তালালদের অদ্ভুত ট্রেনট� ছুটছে। গত তেপান্� বছ� ধর� কেবল� ছুটছে। ট্রেনে� একটা নামও আছে। বি-১৯৭১�
বি-১৯৭১ এর যাত্রীরা ভুলোমনা। সবকিছু ভুলে বস� থাকে� সওয়ারীদে� মত ট্রেনও বিস্মৃতিপরায়ণ� দি� ভুলে যায়� যেখানে সেখানে হারিয়� যায়� যেদিকে যাওয়া� কথ�, সেদিকে না গিয়� পথ ভুলে চল� যায় অন্য কোথাও। অন্য কোনো জায়গায়� তখ� ট্রেনে� চালকরা নেমে গন্তব্� ঠি� কর� নেন। তাদে� গন্তব্�? দখিনের এক জায়গা� যাকে সবাই স্বর্গরাজ্� বল� ডাকে� যেখানে বাহারী রংয়ের মা� সাঁতরে বেড়ায়। যেখানে অনন্� সু�, অনাবিল আনন্দ। পৃথিবী জুড়� যে আকস্মি� মড়ক নেমে এসেছ�, যা� জন্য একদল মানু� বাধ্� হয়ে ট্রেনে� যাত্রী হয়েছে, তা� ছোঁয়া এখনো স্বর্গরাজ্যে লাগেনি� স্বর্গরাজ্� এখনো মড়ক-মুক্ত।
কিন্তু অর্ধ শত� হয়ে গেলে� স্বর্গরাজ্যে আর পৌছানো যাচ্ছে না� ট্রেনে� প্রশাস� বদ� হয়। ট্রেনে� হর্তাকর্তা বদ� হয়। বদ� হয� ট্রেনে� দিক। উত্ত� থেকে দক্ষিণ� পূর্� থেকে পশ্চিম� কিন্তু স্বর্গরাজ্� তব� রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। তব� ট্রে� বারবার হারিয়� যায়...
তব� কি ইচ্ছ� করেই ট্রে� হারিয়� যাচ্ছে? বারবার দি� বদ� করেও কে� গন্তব্যে পৌছানো যাচ্ছে না? সমস্যা তব� কোথায়?
জাহি� হোসেনে� স্বভাবসুলভ রসবো� পুরোপুরি অনুপস্থিত। রূপক একেবারেই সরাসরি ব্যবহৃ� হয়েছে, আরেকটু প্রচ্ছন্� হল� ভালো লাগতো। শে� অংশট� সুন্দর, কিন্তু অনেক বেশি নতুনত্� আছ� বল� যায় না।গল্� খু� দ্রু� এগিয়ে যায়, স্বর্গরাজ্যে� দিকে ধেয়� যাওয়া ট্রেনে� মতোই� বইয়ের দৈর্ঘ্� আর� বড� হওয়� উচিত ছিলো�
পোস্� এপোক্যালিপ্টিক পৃথিবী� এক ভয়ংকর ভাইরাস� পৃথিবী� জনসংখ্যা শূন্যে� কোঠায় নেমে এসেছে। এর প্রভাব� তাবৎ জীবজন্তু প্রচণ্� হিংস্র � মানুষখেক� হয়ে উঠেছে। সভ্যতা� ধ্বজাধারী গুটিকত� সম্প্রদায়ের মাঝে একদল মানু� আশ্রয় নিয়েছ� একটি ট্রেনে� ট্রেনট� ছুটে চলছে "স্বর্গরাজ্�" অভিমুখে। গণতান্ত্রি� ধারায় ক্ষমতা� পালাবদ� হয� ট্রেনে� অক্লান্ত পরিশ্র� কর� ট্রেনে বেঁচ� থাকে মানুষেরা� মাঝে মাঝে ট্রে� দিকভ্রান্ত হয়ে যায়� ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তির� আশ্বাস দে� ট্রেনক� সঠিক পথ� পরিচালিত কর� স্বর্গরাজ্যে নিয়� যাওয়ার।
