায়� কারণ মালি� উঁচু শ্রেনী আর ভৃত্� নিচু শ্রেনীর। ভৃত্� মারা গেলে� কো� দুঃখ নে� অথ� মালিকে� সন্তান মৃত্যু থেকে ভয� পেলে� প্রচণ্� সতর্কতা। অথ� যে মানুষট� মারা যা� সে� কারও না কা� সন্তান� কারও না কারও স্বপ্ন�
বাংল� সাহিত্যে� সেরা সাহিত্যগুল� বেশিরভাগ রচনা হয়েছে গ্রামী� জীবনের বাস্তবতাকে কেন্দ্� করে। গ্রামী� জীবনের দারিদ্রত� কষাঘাত� যে নির্মমতা লুকিয়� আছ� সেটা যেমন উপেক্ষ� কর� যায় ঠি� নয� তেমন� শহ� জীবনের ভাঁজ� ভাঁজ� যে অন্ধকা� লুকিয়� সেটাকে� অবজ্ঞা করার উপায� নেই।
লেখক রমাপ� চৌধুরী তাঁর খারি� উপন্যাসে শহরে� ভদ্র পরিবারগুলো� মনস্বত্ত� লুকিয়� থাকা সে� অন্ধকারে� খোঁজ দিয়েছেন� যেখানে আমরা দেখত� পা� মানবিক হওয়� আর নিজেকে মানবিক ভাবা ব্যাপা� সম্পূর্ণ ভিন্� ব্যাপার।
রমাপ� চৌধুরী� 'বনপলাশী� পদাবলী�' পড়া� অনেক দি� পর আরেকটা বই পড়লাম� খারিজ। ছোট্� একটা উপন্যাস। কিন্তু কি গভী� ভাবে দা� কেঁট� গেলো মনে। জয়দী�-অদিতির আর তাদে� ছেলে টুকাইক� নিয়� তাদে� মধ্যবিত্� ছোট্� সংসার। সে� সংসারে তাদে� কাজে� জন্য� আরেকটি প্রাণী আস�, না� তা� পালান। তা� বয়ে� এগার� কি বারো হবে। � টুকাইয়ে� বয়সী� টুকাইয়ে� সঙ্গ� তা� ভীষণ ভাব। টুকাইও তাকে ভীষণ পছন্� করে। হু� কর�, এক শীতে� রাতে পালা� মারা যায়� তা���পরই শুরু হয� মূ� কাহিনী� পালানে� মারা যাওয়াকে কেন্দ্� কর� জয়দী�-অদিতির মধ্যবিত্� সংসারে শুরু হয� এক ঝড�, সে ঝড� যতটা না বাজ্যি�, তা� চেয়েও বেশি মনস্তাত্ত্বিক। জয়দী� আর অদিতির মনোজগতের এই তোলপাড়কেই রমাপ� চৌধুরী এক শৈল্পি� বয়ানে� মাধ্যম� সমাজের দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন কতগুলো প্রশ্ন� সে প্রশ্ন� পাঠকের ভাবনার জগতে তুলব� এক কালবৈশাখী� পাঠক উত্ত� খুঁজবে হন্য� হয়ে� হু� কর� এম� একটা ভালো বই আবিষ্কার করতে পেরে বে� ভালো লাগা কা� করছে�
মাত্� ৬৭ পৃষ্ঠা� একটা বই কিন্তু কি দারুণভাব� লেখা� অদিত� আর জয়দ্বীপে� সংসারে� কাজে� ছেলে হল� পালান। একদি� সকাল� রান্নাঘর� পাওয়া যায় তা� মৃতদেহ� অতঃপ� শুরু হয� তা� মৃত্যুকে ঘিরে তদন্ত। সে� তদন্তে যা বেরিয়� আস� তা থ্রিলারে� এন্ডিং এর মত চটকদার না হলেও মস্তিষ্কের চিন্তাকেন্দ্রে আঘাত হানা� মত অবশ্যই� আদতে সামাজি� ঘরানার উপন্যা� হলেও লেখকের লেখনী এম� যে পাতা� পর পাতা না উল্টিয়ে পারা যায় না� সবাইকে পড়ত� বলার মত বই এটা।
