বিশা� বড়ো মাছে� পিঠে গড়ে ওঠ� অদ্ভুত এক নগরী, যে� জীবন্ত দুঃস্বপ্ন। কে� জানে না কোথা থেকে এল�, কেনই-বা রয়ে গেছে? রা� গভী� হল� এখান� হঠাৎ কে� হারিয়� যায়, বাতাসে মিশে যায় তা� অস্তিত্ব� কারো চোখে ভেসে ওঠ� মৃত্যুদূতে� ছায়া। কে� পালায় বাড়� ছেড়�, আবার কে� ফিরে আস� পুরানো তাড়নায়, যে� কিছু একটা তাকে বেঁধ� রেখেছে� এর� মাঝে আত্মঘাতী হয়ে ওঠ� এক চরিত্র ছড়িয়� দেয় সন্দেহের জাল। প্রতিট� অলিগলি, প্রতিট� ছায়ার তল� লুকিয়� থাকে রহস্� আর ছলনা� দ্যোতনা।
এই জনপদ কি তব� অতিপ্রাকৃতের ফাঁদ? নাকি নিছক মি�, যা যু� যু� ধর� বেঁচ� আছ� মানুষে� কল্পনায়?
জল� লকার এম� এক উপন্যা�, যেখানে প্রতিট� মুখোশে� আড়ালে লুকিয়� আছ� গভী� রহস্য। মি�, ম্যাজি� রিয়েলিজ�, নাকি নিছক� এক বিভ্রম এই উপন্যাসে সে� গন্তব্যে� খোঁজ� আপনাকে পা রাখত� হব� এম� এক জগতে, যেখানে সময় চেনা, তবুও অচেনা। আপনাকে হাঁটতে হব� সে� সময়ের পথ� অজান� রহস্যে� গন্তব্� খুঁজ� নিতে�
Mahrin Ferdous is a novelist, short story writer, feature writer, and translator who writes for adults and children. Her works have drawn heavily on surrealism and magic realism and deal with contemporary social crises. She weaves her stories in vivid language with literary flair. Since 2010, she has authored eleven books.
In 2019, Banglalink Telecom honored her as one of Bangladesh's five most promising young writers. In 2022, she received the esteemed BRAC Bank-Samakal Literary Award for her contributions to Bangla literature. Mahrin is Vice-President of the Pencil Foundation, a non-profit organization. She lives and works in New York.
শীতকাল আমার পছন্� না, শী� পছন্� না� কিন্তু কুয়াশ� আমার ভীষণ পছন্দ। দূ� থেকে ঘন জমাট বাঁধ� কুয়াশ� দেখল� মন� হয� ওর মধ্য� গেলে একেবার� ডুবে যা�, তলিয়ে যা�, বে� হওয়ার উপায� থাকব� না� বাস্তব� সেটা আর হয� না� কুয়াশার যত কাছে যাওয়া হয� তা� ঘনত্� তত কমতে থাকে, গুড়� গুড়� হাওয়া� মত� চারপাশ� ভাসত� থাকে অনেকটা অদৃশ্য হয়েই। দূ� থেকে কুয়াশাক� ডুবে যাওয়া� সম্ভাবনাময� খা� মন� হলেও বড়জোর হা�-পা হালক� ভিজিয়� দেওয়া ছাড়� কুয়াশার আর কিছু করার ক্ষমতা নেই।
জীবনের বিষন্নতা, একাকীত্বও অনেকটা কুয়াশার মত� মন� হয� আমার কাছে� দূ� থেকে যাকে জমাটবদ্ধ মরণফাঁ� মন� হয�, যেখানে একবা� গিয়� পড়ল� আর রক্ষ� নে�, কাছে গেলে দেখা যাবে সে খুবই নিরী� কিসিমে� জিনিস। বিষন্নতা, বিচ্ছিন্নত�, নিঃসঙ্গতাক� ভয� না পেয়� যদ� আস্ত�-ধীরে তাদে� দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়, তাদে� আপ� কর� নেওয়া যায় তাহল� তারা� দিতে পারে শীতে� সকালের মত� স্নিগ্� স্পর্শ�
কিছু কিছু লেখা পড়ল� আমার এম� মন� হয়। মন� হয� আপাতদৃষ্টিতে ভীতিকর নিঃসঙ্গতাক� খু� যত্ন� আমাদের চারপাশ� পাতল� একটা আবরণের মত� জড়িয়� দিয়েছেন লেখক/লেখিকা� মাহরী� ফেরদৌসের "অরিগামির গোলকধাঁধায�" পড়া হল� কিছুদি� আগ�, লেখিকা� লেখা সম্পর্কে ধারণ� নেওয়া� জন্য� তা� লেখা আকর্ষণীয়, মানে যেমন ধরনে� লেখা আমার ভালো লাগে আর কী!