আমরা এই ট্রেনে সময়ের ক্রমধারা� সাথে খু� পরিচিত একটি (বা অনেক) দেশে� সাদৃশ্� পাই। যেমন:
"ট্রে� বারবার পথ হারায়� আন্দোল� হয়। বিদ্রো� হয়। যা� গা বেয়� আস� রক্তক্ষয়ী বা রক্তপাতহী� অভ্যুত্থান� ক্ষমতা� হাতবদল হয়। নেতারা হা� মেলান। বামপাশের জন ডানপাশ� আস�, ডানপাশের জন যায় বামপাশে। সাদা পরিণ� হয� কালোয়, কিংব� কালো রূপান্তরিত হয� সাদায়� কখনো সখনো মাঝখান থেকে ক্ষমতা দখ� কর� নেয় জলপা� রঙের কেউ। এভাবেই চলছে�"
"ট্রেনে কখনো� ভয� পাওয়া� কিছু থাকে না� আর পরিস্থিত� সবসময় নিয়ন্ত্রণেই থাকে�"
মাঝে মাঝে� হিংস্র শ্বাপদের আঘাত� মারা পড়ে কিছু জলপা� রঙ� যোদ্ধা� তাদে� জয়ে ট্রেনে ভালো খব� পরিবেশিত হয়।
ট্রেনে� মানুষে� আর� একটি মহামারীতে আক্রান্ত� স্মৃতিভ্রংশতা। কিছু মন� রাখত� পারে না মানুষ। সরকা� প্রণী� কিছু নিয়মকানুন ছাড়� কোনো শিক্ষা� ব্যবস্থা নে� ট্রেনে� বই নিষিদ্ধ। ইতিহাস লিপিবদ্ধ কর� চর� দণ্ডনীয় অপরাধ। এর� মাঝে বোধোদয� হয� কিছু স্বাধীনচেত� মানুষের। তারা কৌতূহলী� এই কৌতূহল কি তাদে� জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কী - তা জানত� সাহায্� করবে?
মোটামুটি ভালো� লাগলো।
"ছায়াবাজ� পুতু� রূপে বানাইয়া মানুষ। যেমন� নাচা� তেমন� নাচি পুতুলে� কি দো�?"
লিখনশৈলী বলতে কিছু� না�, জাহি� হোসেনে� বই আর যাইই হো� পড়ে আরাম পাওয়া যায়� এটাত� সে� আরামটা� নাই। টুইস্টগুলা একেবারেই আরোপিত, মানে এমনস� টুইস্ট যা কোনোভাবে� মানানস� নয়। ১৫� পেইজের বইতে� রিপিটেশনের আধিক্য চোখে পড়া� মত� এক� কথ� ঘুরাইয়া ফিরাইয়া বারবার বল� হইছে� বলতে গেলে রাইফেলের ঠা ঠা শব্দ দিয়� পুরা দুইট� চ্যাপ্টা� কাভা� কর� ফেলছে। এক লাইন পর পর ঠা ঠা ঠা ঠা!! মানে কি এগুলার? বই ছাপাইত� হব�, তা� লিখত� হব� টাইপ চিন্তা থেকে বই লেখা� দরকা� না� তো! মন� হচ্ছ� ভূমিকায় যেমন বল� হয়েছে, আসলে জো� কর� লিখিয়� নিয়� হয়েছে বইটা�
সুলেখক জাহি� হোসেনে� সম্পূর্ণ নিরীক্ষাধর্মী একটা কা� স্বর্গরাজ্য। সচরাচর যেমন জাহি� হোসেনক� আমরা দেখি এই বইয়� নিজেকে অনেকটা� বদলেছে� তিনি� বইয়ের জনরা� ডিস্টোপিয়ান বা পোস্� অ্যাপিক্যালিপটিক� অনেকটা রূপকধর্মী� একটা ট্রেনক� রূপক হিসেবে দেখানো হয়েছে একটা দেশে� মত কর�, যা� লক্ষ্য স্বর্গরাজ্যে পৌঁছানো। আদ� কি পৌঁছাত� পারব�? বইটা� শুরু একটু ধীরগতিতে, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে গল্প বিল্ডাপে� পর গত� বাড়�, রহস্য। ঘণীভূ� হয়। চলতে থাকে ট্রেনযাত্রা। অবশেষে শেষে গিয়� রহস্যে� উন্মোচ� ঘট� টুইস্টের মাধ্যমে। শেষে গিয়� খারা� লাগব� বইয়ের চরিত্রগুলো� জন্য� কয়ে� জায়গায় রিলে� করতে পারব� পাঠক দেশে� পরিস্থিতির সাথে� লেখকের জর্জ অরওয়ে� বা শহীদু� জহিরকে ট্রিবিউট দেয়ার ধরনট� ভালো লেগেছে�
বোঝাগেছে স্বর্গরাজ্� একটা বিশে� মোটি� থেকে লেখা� Snowpiercer ছব� থেকে হেভিলি ইন্সপায়ার্ড � বইতে একটা ট্রেনে পৃথিবী� শে� জীবি� কিছু মানু� যুগে� পর যু� ছুটে চল� এক ইউটোপিয়ান ভূমি� খোঁজে। সে� ট্রে� জার্নি, রাজনীতি, প্রমিসডল্যান্ড, বেহা� বিপ্লব, ভুলে যাওয়া ইতিহাস একটা গল্পকে যে� বারবার ইংগি� করে। কিন্তু মেটাফরিক্যাল, স্যাটায়ার, ডিস্টোপিয়ান নানা� কিছু� হবার পটেনশিয়াল ছি� যে গল্পটা, সেটা কিভাবে কিভাবে যে� একটা লব� ছাড়� পানস� ল্যাটক� খিচুড়ির মত লেগেছে� খু� প্রমিজিং স্টার্�, লেখক� আমার খু� পছন্দে�- জাহি� হোসেন। কিন্তু লেখা� ধর� খু� খটমট�, গোলমেল� লাগলো। মন� হচ্ছিল� অনুবাদ পড়ছ�, কোনো ডায়লগের বা বর্ণণা� মধ্যেই প্রা� নে�, যোগাযো� নেই। গল্পতে� রূপকের পরিমাণ আনফরচুনেটল� খু� সামান্যই ছিল। যেহেতু আম� লেখক জাহি� হোসেনে� রেগুলা� পাঠক, সেজন্য পড়ত� গিয়� আম� বলতে পারি এই বইটি প্রোপা� এটেনশন পায়নি লেখক থেকে� সবমিলে অনেক অনেকদি� পর একটা বই পড়া� পর হতাশ হওয়ায� একটু আপসে�!
তব� বইতে উল্লেখিত শহীদু� জহিরের একটা রেফারেন্� মাথায় গেঁথ� গেছে সারাজীবনের জন্য- "...কেবল বিলাইর� ইচ্ছ� কর� খেলা ছেড়� যেতে পারে, ইন্দুররা পারেনা; বিলা� খেলত� চাইল� ইন্দুরকে খেলত� হব�!"