রমাপ� চৌধুরী কে চিনেছিলা� "বাড়� বদলে যায়" পড়ে� তখ�-� বুঝেছিলা�,এই লো� রত্ন� আমার ধারণ� ভু� নয�,তা� প্রমাণ তা� আর� একটা উপন্যা� শে� করে। না� "খারি�"� অসাধার� একটা উপন্যাস। মানুষে� নিচুতা,নির্মমতা,স্বার্� চিন্তা� কি ভয়াবহ রূ� হত� পারে,তা� ঝল� আমরা দেখত� পা� " খারিজে"�
একটি বারো বছরে� কাজে� ছেলে� অস্বাভাবিক মৃত্যু দিয়� গল্পের শুরু� আর তাকে কেন্দ্� করেই একটি মধ্যবিত্� পরিবারের নানা টানাপোড়েনের গল্প এই খারিজ। অদ্ভুত সুন্দর�
বারো বছ� বয়সী গৃহকর্মী পালা� এক রাতে মারা যায় জয়দ্বীপদের ফ্ল্যাটে� ছোট্� রান্নাঘর�, শীতে কাঁপতে কাঁপতে আর কার্বন মনোক্সাইডে� বিষাক্� ধোঁয়ায়� অস্বাভাবিক মৃত্যু� ক্ষেত্রে যা হয�; পুলি� আস�, পাড়াময় আলোচনা শুরু হয়। সাথে সাথে একদিকে শুরু হয� পালানে� লা� কাটাছেঁড়া আর দা� করার আয়োজন � পুলিশি তদন্� আর অন্যদিকে জয়দ্বী�-অদিত� দম্পতি � বাড়ির মালি� নটবর রায়ের মামল� থেকে নিজেদে� বাঁচান� � সামাজি� অবস্থা� অক্ষুণ্ণ রাখা� যৌ� প্রয়াস। আর একপর্যায়ে এই দু� বিপরীতমুখী ধারা এক� অপরে� মুখোমুখি হয� করোনারের কোর্টে�
মাত্� ৬৬ পৃষ্ঠা� একটা উপন্যাস। � এত� লেখক আর কি বলবে�' এট� ভেবে যদ� বইটা না পড়ে� তাহল� বড� ধরণে� ভু� করবেন। আম� এই ভুলট� করিন� কেনন� আম� এর আগেই লেখকের শ’খানেক পৃষ্ঠা� � বাড়� বদলে যায়' বইটা পড়েছিলাম। বল� বাহুল্� যে � ছোট্� বইটা পড়ে� মুগ্� হয়েছিলা� লেখকের বিষয়বস্তু নির্বাচন, ভাষা� শক্ত� আর সমাজের ব্যবচ্ছে� দেখে� আর তা� এই বইটা নিয়েও আমার খু� বেশি প্রত্যাশ� ছিল। আর সত্য� বলতে, পুরোপুরি মিটেছে সে প্রত্যাশা।
এককথায� বললে গেলে বইটা আমাদের মধ্যবিত্� সমাজের মুখো� উন্মোচ� করেছে। মধ্যবিত্� সমাজ যে কত ধরনে� মুখো� পর� থাকে তা� প্রতিট� খুলে খুলে দেখিয়েছেন লেখক� রাস্তা� ভিখারিটাকে নিয়� তো আমরা চিন্তি� কিন্তু নিজে� গৃহকর্মীকে নিয়�? অপরাধমুক্ত সমাজ তো চা� কিন্তু নিজে অপরা� করলে? ধনীরা আমাদের ঠকায� বল� চেঁচাই তো বট� কিন্তু গরীবদের আমরা কি কর�? ধনীরা সিস্টে� ব্যবহা� কর� আমাদের উপরে উঠতে দিচ্ছে না বল� হতাশ হই কিন্তু গরীবদের জন্য কি আমরা রাস্তা ছেড়� দি�? মানবিক বল� তো নিজেদে� দাবি কর� কিন্তু কতটা মানবিক আচরণ কর�? বইটা পড়ত� পড়ত� এই প্রশ্নগুলো� বারবার মাথায় আসে।