"জল� লকার" সহজে� মধ্য� জটিল সব সমীকরণে� গল্প� সাদা চোখে মন� হয� কী হচ্ছ�, কে� হচ্ছ�, কীভাবে হচ্ছ�? অনেকগুলো এলোমেল� সুতো, তবুও সুন্দরভাবে সাজানো-গোছানো� বাল্যকালের অনাকাঙ্ক্ষিত ট্রম� মানু� কীভাবে আজীবন কীভাবে বয়ে বেড়ায�, নি� পরিবারের সাথে বিচ্ছে�, একাকীত্বে� সাথে হা� ধর� পথ চল�, মাঝেমধ্য� তালিসমানের উঁকি দেওয়া; এসবে� মিশ্রণ সাবলীলভাব� ফুটিয়� তুলেছে� লেখিকা� গল্পটা আমাদের, গল্পের চরিত্ররা� আমাদের চারপাশের মানু�, তা� কে� যে� মন� হয� এর� ঠি� আমাদের মত� না, অনেক দূরের। বাস্তব জগতে� মাটিতে পা দিয়� অবাস্ত� জগতে� দিকে হা� বাড়ানোর মতো।
তীব্� কোনো বিষা�, আবেগ, ভালোবাসা� গল্প বল� হয়ন� কাহিনিতে� জো� কর� কারো মু� দিয়� আবেগী বুলি� ঘনঘটাও আসেনি। কারো বিষাদে� তীব্� দীর্ঘশ্বাস� নে� বইয়ের পাতায়� যা আছ� তা খু� সাধারণ, চো� ফেটে পানি আস� না কিন্তু মনকে আর্দ্র কর� দেয়�
মাকড়সার জালে ভোরে� শিশি� পড়ল� যেমন চকচক কর�, আর সে� মুক্তা� মত� চমকাতে থাকা জালে� মা� দিয়� রক্তমাখা সূর্যক� দেখত� যেমন লাগে, 'অরিগামির গোলকধাঁধ�' থেকে বে� হয়ে 'জল� লকার' হাতড়ে একমুঠো শীতলতা তালুবন্দ� করার অনুভূত� এক� রক� ছিল।�
জল� লকার পড়ত� পড়ত� মাথায় আসবে, গল্পটা কি তারা�? মন� হব�, হ্যা� তারারই� তারপ� আবার মন� হব� গল্পটা তারা� মায়ের� কিন্তু আরেকটু তলিয়ে ভাবল� মন� হব� খু� চেনা প্রতিবেশের গল্প, যাকে আমরা কখনো মাহরী� ফেরদৌসের মত� কর� দেখিনি� হত� পারে গল্পটা আমাদেরই। কিংব� আমাদের গল্পটা কোনোদি� � রক� হওয়� অসম্ভব না�
জনপ্রিয় ঘরানায� বাংলাদেশের লেখকরা যে ধারা� উপন্যা� লিখে থাকে�, জল� লকার সে ধারা� না� ইউরোপিয় বা আমেরিকান, কখনো লাতি� আমেরিকান ছাঁচটা স্পষ্ট ধরতে পারা যায়� তব� মাহরী� যেভাবে বলেছেন (ন্যারে� কর�) সেটা মিশে গেছে এই গল্পের সঙ্গে। তা� খচখচ কর� না� তব� যখ� তিনি ছাত্� আন্দোল�, রেস্টুরেন্�-গার্মেন্টস� আগুন, ভাঙা দালানে� নি� থেকে চাপা পড়া মানু� উদ্ধারের কথ� লিখছেন তখ� মন� হয�, আমার শহরে� নামট� থাকল� হয়ত আর� ভালো লাগল�
এই সময়� যারা লিখছেন, তাদে� মধ্য� মাহরী� ফেরদৌসের লেখা মনোযোগের দাবী রাখে� জল� লকার সেখানে আরেকটা ধাপ। উপন্যাসট� হয়ত সবার ভালো লাগব� না, তব� যারা নতুন ধারা� কিছু পড়ত� চা� (দেশীয় লেখকদে� থেকে) তাদে� � বইটা ভালো লাগাবে বলেই মন� হয়। এমনক� যারা নতুন লিখছেন, তারা� জল� লকার থেকে কিছু নিতে পারবেন�
উপন্যাসট� শুরু করেছিলাম বহুদিন আগ�, সঙ্গ� কারণেই মাঝে এসেছ� লম্ব� বিরতি। ফল�, খে� হারিয়� ফেলা যানে দ্বিতীয়বা� উঠতে কিছুটা বে� পোহানো হয়ত� অনুমিত ছি�, কিন্তু, আশ্বর্যজনকভাবে সহজে� গল্প� ঢুকে যেতে পারলাম কো� জবরদস্তি ছাড়াই� উপন্যাসে� শেষে এস� এই পুরো বিষয়টাক� নিয়� চিন্তা কর� মোটামুটি একটা সিদ্ধান্তে উপনী� হলাম, ভাষা� মূলত এই উপন্যাসে� সবচেয়� বড� শক্তি।
না ঠি� পোয়েটিক কিংব� মার্কে� ঘরানার দীর্� বাক্যে� দিকে ঝোঁকেননি মাহরী� বর� তিনি হেঁটেছেন মুরাকামি� পথে। ছো� বাক্� কিন্তু, বিঁধ� তীক্ষ্� ফলার মতো। পাঠক হিসেবে মনোলগধর্মী গদ্যে� প্রত� আমার বিশে� স্বজনপ্রীতি আছে। মাহরী� এই উপন্যাসে করেছেন দীর্� মনোলগে� চমৎকার ব্যবহার।
চরিত্র থেকে চরিত্রের যে ভ্রম� সেখানে ভ্রান্তি কিছুটা আছে। শিমন চাচা� চরিত্র� স্থি� হত� না হতেই তা� আমাক� নজ� দিতে হয়েছে তালিসমানের দিকে� রহস্� ঘণীভূ� হত� হতেই দৃশ্যে হাজি� হয়েছে প্রোটাগনিস্টেস বোনে� সাথে তৈরি হওয়� দ্বন্দ্ব� নভ� আরেকটু নভোচারী� মত� বিস্তৃতি নিয়� এল� জমতো বে�! তব�, মাহরীনে� ন্যারেটি� যেহেতু প্রথাগ� ন্যারেটি� কিংব� কন্টিনিউটিকে উপেক্ষ� কর� এগিয়েছে স্ন্যাপশ� নিতে নিতে সেহেতু চরিত্র নিয়� আলাদ� কর� প্রশ্ন তোলা হয়ত� সমীচী� নয়।
গল্পের দিকে গেলে, ফিরে আস� শৈশবের ট্রম�, ব্যর্থ প্রে�, চিরচেন� বিষা� কিন্তু এস� পরিচিত প্রেক্ষাপট নয�, ‘জলজ লকার� উপন্যা� আমাক� চমকে দিয়েছ� মিথে� পরিপূর্ণ রূ� দেখিয়ে। এই মি� আমাদের পরিচিত সে’ই প্রাচী� মি� নয�, এখান� বর� আছ� ফ্যান্টাসি� ছোঁয়া� ফল�, গল্পটা পড়ত� পড়ত� তৈরি হয� আলাদ� মহ�, দৃশ্� থেকে দৃশ্� বদলায় এক লহমায়�
তব�, কিছু কথ� থাকে� কখনও কখনও মেলোড্রামাটি� ডায়লো�, তো কখনও অত� বর্ণনা কিছুটা ক্লান্তি এনেছ� পাঠে� মনের অজান্তেই মন� হয়েছে গল্পের প্লট হয়ত� আর� বহুমাত্রিক হত� পারতো। এম� তো কত� অনভূতি থাকে�!