বুকস্ট্রীটে� ১০ বই লটের ৪ট� মৌলিকে� ৪র্থ বইটা পড়লাম আজকে� জাহি� হোসে� এর ‘স্বর্গরাজ্য’।
বইয়ের প্রেক্ষাপট হিসেবে পোস্� অ্যাপোক্যালিপ্টি� সেটআ� জিনিসট� কম� হইলে� শুরু� দিকে গল্পটা খুবই প্রমিসিং এব� ইউনি� মন� হইছে আমার কাছে� গল্পটা এম� যে, এক মহামারীতে পৃথিবী ধ্বং� টং� হয়ে গেছে� যে সালে পৃথিবী ধ্বং� হয়ে গেছে সে সা� থেকে নতুন পৃথিবী শুরু হইছে আর মানু� মহামারী� সে� সা� থেকে নতুন কর� সা� গুনছে। এই সা� গণনাকে বল� হয� মড়কাব্দ� অর্থাৎ মড়কাব্দ ২০ মানে মহামারী শুরু হবার পরের ২০তম বছর। আম��দে� গল্পের সময়কা� মড়কাব্দ ৫৩�
যা� হো�, মহামারী� পর� অল্প কিছু মানু� যারা বেঁচ� আছ� যারা একটা ট্রেনে আশ্রয় নিয়েছে। ট্রেনে আশ্রয় নিয়েছ� কারণ বাইর� পরিস্থিত� শ্বাপদসংকু�, প্রত� পদ� পদ� ওত পেতে বস� আছ� মৃত্যু� � মহামারী� ভাইরাসের প্রভাব� জী� জানোয়ার সব হিংস্র হয়ে গেছে� ট্রে� ছাড়� নিরাপদ কোনো আশ্রয় নাই। এই ট্রেনে� খাওয়া দাওয়া, জন্ম-মৃত্যু সব� এখান� নির্বাচনের মাধ্যম� আস� সরকা� আছ�, নিরাপত্তাবাহিনী আছ�, ইমপোর্�-এক্সপোর্� আছ�; মোদ্দাকথ� ছোটোখাটো একটা দে� এই ট্রেন। এই ট্রে� ছুটে চলেছ� এক ইউটোপিয়ার দিকে যেটা� না� ‘স্বর্গরাজ্য�, যদিও এই ট্রে�, সরকা� বা জনগণ কে� জানে না সে� স্বর্গরাজ্� একচুয়াল� কোথায়� তব� আশ� নিয়� মানু� বেঁচ� আছ� যে একদি� সে� স্বর্গরাজ্যে পৌঁছুব� তারা� আশায� আশায� কেটে গেছে ৫৩টা বছ�, ট্রে� চলছে� এই ৫৩ বছ� ধর� তব� এখনো স্বর্গরাজ্যে� দেখা মেলেনি� স্বাভাবিকভাবেই মানুষে� প্রশ্ন জাগা� কথ�, আসলে� কী স্বর্গরাজ্� বল� কিছু আছ�? থাকল� এতদিনে� কে� পে� না? আর কোথায়� বা চলছে তারা? কিন্তু মজার ব্যাপা� হচ্ছ� এইসব প্রশ্ন মানুষে� মন� জাগে না কারণ ট্রেনে� মানুষজনে� স্মৃতিশক্ত� ভয়ানক দুর্বল� কয়ে� ঘন্ট� আগ� কী ঘটেছ� সেটা তারা ভুলে যায়� কিন্তু এর মাঝে� কিছু মানু� থাকে যারা একটু এক্সক্লুসি�, আমাদের গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র, কিশো� বয়সী তালা� তেমন� একজন� তা� কৌতূহলী মন জানত� চায় আসলে এখান� হচ্ছেট� কী? তারা কি কোনো গভী� ষড়যন্ত্রে� শিকা�? ইনফিনিটি সাইনটা� বা কী মিনি� বহ� করছে? এই দল� তালা� এক� নয়। তা� সাথে আছ� তা� বয়সী ট্রেনে� যাত্রী দেগাটি, আফসানে, বেহরামসহ আর� অনেক� � একজন শিক্ষক অ্যারন স্যার। তারা কি পারব� এস� রহস্যে� কূ� কিনারা করতে?