নিজেকে দায়ী ভাবা, নিজেকে অপরাধী ভাবত� মানু� যে কতটা অনিচ্ছুক সেটা দেখা যায় জয়দ্বীপদের মাধ্যমে। তাইত� চাকরের মৃত্যু� দায় সে নিতে চায় না ; দায় চাপাতে চায় স্ত্রী� উপ�, বাড়িওয়ালার উপ�, পালানে� বাবা� উপ� বা সমাজের উপর। আর এই দায় চাপানো� রাজনীতি করতে গিয়� সে পুলিশক� বা ডাক্তারক� হা� করতে চাওয়া, চিরবৈরী বাড়িওয়ালার সাথে জো� গঠ� কর� � কোনোকিছু করতে� সে পিছুপা হয� না� নিজে� স্বার্থরক্ষায় মশগু� জয়দ্বী� পালানে� লাশটাক� লাশও ভাবত� পারে না, লাশটাক� তা� কাঁধ� চেপে বস� ভারী বস্ত� মন� হত� থাকে তার। এই যে আমাদের নিজেকে দায়মুক্তি দিতে সর্বাত্ম� চেষ্টা � এটাই লেখক দেখিয়েছেন জয়দ্বীপে� মাধ্যমে।
এক প্রচণ্� শীতে� রাতে দম বন্ধ হয়ে মারা যায় জয়দী� সান্যা� � অদিত� সান্যা� দম্পতি� বাড়ির কিশো� পরিচার� পালান্� এই ঘটনা� পর আসন্� সংকট সম্বন্ধে জয়দীপে� দুশ্চিন্তা, উৎকণ্ঠ� আর ভয� থেকে উঠ� আস� তা� অতী� জীবনের নানা ঘটনা� আর আমাদের সমাজ সম্বন্ধে একটা সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি।
পালানে� মৃত্যু� পর স্থানীয় থানা� এসআই যখ� পরিদর্শন� এস� বলেন,‘আ� সি, ভেন্টিলেটর নে�?�, তখ� জয়দী� উপলব্ধ� কর�, আসলে আমাদের সমাজের কোথা� কোনো ভেন্টিলেটর নে� যেখা� দিয়� একটু মুক্� বাতা� আসতে পারে� পালানে� তোষক তুলে এসআই যখ� ঘৃণাভর� বলেন, ‘কী ডার্টি রে বাবা!�, সেটা আসলে প্রচ্ছন্নভাব� আমাদের সমাজব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করে।
শেষমেশ এই কেসট� খারি� হয়ে যায় কারণ আদতে কে� দোষী নয়। এমনক� পড়া� সময় পাঠক� কারও দো� বে� করতে পারবেন না� কে� থেকে মুক্তি� পর� জয়দী� তা� বাড়ির কিশো� চাকরের জন্য প্রকৃত দুঃখ অনুভ� করে। পালানে� মৃত্যু� পর জয়দী� তাকে ভয� পাচ্ছি� এই ভেবে যে পালান্ তাকে বুঝি বড� কোনো বিপদের সামন� ফেলে গেল। কিন্তু বিপদ থেকে মুক্তি� পর� তা� মন� দুঃখবো� আস� এব� করোনারের বল� শে� কথ� ‘দ� কে� ইজ ক্লোজ্ড� তা� কাছে উপহাসে� মত� মন� হয়।
এই কে� নিয়� ছোটাছুটি� সময়� জয়দী� এডভোকে� পরমেশ্বরবাবু� কাছে শুনত� পায় এক নির্মম সত্য, ‘একট� মানুষে� মৃত্যু, আমাদের দেশে একটা মানুষে� জীবনের চেয়� অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।�
This has become my favourite Bangla book. Great social commentary. Maybe I am sensitive but I cried reading this 🤨 Who should we blame for Pathans death? This story will have a different perspective to different people.