দ্বৈ� সত্তার আলাপনে যখ� লেখক আশ্রয় নিয়েছেন দর্শনে�, এসেছ� অনেক জানা অজান� রেফারেন্�, যখ� মন� হয়েছে লেখক জাদুকাঠি দিয়� মেলানকোল� থেকে আলাদ� করতে চাইছেন হলোনেস, যখ� গল্পের চেয়েও বড� হয়ে উঠছে রহস্�, তখ� এই উপন্যা� পাঠে� আনন্দটুকুই জিতে যায় হয়তো। তব�, সবমিলিয়� ‘জলজ লকার� আমার মন� থাকব�, এই উপন্যাসে� চমৎকার ক্রাফটিংয়ের জন্য�
"জল� লকার"—শব্দদুটির অক্ষরগুল� যে� জলের তরঙ্গে ভাসমান এক প্রত্নবস্ত�, যা হা� বাড়ালেই হারিয়� যায় ধোঁয়াশা� স্তরে। বইয়ের মলাট� লেগে থাকা এই নামটির দিকে তাকিয়� থাকতেই মন� হচ্ছিল, � যে� কোনো জলদস্যুর ডায়ের� থেকে ছিটক� পড়া এক গুপ্� সংকেত। মাহরী� ফেরদৌসের কলমে� শব্দচয়ন� প্রতিট� বর্ণ হয়ে ওঠ� একেকটি জলজীবী প্রাণী, যারা শব্দের স্রোতে ভেসে বেড়ায� অথ� সমুদ্রের মত� গভী� কোনো অর্থ খুঁজে।
২০১১ সালে "একুয়া রেজিয়�" নামে যে লেখিকাকে চিনেছিলা�, তা� কলমে তখনও ছি� নদীজলসিক্� কিশোরী মনের টান। কিন্তু "জল� লকার"-এর শিরোনা� দেখে� বুঝত� পারলাম—এ সে� লেখিকা নয়। � যে� পরিণ� বয়সের নদী, যা কিনা সমুদ্রের গভীরতাক� জড়িয়� ধর� নিজে� স্রোতধারায়। শব্দদুটি� মাঝে লুকিয়� আছ� এক চিরাচরিত দ্বন্দ্ব: "জল�" শব্দটি যেখানে প্রবাহিত হয� বাঙালি� রক্ত� মিশে থাকা নদীমাতৃ� সত্ত�, "লকার" শব্দটি টেনে আন� আধুনিক নগরসভ্যতার কংক্রি�-লোহা� গন্ধ� এই নামকরণেই যে� লেখিকা বলতে চেয়েছেন—আমাদে� অস্তিত্ব তো ঠি� এমনই, প্রাচী� � আধুনিকের সংঘাতে জেগে ওঠ� এক জল� অস্তিত্বের লকার!
বেটা রিডা� হিসেবে বইটি পড়া� সময় বইয়ের প্রথ� পাতায় ঢোকা� আগেই মন� হচ্ছিল, এই শিরোনা� নিজে� একটি উপন্যাস। বিশা� মাছে� পিঠে ভাসমান নগরী� রূপক যে� ফুটে উঠেছ� শব্দের বিন্যাসে�"জল�" শব্দের জল� ভেজা ব্যঞ্জনা আর "লকার"-এর ধাতব শীতলতা মিলে তৈরি হয়েছে এক অদ্ভুত সিম্ফনি। মাহরী� এখান� শব্দকে যন্ত্রের মত� বাজিয়েছেন, যেখানে প্রতিট� সু� পাঠককে টেনে নিয়� যায় অদেখ� কোনো দ্বীপে� দিকে� শিরোনামে� মধ্যেই লুকিয়� আছ� গল্পের হৃদয়—যেখান� "লকার" শব্দটি শুধু ইংরেজি শব্দের প্রতিস� নয�, বর� মানবমনের সে� গুহা যেখানে আমরা আটকে রেখেছি মুখোশাবৃ� স্বপ্নগুলোকে� মাহরী� তাঁর পূর্ববর্তী রচনা "অরিগামির গোলকধাঁধায�"-এর মতোই এখান� শিরোনামক� কর� তুলেছে� গল্পের প্রথ� কবিত�, যা� পদ্য� পদ্য� জড়িয়� আছ� সমগ্� কাহিনী� বীজমন্ত্�, যা পাঠককে বল� দেয়: "তুমি প্রবেশ করতে চলেছ এম� এক জগতে, যেখানে প্রতিট� শব্দের অর্থ পাল্টে যাবে জলের স্রোতে� মতো।"
শিরোনামট� পাঠকের মন� জাগায় এক গূঢ় ধাঁধার ছায়� � জল� লকার কি প্রকৃতির কোলে লুকানো কোনো রহস্যভাণ্ডার, নাকি মানবসভ্যতা� আয়নায� দেখা নিজেদেরই বিকৃ� প্রতিবিম্ব? এই প্রশ্নের উত্ত� খুঁজতে গিয়েই পাঠক ডুবে যায় গল্পের অতলে, যেখানে প্রতিট� পাতা থেকে ঝর� পড়ে সমুদ্রের নোনাজল� শব্দের এই যাদুকরী বুনন� প্রমাণ কর�,"এখান� জল শুধু জল নয�, � তো মানবহৃদয়ে� অশ্রুসমুদ্র। লকার শুধু লকার নয�, � তো সময়ের গর্ভ� লুকন� সভ্যতা� কঙ্কাল!"
ভাসমান নগরী� রূপকথা শুরু হয� এক অতিকায� মাছে� পিঠে চড়ে, যা� আঁশে আঁশে জম� আছ� শতাব্দী� ধুলো� এই শহ� নিজে� এক জীবন্ত অক্সিমোরন—পথচেন� গলিগুলোর অচেন� বাসিন্দারা সময়ের খাঁজ� লুকিয়� রেখেছে অদৃশ্য হওয়ার মন্ত্র� রা� নামতেই যে� বাতাসে মিশে যায় মানুষে� শ্বা�-প্রশ্বাস, আর অন্ধকারে মৃত্যুদূতে� ছায়� নেচে ওঠ� আত্মঘাতী চরিত্রগুলো� মনস্তত্ত্বের সাথে� গল্পের পথ পরিক্রমায় প্রতিট� মোড়� যে� ভেঙে দেয় পাঠকের প্রত্যাশার বাঁধ, টেনে নিয়� যায় অজান� গহ্বরে, যেখানে সম্পর্কে� জটিলতা পেঁচিয়ে থাকে রহস্যে� অদৃশ্য সুতোয়�
মাহরী� ফেরদৌসের কলমে ম্যাজি� রিয়েলিজ� রূ� নেয় এক স্বপ্নলোকের—যেখান� বাতাসে মিশে যাওয়া মানুষেরা শে� মুহূর্তে ফেলে যায় শুধু গলার স্বর, আর বিশা� মাছে� পিঠে শহরে� নড়াচড়া শোনা যায় হৃদস্পন্দনের মতো। ছায়ার আড়ালে লুকিয়� থাকা ছলনা� গন্ধ মাখানো থাকে বাতাসে, যে� প্রতিট� ফিসফিসান� পাঠককে ঠেলে দেয় এক চোরাবালিময� প্রশ্নের দিকে: � সব� কি প্রকৃতির খেলা, নাকি মানবমনের বিভ্রম� খচিত এক মহাযজ্�?