দারু� লাগছ� না গল্পের সারসংক্ষেপ জেনে? আমার তো এতটুকু পর্যন্� পড়ে সুপা� এক্সাইটে� লাগছিল� কিন্তু বই শে� করার পর সবটা জেনে মন ভরেনি। মন� হচ্ছ�, খাপছাড়া অনেকগুলো ব্যাপা� রয়ে গেছে� জাহি� হোসে� আমার খুবই পছন্দে� একজন লেখক� তা� বইয়ের এন্ডিং নিয়� অনেকের মধ্য� না-পাওয়া থাকলেও (আমার� আছ�) তা� বইয়ের জন্য আম� মুখিয়� থাকি� এর একটা বড� কারণ তা� ভয়ংকর সুন্দর লিখনসশৈলী� এই বইতে তা� সে সুন্দর লিখনশৈলী� একটা বৈশিষ্ট্� ছাড়� আর কিছু� পাইনি। লেখা খারা� বলছি না, তব� জাহি� হোসেনীয় ম্যাজিকট� নে� আর কি� আর সে� সাথে বইয়ের শেষে অসংখ্য প্রশ্ন জমেছে। যেমন : � ইনফিনিটি সাইনের ট্রেনে দেয়ার প্রয়োজনীয়তাটা কী? তালালক� নিয়� প্রশাস� আগেই কে� সিরিয়াস না হয়ে ক্যাওস সৃষ্টি করার সুযো� দিলো? পৃথিবী পোস্� অ্যাপোক্যালিপ্টি� হয়ে যাবা� পেছন� যে কারণটা দেখানো হইছে সেইট� খুবই খেলো মন� হইছে� এরকম আর� বহ� দুর্বল ব্যাপা� চোখে পড়ছে। কে� যে� মন� হইছে লেখক গল্পটা যেভাবে লিখত� চাইছেন সেইভাব� লিখত� পারে� নাই। যদিও বইতে প্রচুর রূপক ব্যাপা� আছ� বাংলাদেশ নিয়� যেইট� খুবই ইন্টারেস্টিং তব� শুরুটা যেইভাব� হইছিলো মাঝখানটা আর শেষট� সেইভাব� জমাইতে পারল� এই বইটা ‘ক্রীতদাসের হাসি� টাইপের একটা মাইলস্টো� হয়ে যাইত� বাংল� সাহিত্যে� মাত্� ১৫� পেজে শে� না কইরা যদ� এর দু�-তি� গু� বড� হইতো বইটা তব� হয়ত� আর� জমত। একটা সুপা� লেভেলে� পটেনশিয়াল গল্পের এইরক� দশ� দেইখ� আম� খানিকট� হতাশ� হইছি বল� যায়�
তব� আপনারা যারা পড়া� প্ল্যা� রাখছিলেন তারা পইড়� দেখেন। আম� খুবই হালক� টাইপের রিডা�, সারফেস লেভেলে� লেখা� স্রে� বুঝত� পারি� ডি� মিনি� থাকল� যে ধরতে পারি না তা না, তব� খুবই রেয়ার ক্ষেত্রে� বর� আপনে পড়ল� আপনা� সাথে আলোচনা কইরা আম� যদ� কিছু বুঝত� পারি, সেইট� হব� আমাররিয়েলগেইন�
"কেবল বিলাইর� ইচ্ছ� কর� খেলা ছেড়� যেতে পারে, ইন্দুররা পারেনা; বিলা� খেলত� চাইল� ইন্দুরকে খেলত� হব�!"
একটি ট্রে�, বি-১৯৭১, স্বর্গরাজ্যে� সন্ধান� ছুটে চলেছ� ৫৩ বছ� ধরে। ভীষন মড়ক� পৃথিবী মানুষে� অনুপযুক্� হয়ে গেছে, বেঁচ� থাকা অল্প মানু� শ্বাপদের হুমকির মুখে টিকে আছ� কোনোরকম। ট্রেনে উদ্দেশ্য স্বর্গরাজ্�, যেখানে থাকব� না মড়কের অথবা শ্বাপদের ভয়। কিন্তু ভুলোমন� যাত্রীরা মন� রাখত� পারে না তারা কতকা� ধর� কো� পথ� চলেছ�, কাদেরক� পথ� হারিয়েছে। সেসব মন� করিয়ে দেয় দেয়াল� টাঙানো নির্দেশাবলী, দেয়াল লিখন� তারা জানে, এই ট্রেনযাত্রার