#পাঠকেরচোখে বই ~ �#খারিজ♦ লেখক ~ #রমাপদ_চৌধুরী প্রকাশ� ~ আনন্� পাবলিশার্স মূল্� ~ ১০� টাকা
শ্রদ্ধেয� রমাপ� চৌধুরী যখ� এই উপন্যাসট� লিখেছিলে�, তা� দশ বছ� বাদে আম� পৃথিবীতে আসি। আর তারও চৌত্রি� বছ� পর আজ পড়লাম "খারি�"� বিশ্বা� করুন, একটু� বানিয়� বলছি না, মন� হল আয়নায� নিজেকে দেখলাম অনেকদি� পর� এক নিশ্বাসে দু ঘন্টার মধ্য� পড়ে শে� কর� ফেললাম প্রায় ২২,০০� শব্দের এই উপন্যা�, আর মন� হল লেখক ম্যাজি� জানতেন� নয়ত� একটা গল্পের মধ্য� মানুষে� এতগুলো ইমোশ� এম� নিখুঁতভাবে এঁকে দেওয়া কোনও সাধারণ লেখকের পক্ষ� সম্ভ� নয়। "খারি�" তা� হয়ে রই� 'সাহিত্যে� সঙ্গ� জীবনের ভালোবাসাবাসি� এক নিবিড় আলেখ্য'�
যাঁর� এই উপন্যাসট� পড়েনন�, তাঁদের মধ্য� অনেকেই হয়ত� মৃণা� সেনে� নির্দেশনায� ১৯৮২ সালে রিলি� হওয়� সিনেমাটি দেখে থাকবেন, যা এই বইয়ের ওপ� ভিত্তি করেই নির্মি� হয়েছিল। অঞ্জ� দত্ত, মমতা শঙ্ক� � শ্রীলা মজুমদা� অভিনী� সে� সিনেমাটি রিলিজে� পরের বছরই জিতে নিয়েছিল তিনট� ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্� � কা� ফিল্মোৎসবে� জুরি সম্মান� রমাপদবাবুর লেখা পড়ত� গিয়েই মন� হল যে� একটা সিনেমা দেখে উঠলাম।
"যাকে আমরা সমাজ বল�, তা� নক� আয়োজনের মাঝখান� একলা-মানুষে� এম� ধূল্যবলুণ্ঠি� বিপন্নতা, এব� চতুর্দিকের সাজানো সমারোহের প্রত� এম� অব্যর্� ধিক্কা� বাংল� উপন্যাসে বুঝি এই প্রথম।"
বইয়ের ব্যা� কভার� প্রকাশকে� লেখা এই লাইন কট� দেখে� বুঝত� পারবেন যে ১৯৭৪ সালে এম� ঘরানার লেখা সে� সময়ের চলতি ধারা� থেকে বে� আলাদ� ছিল। তব� প্রায় চুয়াল্লিশ বছ� পর আজ� মন� হল উপন্যাসটির মূ� বিষয়বস্তু এখনও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক� এভাবেই বোধহয় বড� লেখকদে� আলাদ� কর� চিনে নেওয়া যায়� তাঁদের সৃষ্টি যু� যু� ধর� অম� থাকে�
কাহিনী� মূ� চরিত্র জয়দী� সে� একজন সৎ চাকুরিজীবী� যারা ঘু� খায়, তাদে� মন� মন� ঘৃণা করেন� চটপট শুয়� পড়ে� আর দেরি কর� ওঠেন� তব� সোয়� আটটা� মধ্য� উঠ� টুকাইক� স্কুলে� জন্য তৈরি করতে জয়দীপে� স্ত্রী অদিতিক� অনেক ভোরে� উঠতে হয়। টুকা� হচ্ছ� জয়দী� � অদিতির একমাত্� ছেলে� দুশো টাকা ভাড়ায� দেড় কামরার এই ঘর� শান্তিতে সংসারযাপনে সাহায্� কর� আর একটি বারো বছ� বয়সী