উপন্যাসে� প্রাণস্পন্দন এটির বহুমুখী চরিত্রদে� হাতেই—যেখান� আত্মঘাতী প্রবণতার চরিত্রটি হয়ে ওঠ� সমাজের ভাঙন আর মানসিক অস্থিরতা� আয়না। পলায়নপর এক ব্যক্তিত্ব বারবার ফিরে আস� অতীতে� ভূতে� সাথে লড়া� করতে, তা� পদচিহ্নে জম� থাকে সময়ের কর্দমাক্� স্মৃতি� আর সন্দেহের জা� বিস্তারকারী এক মুখ্� চরিত্রের প্রতিট� পদক্ষেপে গল্প� যো� হয� রহস্যে� নতুন স্তর—যেন অ্যাকশ� আর সাসপেন্সের মিশেলে তৈরি এক বিষাদময় সিম্ফনি।
আম� যখ� "জল� লকার" পড়া শুরু করেছিলাম, তখ� হাতে সময় নিয়� বসেছিলাম� কারণ, আম� দেখত� চেয়েছিলাম, এই বইটি একটানা পড়া সম্ভ� কি না� পাঁচ ঘণ্টার দীর্� এক বসায� পুরো উপন্যাসট� শে� করার পর মন� হল�, আম� যে� কোনো গভী� সমুদ্রের তলদে� থেকে উঠ� এলাম� প্রতিট� পৃষ্ঠা আমাক� টেনে নিয়� গেছে এম� এক জগতে, যেখানে বাস্তবতা আর কল্পনা� সীমানা মিশে গেছে� আর তখনই বুঝত� পারলাম, এই বইটি মাহরী� ফেরদৌসের আগের কাজগুল� থেকে কতটা ভিন্ন।
লেখিকা� পূর্ববর্তী গল্পগ্রন্থ "হয়ত� বল� কিছু আছ�"-এর কথ� মন� পড়ে� সে� বইয়ের প্রতিট� গল্প মনস্তাত্ত্বি� বিশ্লেষণ� ভর� ছিল। মানুষে� মনের গভীরে লুকিয়� থাকা আবেগ আর দ্বন্দ্ব সেখানে এতটা� স্পষ্ট ছি� যে, পাঠক হিসেবে আম� নিজে� ভেতরের অন্ধকারকেও চিনত� পেরেছিলাম। কিন্তু "জল� লকার"-� মাহরী� শুধু মনের গভীরে প্রবেশ করেননি; তিনি এখান� দার্শনিক হয়ে উঠেছেন� অস্তিত্ববা�, আত্মার শূন্যত� এব� জীবনের অর্থ নিয়� তাঁর চিন্তা-চেতন� এতটা� স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছ� যে মন� হয�, এই বইয়ের প্রতিট� শব্দ� যে� একেকটি দর্শনে� বীজ।
তুলন� করতে গেলে মাহরীনে� আরেকটি কা�, "অরিগামির গোলকধাঁধায�"-এর কথাও আসে। সে� গল্পগ্রন্থ� ছি� রূপকথা� আমেজ, যেখানে গল্পগুলো সরলভাব� এগিয়ে যেত। কিন্তু "জল� লকার"-� তিনি সর� পথ ছেড়� জটিল প্রতীকীবাদে� দিকে পা বাড়িয়েছেন। এখান� গল্প শুধু গল্প নয�; এট� এক গভী� ভাবনার ভ্রমণ। বিষয়বস্তু� ক্ষেত্রে� লক্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে—পূর্ব� যেখানে ব্যক্তিগ� সম্পর্কে� জটিলতা ছি� মূ� কেন্দ্রবিন্দ�, এখান� তা স্থা� কর� নিয়েছ� সামাজি� � অস্তিত্ববাদী দ্বন্দ্বে।
উপন্যাসটির মূ� চরিত্রগুলো আমাক� মন্ত্রমুগ্� কর� রেখেছে� তাদে� চরিত্রচিত্রণ এতটা� স্বচ্ছ যে মন� হয়েছে, আম� যে� তাদে� পানি� মত� বুঝত� পারি� এঞ্জেল এম-এর আত্মদ্বন্দ্ব কিংব� রিফা� জীবনের শূন্যত� আমাক� ভাবিয়েছ� বারবার� তারা কেবল কাগজের চরিত্র নয�; তারা যে� আমাদের আশেপাশের পৃথিবীরই প্রতিচ্ছবি� আম� এখান� এঞ্জেল এম চরিত্রটা নিয়� আর� কিছু বলতে চা�, কারণ "জল� লকার" উপন্যাসে� চরিত্রগুলো� মধ্য� আমার কাছে সবচেয়� আকর্ষণীয় লেগেছ�� এই চরিত্রটি, যদিও এট� মূ� চরিত্র নয� (কিংব� কে জানে!)� এই চরিত্রটি আমাক� গভীরভাব� নাড়� দিয়েছ� এব� তা� জটিলতা � বহুমাত্রিকতা আমাক� মুগ্� করেছে।
এঞ্জেল এম একটি দ্বন্দ্বময� চরিত্র� সে যে� নিজে� অস্তিত্বের সাথে লড়া� করছে প্রতিনিয়ত� তা� ভেতর� লুকিয়� থাকা আত্মঘাতী প্রবণত� তাকে এক অদ্ভুত দ্বৈ� সত্তায� পরিণ� করেছ� - একদিকে সে জীবনকে আঁকড়ে ধরতে চায়, অন্যদিকে মৃত্যু� টানে ছুটে চলে। এই দ্বন্দ্ব তাকে করেছ� অসাধার� মানবিক � বাস্তব� এঞ্জেল এম-এর চরিত্র� আম� দেখেছি আধুনিক মানুষে� প্রতিচ্ছবি� সে যে� আমাদের সমাজের সে� অংশে� প্রত��নিধি, যারা নিজেদে� অস্তিত্বের অর্থ খুঁজ� পায় না, যারা জীবনের শূন্যতায� হাবুডুবু খায়� তা� মধ্য� লুকিয়� থাকা আত্মধ্বংসী প্রবণত� আসলে সমাজের একটা বড� অংশে� মানসিক সংকটকে� তুলে ধরে।