পত্ত� করেছিলেন যিনি, তিনি � তাঁর 'সাদা দল' প্রথ� সরকা� গঠ� কর� জনতাকে সংহত করেছিলেন� তাঁর রক্ষীবাহিনী মানুষক� নিরাপদ রাখত� বাইরের শ্বাপদের আক্রমণ থেকে� কিন্তু ক্ষমতায় অনিয়মের অভিযোগ� রক্ষিবাহিনী�-� প্রধান ক্ষমতা দখ� করেন সরকারক� হঠিয়ে, সরকারে থেকে� তৈরী করেন 'জলপা� দল'� তাঁর সরকারে� দেখা যেয় দুর্নীতি� জনতা� চাপে� মুখে তাদে� জায়গায় উঠ� আস� 'সাদা দলের' বিদ্রোহী সদস্যদের গড়ে তোলা 'কালো দল'� ক্ষমতায় পালাবদ� চল�, কখনো সাদা, কখনো কালো, মাঝে মাঝে জলপাই। কোনো সরকারপ্রধা� ভাবে� পশ্চিম� গেলে স্বর্গরাজ্� মিলব�, কে� ট্রেনক� চালি� করেন পূবে� বর্তমা� সরকারপ্রধা� খো� স্বর্গরাজ্� থেকে� এসেছেন যাত্রীদে� উদ্ধার করতে, তাঁর বিশ্বা�, দক্ষিণ� গেলে মিলব� কাঙ্ক্ষি� গন্তব্য। এখ� ট্রে� সেদিকে� চলেছে।
একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত পৃথিবী, অনন্তকাল চলতে থাকা এক ট্রে�, এব� ক্ষমতা� লড়াইয়ে� এক চিত্র—এ� তিনট� উপাদান মিলিয়� লেখক আমাদের উপহা� দিয়েছেন এক অসাধার� রচনা� বইটি শুধুমাত্� একটি কাহিনি নয�, এট� সমাজ, রাজনীতি এব� মানুষে� লড়াইয়ে� এক জ্বলন্� প্রতিচ্ছবি� গল্পের প্রেক্ষাপট বিশ্� ধ্বং� হয়ে গেছে� অল্প কিছু বেঁচ� যাওয়া মানু� একটি বিশা� ট্রেনে বসবা� কর�, যা কখনো� থামে না� ট্রেনে� বিভিন্� বগ� সমাজের বিভিন্� শ্রেণি প্রতিফলি� করে—সামনে� দিকে� বগিগুল� ক্ষমতাশীলদের জন্য, আর পেছনের বগিগুল� সাধারণ মানুষে�, যারা প্রতিদিন দম�-পীড়নে� শিকা� হয়। খাবা�, আশ্রয়, স্বাধীনতা—সবকিছুই শাসকশ্রেণি� নিয়ন্ত্রণে। রূপকের ব্যবহা� লেখক চমৎকারভাবে ট্রেনটিক� সমাজের প্রতী� হিসেবে ব্যবহা� করেছেন� এই ট্রে� যে� এক অদৃশ্য শৃঙ্খল� বাঁধ� মানবসভ্যতা� প্রতিচ্ছবি� সামনের বগির আরামের জীবন আর পেছনের বগির দুঃস� বাস্তবতা সমাজের শ্রেণিবিভাজনকে প্রকাশ করে। বইটি যত এগোয�, তত� বোঝা যায়, এট� কোনো সাধারণ কাহিনি নয�, বর� রাজনৈতিক শাসনের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিবাদ� বিপ্লব � ক্ষমতা� পরিবর্তন গল্পের মূ� চরিত্ররা পেছনের বগির সাধারণ মানু�, যারা বছরে� পর বছ� অত্যাচারের শিকার। অবশেষে, তারা বিদ্রোহে� পরিকল্পন� করে। বি��্লবে� আগুন জ্বল� ওঠ�, রক্ত ঝর�, কিন্তু শে� পর্যন্� কি সত্যিকারের পরিবর্তন আস�? না কি ক্ষমতা কেবল এক হা� থেকে আরেক হাতে চল� যায়? লেখক এই প্রশ্নের মধ্য দিয়� আমাদের বাস্তব দুনিয়ার রাজনীতি � বিপ্লবের ব্যর্থতাকে তুলে ধরেন� শে� কথ� বইটি কেবলমাত্� একটি