ছেলে� না� তা� 'পালান্'� জয়দীপদের বাড়িতেই সে থাকে, টুকাইয়ে� দেখাশুনা কর�, ফাইফরমাস খাটে, আর মাসে� শেষে এই কাজে� বিনিময়ে গ্রা� থেকে তা� বাবা হারা� এস� কুড়িটাক� পারিশ্রমিক নিয়� যায়� পালান্-এর এই অদ্ভুত নামে� মানে আমরা জানত� পারি ওর বাবা হারানে� মুখে� "ছেলে � একটাই। দু-দুটো হয়ে মর� গে�, ওর ঠাকম� বললে, না� রা� পালান্� তব� যদ� ভগবা� রাখে।ত� জন্মের পর ওর মা'টা� পালালো� বড� আকাল যাচ্ছে, ঘর� ভা� নাই। আপনা� ইখান� চাট্টি খেতে পাবে, মাইন� পাবে� এই বাজারে পাঁচ পাঁচটা হা�, নিজেরই ভা� মেলে না�"
বাড়িওয়াল� রায়বাবু মানুষট� এদিক� সুবিধে� নন� তিনি বিস্তর চেষ্টা কর� যা� যাতে পুরন� ভাড়াট� তুলে দিয়� নতুন কাউক� এন� বেশি ভাড়� পাওয়া যায়� কিন্তু গল্পের আস� শুরু হয� যখ� একদি� সকাল� অদিত� পালান্-কে ওর রোজকার শোওয়া� জায়গা বারান্দায় খুঁজ� না পেয়� খেয়াল কর� রান্নাঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ� কিন্তু অনেকবা� "পালান্ পালান্" বল� চেঁচিয়ে� যখ� সাড়� মেলে না, তখ� জয়দীপকেও ঘু� থেকে উঠতে হয়। বাড়িওয়াল� রায়বাবু� নেমে আসেন চেঁচামেচ� শুনে এব� রান্নাঘরের দরজায় লাথি মেরে খুলতেই তিনজনে� হতবা� হয়ে যায়� ওদের জন্য অপেক্ষ� কর� থাকে এক চর� বিপদ, যা উপন্যাসে� বাকি অংশে� চালিকাশক্ত� হয়ে পাঠককে টেনে ধর� রাখে শে� পাতা অবধি�
ঘটতে থাকা বিভিন্� ঘটনা� মধ্য� দিয়েই জয়দীপে� মনের নানা� উপলব্ধ�, চিন্তা, বুদ্ধি, ভয� যে� আমাদের� মনের কথ� বল� চলে। প্রত্যেক পাতায় মন� হয� জয়দী� বা অদিত� কি আম� নিজে�? লেখক কিভাবে জানলেন যে আমরা বিপদের মুহূর্তে ঠি� এইভাবে� ভাবনাচিন্ত� কর�! ঘটনা� মূ� ইমোশ� থেকে সর� এস� নিজে� স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করতে থাকি! অদ্ভুত দক্ষতায় লেখক একের পর এক এন� হাজি� করেন উকিল পরমেশ্বরবাবু � তা� অধীনে কা� কর� শ্যামলীকে� কে এই শ্যামলী? কী সম্পর্� তা� জয়দীপে� সাথে? অদিতিক� সে কি চেনে? বদলে যেতে থাকে চরিত্রগুলি� বদলে যেতে থাকে প্রত্যেকের চিন্তাধারা� পালান্-এর বাবা হারা� কিভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেন? জয়দীপে� কলিগ রাধানাথে� উপস্থি� বুদ্ধি কি পারে জয়দীপক� এক কালিমাচ্ছন্ন ভবিষ্যতে� হা� থেকে বাঁচাত�?