এঞ্জেল এম-এর সবচেয়� আকর্ষণীয় দি� হল� তা� পরিবর্তনশীলতা। সে স্থি� নয�, প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে, নিজে� সাথে লড়া� করছে, পড়ছ� উঠছে� এই গতিশীলত� তাকে করেছ� জীবন্ত � বাস্তব� তা� প্রতিট� সিদ্ধান্�, প্রতিট� কা� পাঠককে ভাবিয়� তোলে - সে কে� এম� কর�? এর পর� কী হব�? উপরন্ত�, এঞ্জেল এম-এর মাধ্যম� লেখিকা তুলে ধরেছেন জীবন-মৃত্যু, অস্তিত্ব-শূন্যতার মত� গভী� দার্শনিক প্রশ্ন� এই চরিত্রটি শুধু একটি কাহিনী� অং� নয�, সে যে� একটি দর্শনে� বাহক� তা� মাধ্যম� আমরা নিজেদে� জীবনের অর্থ খুঁজতে শিখি, নিজেদে� অস্তিত্বের গভীরে তাকাতে শিখি� সর্বোপরি, এঞ্জেল এম-এর চরিত্রটি আমাক� স্পর্শ করেছ� তা� মানবিকতা� জন্য� তা� দুর্বলতা, তা� সংগ্রা�, তা� পত� � উত্থান - সবকিছু মিলিয়� সে হয়ে উঠেছ� একজন পূর্ণাঙ্� মানু�, যা� সাথে পাঠক নিজেকে সহজে� একাত্ম করতে পারে�
এই বইয়ের সবচেয়� শক্তিশালী দি� হল� এর গভীরতা। মাহরী� এখান� কেবল গল্প বলেননি; তিনি আমাদের সামন� তুলে ধরেছেন এক দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি। জীবনের অর্থ খুঁজতে গিয়� আমরা কতটা পথ হারা�, আবার কতবা� নিজেদে� খুঁজ� পাই—এ� প্রশ্নগুলো বারবার উঠ� এসেছ� উপন্যাসে� প্রতিট� স্তরে।
পাঁচ ঘণ্টার সে� পাঠযাত্র� শেষে আম� বুঝত� পেরেছি, "জল� লকার" কেবল একটি উপন্যা� নয�; এট� একটি অভিজ্ঞতা� এট� এম� একটি আয়ন�, যেখানে আমরা নিজেদে� মুখোমুখি হই—আমাদে� শূন্যত�, আমাদের অস্তিত্ব এব� আমাদের জীবনের অর্থ খোঁজার চেষ্টাকে নতুনভাবে দেখি� মাহরী� ফেরদৌস এখান� শুধু একজন লেখক নন; তিনি একজন দার্শনিক, যিনি আমাদের হৃদয� � মনকে একইসঙ্গে নাড়� দিতে সক্ষ� হয়েছেন।
মাহরী� ফেরদৌসের কলমে শব্দের যে নান্দনিক জা� বিস্তৃ� হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে কবিতার স্পর্শ� ভরা। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই কাব্যিকত� যে� নদী� স্রোতক� বাধাগ্রস্ত করে—বর্ণনার ফুলঝুর� গল্পের গতিক� কখনো কখনো মন্থ� কর� দেয়� বিশেষত উপন্যাসে� মধ্যাংশে, যখ� বিশা� মাছে� পিঠে ভাসমান শহরটির প্রতিট� রেখা এঁকেছে� লেখিকা, তখ� দীর্� শব্দযাত্রা পাঠককে একটু হাঁপিয়ে তোলে� মন� হয�, জলের নিচে ডুবে থাকা কোনো মুক্তো খুঁজতে গিয়� হঠাৎ� পা আটকে গেছে শেওলাজালে।
চরিত্রগুলি যে� একেকটি জীবন্ত প্রতিম�, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে তাদে� পূর্ণাঙ্� রূ� ফুটে ওঠেনি। শিমন চাচা� চরিত্রটি যে� অর্ধেক আঁকা জলরঙের ছবি—অস্তিত্� আছ�, কিন্তু প্রা� নেই। এই চরিত্রটি� মাধ্যম� গ্রামী� জীবনের বার্তা আসার কথ� ছি� হয়ত�, কিন্তু তা রয়ে গেছে ধোঁয়াশায়� তালিসমানের মত� গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের উপস্থিতি কম হওয়ায� মন� হয়েছে, গল্পের জমিত� এক ধরনে� শূন্যত� ঝুলে আছে। আর রিফা� স্বামী� চরিত্র� যুক্তিসঙ্গতত� থাকলেও তা� আবেগ-অনুভূত� যে� পানিতে লেখা অক্ষরে� মত� মুছে গেছে—পাঠকে� হৃদয়ে দা� কাটত� পারেনি�
উপন্যাসটির রহস্যময়তা নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়, কিন্তু কোনো কোনো অংশে অতিপ্রাকৃত উপাদানের আধিক্য পাঠককে ঠেলে দেয় দ্বিধা� অন্ধকারে� যেমন—রাতের অন্ধকারে মানুষে� অদৃশ্য হয়ে যাওয়া� দৃশ্যগুল� প্রথমে মোহনীয় মন� হলেও, বারবার আবর্তি� হওয়ায� এর জাদুকরী আবেদ� কিছুটা ম্লা� হয়।
মাহরীনে� চিন্তা� গভীরত� প্রশংসনীয়, কিন্তু জীবনের অর্থ বা অস্তিত্ববাদে� মত� বিষয়গুল� কখনো কখনো এতটা� বিমূর্� হয়ে উঠেছ� যে, সাধারণ পাঠকের পক্ষ� তা ধরতে কষ্ট হয়। যেমন—এঞ্জে� এম-এর আত্মঘাতী প্রবণত� নিয়� দার্শনিক আলোচনা যেখানে শে� হয�, সেখানে� শুরু হয� পাঠকের বিভ্রান্তি� মন� হয়েছে, লেখিকা কখনো কখনো ভুলে গেছে� যে, সাহিত্� শুধু দর্শনে� বাহন নয়—এটি জীবনের শ্বা�-প্রশ্বাস� বটে।
তবুও...