থ্রিলা� বা সায়েন্স ফিকশ� নয�, বর� এট� সমাজ � রাজনীতি� উপ� এক গভী� দার্শনিক বিশ্লেষণ� প্রতিট� অধ্যায়ে রূপকের ছোঁয়া, তীব্� রাজনৈতি��� বার্তা, এব� ক্ষমতা� চক্রের নিষ্ঠু� বাস্তবতা পাঠককে নতুনভাবে ভাবত� বাধ্� করে। যারা গভী� ভাবনাচিন্তার মাধ্যম� বই উপভো� করতে ভালোবাসে�, তাদে� জন্য এট� এক অনন্� অভিজ্ঞতা� বইটি থেকে কিছু উক্ত� উল্লেখ না করলে� নয�: "ইতিহাসের সবচেয়� বড� শিক্ষা হল� যে কে� ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয় না�" "বিলা� খেলত� চাইল� ইন্দুরদে� খেলত� হবেই� � ছাড়� ইন্দুরদে� নিস্তা� নেই। ইন্দুররা স্বভাবগতভাবে বোকাচন্দ� গোছের। তাদে� বোকাচন্দরগিরির কো� সীমা-পরিসীমা নেই। এট� অনন্ত। অসীম।"
বইটা পড়া শে� হলো। বইয়ের প্লট টা যেভাবে সাজানো হয়েছে এটাক� সম্ভবত রূপকধর্মী জনরা তে ধর� হয়। আবার ডিস্টোপিয়ান ফ্যান্টাসি � বল� যায়� প্রথমদিক� যদিও স্লো মন� হচ্ছিল�, তব� ৪৫ পৃষ্ঠা� পর থেকে কাহিনী বে� দ্রু� এগিয়ে গেছে�
কাহিনী সংক্ষেপঃ মড়ক নামক এক ভাইরাসের আক্রমণের ফল� বাইরের পৃথিবী� থেকে বিচ্ছিন্� হয়ে মানুষেরা একটা ট্রেনে� ভেতর� বসবা� করে। ট্রেনে থাকা প্রত্যেকটা মানু� গোল্ডফিশ মেমোরি তে আক্রান্ত� তারা কোনো স্মৃতি বেশিদি� মন� রাখত� পারেনা� ট্রেনে� গন্তব্� 'স্বর্গরাজ্�' নামক একটা যায়গা� ভিন্� ভিন্� সময়� আস� প্রশাসকেরা জানায় যে তারা স্বর্গরাজ্যে� খু� কাছাকাছি আছ�, খু� তাড়াতাড়ি সেখানে পৌঁছ� যাবে� কিন্তু তাদে� কথামতো নির্দিষ্� সময়� আর সেখানে পৌঁছান� হয়ে উঠেনা। এভাব� অর্ধ শতকেরও বেশি সময় ধর� ট্রেনট� চলছে� শে� পর্যন্� গিয়� কি হয�, সেটা জানত� পুরো বইটা পড়ত� হবে। বইটা পড়া শেষে আমার যেটা মন� হয়েছে, অদ্ভুত সে� ট্রেনট� হল� আমাদের বাংলাদেশ� গোল্ডফিশ মেমোরি তে আক্রান্ত ট্রেনে� যাত্রীরা হচ্ছ� দেশে� সাধারণ জনগণ� রক্ষীদলের সদস্যর� হচ্ছ� আইনে� সাথে সংশ্লিষ্� ব্যক্তিবর্গ। আর প্রধান প্রশাস�, প্রধান চিন্তক, বিরোধীদলীয় প্রধান - তারা হচ্ছ� বিভিন্� সময়� ক্ষমতায় আস�..... থা�, এট� না বলি। পড়া শেষে নিজেরা� বুঝত� পারবেন�
বই� স্বর্গরাজ্� লেখক� জাহি� হোসে� ধরণঃ রূপকধর্মী উপন্যা� পৃষ্ঠা সংখ্যা� ১৫� প্রচ্ছদঃ মাহাতা� রশী�, আরহা� হাবী� প্রকাশনী� Book Street
যে মেসে� টা পৌছাতে চেয়েছেন সেটা� জন্য দু� দেওয়া� অন্যথায় বল� বাহুল্� যে এই বই জাহি� ভা� এর সবচেয়� বাজে বই� কে� কিভাবে কি লিখলেন জানা নাই। বোধয� অভ্যুত্থান পরবর্তী কিছু একটা জো� কর� লিখিয়� নিয়েছ� কে