উত্ত� পেতে হল� একবা� অবশ্যই পড়ু� অসাধার� এই উপন্যাস। নিজেকে হারিয়� ফেলবেন� বইটি� ষষ্ঠ মুদ্রণ ২০১৬ তে� যখ� কাহিনী� শে� অনুচ্ছেদ� জয়দী� বুঝত� পারে পালান্-এর জন্য তা� আবেগ কতটা, তখ� পাঠক হিসেবে এক ফোঁট� চোখে� জল হয়ত� সে� বারো বছ� বয়সী ছেলেটা� জন্য নিবেদন করতে বাধ্� হবেন� আর তা� রমাপ� বাবু এই বইটি উৎসর্গ করেছেন তাঁর গল্পের চরিত্রকে�, বা হয়ত� পালান্-এর মত� ছেলেদের। বইয়ের শুরুতে� চোখে পড়ব� সে� লাইন�
অদিত� আর জয়দীপে� মধ্যবিত্� সংসারে� গল্প! আর দশজন সাধারণ চাকুরীজীবী পুরুষে� মত জয়দী� নির্ঝঞ্ঝাট জীবন পছন্� কর�, পছন্� কর� শীতে� সকাল� বেলা পর্যন্� লেপে� ওম নিয়� শুয়� থাকত�! অদিত� আর জয়দী� প্রে� কর� বিয়� করেছিল� আর টুকা� তাদে� একমাত্� সন্তান, বিয়ের পর অদিত� অনেক গুছিয়� জয়দীপে� কাছে একটা কাজে� ছেলে চায় ছোট্� ছেলে, ফায়ফরমা� খাটব� ইত্যাদ� ইত্যাদ�! জয়দী� কথ� রাখে কিন্তু পর পর দুইজ� কাজে� ছেলে চল� যায় এর মধ্য� একজন আবার চুরি কর� পালিয়� যায়! এমতাবস্থায� প্রতিবেশ��� সাহায্যে ছোট্� এক গ্রাম্� ছেলে যা� না� পালা� সে আস� জয়দী� আর অদিতির বাড়িত�, ছেলেটি� বৃদ্� বাবা অভাবের ঘর� ছেলেটিকে রাখত� না পেরে মাসি� ২০ টাকা মাসি� বেতন� রেখে যায় তা� নতুন কাজে� জায়গায়, বাবুদে� বাসায় থাকব� কা� করবে খাবে, চিন্তা� কি আছ�! পালা� রয়ে যায়, বন্ধুত্ব হয� প্রায় তারই সমবয়সী টুকাইয়ে� সাথে! এক শীতে� সকাল� অদিত� রান্নাঘরের দরজায় আঘাত কর� পালানক� ডেকে� কো� উত্ত� পায় না, ভয� পেয়� সে জয়দীপক� ডেকে আন�, বাড়িওয়াল� এস� দরজা ভেঙে ফেলে�, এখান থেকে� মূ� গল্পের শুরু�
আমার কথ� : এত ছোট্� পরিসরে যে এত কিছু প্রকাশ কর� সম্ভ� তা না পড়ল� বুঝতেই পারতাম না, আবেগ, নিজে� ভেতরের চাতুরী, নিজেকে বিবেকে� কা� গড়ায় দাড় করিয়ে নিজে� বিচা� কর�! এক কথায� আম� মুগ্�! জাদুকরী লেখনী! আমার রেটি� : �.৫। হ্যাপি রিডিং।