এই সমস্� সমালোচনা� পরেও "জল� লকার" বাংল� সাহিত্যে এক অনন্� সংযোজন� যেমন সমুদ্রের ঢে� কখনো শান্�, কখনো উত্তাল—তেমনি এই উপন্যাসে� ত্রুটিগুলো� তা� মহত্ত্বক� ঢাকত� পারেনি� হয়ত� মাহরী� ফেরদৌসের পরবর্তী রচনায় আমরা পাবো আর� পরিণ� শৈলী, যেখানে কবিতার ছন্দ � গল্পের গত� হা� ধরাধরি কর� চলবে�
মাহরী� ফেরদৌসের ছোটগল্� প্রায় সব� পড়েছি� তা� তাঁর ভাষা � ভাবনার সাথে কিছুটা পরিচিত মন� কর� নিজেকে� অবশ্� ইতোপূর্ব� প্রকাশিত তাঁর প্রথ� উপন্যাসট� পড়া� সুযো� হয়নি। এট� ছি� বড� পরিসরে তাঁর লেখা� সাথে প্রথ� সাক্ষাত। তিনি উপন্যাসট� সম্পর্কে বলেছিলেন, "সমকালী�, অতিপ্রাকৃত, মি� নাকি ম্যাজি� রিয়েলিজ� কো� শিরোনামে ফেলব তা� ভাবছি।" আমার কাছে মন� হয়েছে এট� একটি মনস্তাত্ত্বি� উপন্যাস। তা� বল� এট� মন� করতে চা� না যে আম� উপন্যাসটির উপরে একটি ধর� আরোপ কর� সীমি� করতে চাইছি। মানুষে� সাহিত্যি� সৃষ্টিকে কো� জনরা� কবুতরে� খোপে বসিয়ে দিতে ভালো লাগে না, যদ� না সে� সৃষ্টি নিজেকে� নিজে খোপে নিয়� আটকাতে চায়� 'জল� লকার' বে� কিছু জনরা� দেয়াল ভেঙেছে বল� আম� মন� করি। একারণে প্রাথমিক পা� প্রতিক্রিয়া ছি� "দারু�, উচ্চাভিলাষী এব� জটিল (কমপ্লেক্� অর্থ�)"�
'জল� লকার' উপন্যাসে� সূত্রপাত নানাবি� সম্ভাবনা নিয়ে। ফ্যান্টাসি আর মিস্ট্রি একসাথে জেকে বসেছ� শুরুতেই। উপন্যাসে� শুরু থেকে রহস্যে� কিছু থ্রে� তৈরি করেছেন লেখক� পাঠক হিসেবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাতা উলটে যেতে হয়। কৌতূহলী হয়ে উঠি। আমার মাঝে প্রোটাগনিস্টকে জানা� আগ্র� তৈরি হয়। সাথে স���থে তা� আশেপাশের চরিত্রগুলো সম্পর্কে� কৌতূহল জাগে� লেখক উত্ত� পুরুষে গল্প বল� যাওয়া� সময় যেভাবে চারপাশ, পরিস্থিত� এব� প্রধান চরিত্রটি� কথ� আর অন্যান্য চরিত্রের সাথে তা� সম্পর্কে� গল্প বলেছেন, তাতে তাঁর নিজস্ব স্টাইল� একটা আব� তৈরি হয়েছে� অনেকটা যে� স্লো-বার্� স্ক্যান্ডিনেভিয়ান থ্রিলা� সিরিজে� মত, বিষাদমাখ� আবহে ধীরগতি� গল্প বল� এমুলেট কর� অনেকটা� কো� স্থি� স্পষ্ট রহস্� নয� গতানুগতি� আঁটোসাটো ক্রাইম থ্রিলারে� মত� � যে� ক্যানভাস� ছড়িয়� পড়া ওয়াটারকালার�
এরকম একটা উপন্যাসে� শুরুতে তা� টো� সে� করতে লেখক গল্পের পটভূমিতে যে শহ� তা� জেনেসি� বা হয়ে ওঠার মিথে� কথ� বলেন� পাঠক ফ্যান্টাসি� জগতে� পর্দ� নড়ে উঠতে দ্যাখে� সে� পর্দার ওপার� উঁকি দ্যায় লেখকের সমসাময়ি� সমাজ আর রাষ্ট্� নিয়� দায়বো� (ব্যক্তিগতভাব� আমার মন� �'তে থাকে জুলা� অভ্যুত্থান আর তা� আগের ফ্যাসিস্� শাসন উপন্যাসটির রচনাকালে� সমান্তরালে একটা ছায়� রেখে গেছে� কেনন� দূ� থেকে আপনি এম� একটা সময় এম� এক হত্যাযজ্� দেখেছে� যে ঘটনা থেকে দূরে থাকাটা আপনা� মাঝে একরক� অপরাধবোধ তৈরি করে। আপনি এক অদ্ভুত বোঝা বয়ে বেড়ান সব সময়)� দেখি আই� প্রয়োগকারী সংস্থা আর ক্ষমতা� কাছে জিম্মি নিরপরা� মানু� উপন্যাসে� চরিত্র হয়ে আসে।
ভালো লাগা� কথ� আর� যদ� বল�, আমার সবচেয়� প্রিয় বিষয়ট� হল� লেখকের বিচ্ছিন্� কাব্যি� প্যারাগ্রাফগুল�, যেখানে জীবন, জগ�, সম্পর্�, মানবচরিত্র ইত্যাদ� নিয়� তাঁর অবজারভেশ� আর উপলব্ধিগুল� উঠ� আস� প্রোটাগোনিস্টে� ভাবনার ছদ্মবেশে� লেখকের � চিন্তাগুলো� মন� হয� তাঁর যাপনের সাক্ষ্� দ্যায়�
এবার� কিছু ব্যক্তিগ� মতাম� প্রকাশ করি। কিছু কিছু জায়গায় সংলা� কি একটু মেলোড্রামা� দিকে চল� যাচ্ছি�? যদিও শেষমেষ আম� মন� কর� তা একেবার� বেমানা� লাগেনি� আবার কখনো মন� হয়েছে চরিত্রগুলোকে লেখক কি একটু বেঁধ� রেখেছেন। তাদে� নীতিবোধগুল�? যেমন শিমন চাচা এবসোলিউট নীতিবা� (একটু ক্লিশে?)� তালিসমান চরিত্রটি আর� বেশি বহুমাত্রিক হয়ে উঠতে পারত কি? আরেকটু কি অন্ধকা� �'তে পারত চরিত্রগুলো? কে� কে� কি �'তে পারত আরেকটু ধূসর? ম্যাজি� রিয়েলিজমে� কথ� যেহেতু এসেছিল, আরেকটু ডিস্টার্বি� কিংব� ভীতিকর (macabre) কি �'তে পারত কিছু কিছু পরিস্থিত�? প্রে� ভালোবাসা সম্পর্কে� অনুভূতিত� কি যুক্� �'তে পারত খানিকট� রক্তমাংশ? এরকম কিছু কিছু কিছু বিষয়।
শে� কথ� বলি। বাস্তব আর ফ্যান্টাসি মিলিয়� আম� বলবো বে� জটিল মানবিক অভিজ্ঞতা� গল্প বলতে চেয়েছেন মাহরী� ফেরদৌস� তারা� স্মৃতি, অতীতে� সাথে বর্তমানে� সম্পর্� খুঁজ� বেড়ান�, নিজে� পরিচয় খোঁজ� - শুরু থেকে শে� উপভো� করেছি। আর � যে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান স্লো-বার্� ডার্� থ্রিলারে� আমেজ - সেটা আমার প্রিয়� যদিও আম� মন� কর� ক্লাইম্যাক্সের জায়গাটা সেভাবে আমার প্রত্যাশ� ফল� করেন� একশো ভাগ। তাতে অবশ্� কো� ক্ষত� হয়ন� 'জল� লকার'-এর� কেনন� লেখকের কা� তো পাঠকের মন যোগানো নয�, লেখকের কা� তাঁর নিজস্ব আর্ট তৈরি করা।
প্রতিবছর বইমেলা� জন্য আলাদ� কর� বইয়ের তালিকা করি। এবার� ব্যতিক্র� নয়। তালিকা� একদম শুরুতে থাকা মাহরী� ফেরদৌসের উপন্যা� 'জল� লকার' একদি� হঠাৎ করেই লেখকের তর� থেকে কথাপ্রকাশে� মাধ্যম� চল� এল� আমার ঠিকানায়� পড়ত� বে� সময় নিলাম। ব্যস্ততা পূর্� সব দিন। অসুস্থতা� সেইসাথ� প্রচণ্� দুশ্চিন্তা � মন খারাপ। মাঝে আরোও বই পড়া হয়েছে� সবমিলিয়� আজ বইটা পড়া শে� হলো। সাথে সাথে কিছু না লিখল� আর লেখা হব� না ভেবে এখনই লিখত� শুরু করলাম।
যারা জানে� না, একসময় মাহরী� আপ� একুয়া রেজিয়� নামে লিখতেন; তখ� 'কিছু বিষা� হো� পাখি' নামে� একটি উপন্যা� তিনি লিখেছিলেন। বিষন্নতায় ভরপু� অদ্ভুত সুন্দর এক বই ছি� 'কিছু বিষা� হো� পাখি'� 'জল� লকার' পড়ত� পড়ত� সে� বইটা� কথ� খু� কর� মন� পড়ে গেলো� কারণ � উপন্যাসটাও বিষদাচ্ছন্ন।
বইটা পড়ত� পড়ত� একদম শেষে� দিকে কথকে� না� জানি আমি। তারা� এব� তারা� বর্ণনায় সবার কথ� পড়ত� পড়ত� আম� আবার� হারিয়� যা� মাহরী� আপুর তৈরি চিরচেন� সে� বিষন্ন জগতে, তারা� মাঝে খুঁজ� পা� নিজেকে এব� আবার� আম� মেনে নি� এই কথাটি�''মানু� শুধু আনন্দে� জন্য বাঁচ� না, মানু� বেঁচ� থাকে নিবিড় বেদনার জন্য�, এমনক� অপূরণীয় স্বপ্নের জন্যও।''
এক ন্যারেটর আছ� এম� বই আম� যেমন পড়েছি, সেরক� একাধিক ন্যারেটর আছ� এম� বই� কম পড়া হয়নি। কিন্তু এক ন্যারেটরের মাধ্যম� অনেকের কথ� জানত� ভালো লাগে আমার� সে� এক চরিত্রকে আম� যেমন জানত� পা�, ঠি� তেমন� জানত� পা� বাকিদেরও� সে কিভাবে দুনিয়� দেখে, জীবন দেখে, দেখে বাকিদের—ত� আমাক� তা� সম্পর্কে জানত� সাহায্� করে। অযথা বাড়তি জটিলতা কিংব� বল� যায় অনাবশ্যকতায় ভরপু� কোনো লেখা আমার পছন্� হয়ন�, আমার পছন্� সুন্দর শব্দচয়ন� এব� অসাধার� নিপুণতায� গঠিত বাক্যে� সমন্বয়ে লেখা বই যেখানে বাহুল্যত� কম�
'জল� লকার' ঠি� তেমন একটা বই� বইয়ের ব্যাপারে বলতে গিয়� লেখক যা বলেন, বই পড়ে তাঁর সন্ধান না পেলে পাঠক হিসেবে আম� বিরক্ত হই� সেজন্য যখ� দেখলাম, লেখকের কথার সাথে মিলে গিয়� � বই যে� চিরচেন� মানুষে� আড়ালে লুকিয়� থাকা গভী� সব রহস্যে� এক ভাণ্ডা�, তখ� খু� ভালো লাগলো। যখ� খুঁজ� পেলা� মি�, জানলাম বিড়াল � কুকু� এব� চাঁদ, নক্ষত্� � সূর্� নিয়� অসাধার� এক গল্প, খুঁজ� পেলা� জাদু বাস্তবতা� এক আশ্চর্� জগ� তখ� মন শান্� হল�, বিষন্ন হলাম অনেকটাই। অতী� � বর্তমানক� চলতে দেখলাম পাশাপাশি হাতে হা� রেখে, দেখলাম কিভাবে ২৮� পৃষ্ঠা� এক বইয়� উঠ� এল� বর্তমা� সময়ের চিরচেন� রূপ—মিথ � জাদু বাস্তবতা� রূপে এম� সব সত্য যা মেনে নিয়েছ� অনেক আগ� তা� মন� জাগে ভয়। ভীষণ নিপুণতায� লেখক বাস্তব জগ� � পরিস্থিতির একটা রূ� এখান� তুলে ধরেছেন, গল্পের ফাঁক� ফাঁক� চোখে আঙ্গুল দিয়� সেগুলো আমাদের দেখিয়েছেন� ঘটনাপ্রবাহগুলো� কেমন আশ্চর্যভাব� মিলে যায়� বইয়ের কিছু অনুচ্ছেদ কি যে ভালো লেগেছে তা বল� বোঝানো দায়, সেজন্য� অন্য কোনোদি� শুধু সে� অনুচ্ছেদগুলো নিয়� লিখবো। বই পড়ত� পড়ত� জানা যায় নিজেকে�, নিজে� শক্ত� � দুর্বলতা� কথ�; আরোও মন� হয� যে কে� নিজে� মধ্য� থাকত� হব� দৃঢ়তা এব� কাটিয়� উঠতে হব� দুর্বলতা� 'জল� লকার' পড়ত� পড়ত� মন� হল� আরোও পড়ত� হব�, পড়ত� হব� সম� সেনে� কবিত�, সমুদ্র ডুবে যাওয়া ঠেকাতে জানত� হব� নিজে� দো�-গু�, থাকব� ঘরভর্ত� বই � নিজস্ব জল� লকার যেখানে সযত্নে তুলে রাখব� স্মৃতি � নিজে� সেসব ভাবন� যা রাখত� চা� আদরে � ভালোবাসায়� 'জল� লকার' চমৎকার একটা বই� অবশেষে, ''মানুষে� প্রত� মানুষে� ঘৃণা আমাদের বিষাক্� কর� তোলে, কিন্তু মানুষে� সাথে মানুষে� বিচ্ছে�? বিচ্ছে� কী কর�? আমাদের প্রাণে� আল� ছিনিয়� নেয়� আমাদের কর� তোলে নগণ্�, কুয়াশায� ঝর� পর� জলকণার মতো।''
� আমার তখ� মন� হয� পৃথিবীটা মাঝে মাঝে আশ্চর্� সুন্দর এক জায়গা� যেখানে আম্মার আক� নিখুঁত ছবিগুলোর মত� চাঁদ, তারা � সূর্� আল� ছড়িয়� আমাদের উষ্ণ কর� রাখে� যেখানে সব মানুষে� মাঝে আছ� এক ঘন নী� জলধারা, যা গোপন�-ন���ঃশব্দে আমাদের মাঝে সুগন্ধ ছড়ায়� তারপ� কোনো হেমন্তের রাতে আমরা নগরে� পিছু ডা� অবহেলা কর� পা বাড়াই ঘাসে� জঙ্গলে লুকিয়� থাকা ছোটো একটা অচেন� ফুলে� খোঁজে। যে ফুলে� জন্ম নেওয়া� কোনো শুরু নে�, শে� নে�, তারপরে� আমরা সবাই তাঁক� খুঁজ� বেড়াই, অস্তিত্বের সমস্� হাহাকা� পেরিয়� বেঁচ� থাকা� গাঢ় গুঞ্জন খুঁজ� নিতে�
এই নর� কাদামাটি, আকাশ, নক্ষত্রমালার বিচিত্� শতাব্দীতে... �
কি স্নিগ্� � বিষণ্ন সমাপ্ত�!
আমার ভাবন�: মাহরিন আপুর বই এই প্রথ� হাতে ছুঁয়ে পড়লাম� আগের সবগুলো সফ্ট কপ� কিনে পড়েছি� আপুর লেখায় অন্যরক� একটা ব্যাপা� আছ�, খুবই স্মুদল� পাতা� পর পাতা, পৃষ্ঠা� পর পৃষ্ঠা পড়ে ফেলা যায়� হয়ত� এক্ট� বিরত� নিয়� আবার ১৯� পৃষ্ঠা থেকে পড়ত� শুরু করেছ�, কয়ে� সেকেন্ডে� ২০� পৃষ্ঠায় চো� চল� যাবে� তবুও দুদি�-দুরা� নিয়� পড়ে শে� করলা� বইটা� এটাক� কো� জনরায় ফেলব�, বা চরিত্র গুলো কি এস� থিউরিটিকাল আলাপ� যাবো না� মাহরিন আপ� পারিপার্শ্বি� অনেক ঘটনাকে একিভূত কর� গল্পটা লিখেছে�, সেখানে আছ� সাংবাদিক সাগর-রুনি� কথ�, নিরাপদ সড়ক আন্দোল�, আগুন সন্ত্রাস, ক্ষমতাবানদের আড়িপাতা স্বভাব কিংব� এদেশ, � সমাজ যে আস্ত এক নর� মধ্যবিত্� � গরিবদে� জন্য তা� বিষণ্ন আখ্যান�
তারা চরিত্রটা হয়ত� লেখিকা� অটোবায়োগ্রাফিক। বই কেনা� আগ� শুনেছি� এট� ওয়া� কাইন্ড অফ অট� বায়োগ্রাফ� টাইপ� তারা চরিত্রটাকে� মন� হয়েছে মূ� প্রোটাগনিস্ট� তাকে ঘিরে� রিফা যেকিনা তারা'� বো�, তালিসমান, ডাক্তা� নভ�, এঞ্জেল এম, শিমন চাচা আর নমিত� চরিত্রগুলো গল্পটাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়� গেছে� তালিসমান চরিত্রটা নিয়� একটু বলি। তালিসমানের কার্যকলা� আমার ভালো লাগে নাই। কারণ সে তারাকে পছন্� কর� সত্বেও আর� দুটো নারী� মাঝে তাকে খুঁজ� বেরিয়েছ�, যেটা� কোনো প্রয়োজন� ছি� না� নাদিয়াক� নিয়� বর্ণনা কর� তা� ভাষ্� মোটাদাগে তা� মস্তিষ্কের উর্ব� চিন্তাভাবন�! সে নাদিয়াক� চেতনেই বিয়� করেছ�, কিন্তু তা� চিরাচরিত স্বভাব তারাকে অন্য নারী� মাঝে খুঁজ�, শেষমেষ তা� কা� হলো। নাদিয়াক� ছুরিকাঘা� করার সময়� সে নিশ্চল দাঁড়িয়� দাঁড়িয়� দেখেছে, এরপর� কে চাইব� তা� সাথে সংসা� করতে� এট� আমার হাইপোথিসিস� সবার এমনট� মন� হব� সেটা� প্রয়োজন নেই।
উপন্যাসট� রহস্যময়� চল্লিশতম অধ্যায়ে গিয়� রহস্যে� কিছু ব্যবচ্ছে� হলেও আর� অনেক প্রশ্ন থেকে গিয়েছ�, যেমনটা আমরা ছোটগল্পে দেখি� তব� পার্থক্য একটা�, ছোটগল্পে সেসব প্রশ্ন জানা� একরম কিঞ্চি� আশ থাকে, এখান� সেটা উদয় হওয়ার কোনো কারণ নেই।� পুরোপুরি ব্যালেন্সড� মাঝে� দিকে ম্যাজি� রিয়েলিজমে� আবহট� একটু বিরক্তির ঠেকছিল� তব� সেটা হত� পারে অনেক্ষ� ধর� বইটা পড়ত� থাকা� ফল� এই যে ভিন্� জগ�, তারা� মায়ের উপস্থিতি, স্বপ্নের বর্ণনা এসবই অবাস্ত� কিন্তু মাহরিন আপুর বর্ণনায় সেগুলো বাস্তব মন� হচ্ছিলো। বিশে� কর� বললে, মারিয়� আর তারা� “কনফেশ�-কনফেশন� খেলা শে� হওয়ার ইমিডিয়ে� বর্ণনাটুকু�
উপন্যাসট� এক হিসেবে বলতে গেলে টাইমলে� হয়ে থাকব� কেনন�, আমাদের, এই বাংলাদেশ� ১৬ বছরে যা যা আমরা প্রত্যক্� করেছ� সেসবের অনেক কিছু লেখিকা� প্রচ্ছন্নভাব� গল্পের ফ্লো-তে ফ্লো-তে বল� গিয়েছেন� সচেত� পাঠক মাত্রই সেসব ধরতে পারবেন বল� আম� মন� করি। আর আমার ব্যক্তিগ� ভাবে এরকম টে�-উইদিনে-টে� বিষয়ট� ভালো লাগে� এট� আর� বেশি ফিকশনে� সাথে একাত্মতা বাড়িয়ে তোলে�
মাহরিন আপুর লেখায় আম� অনেক কাকতাল খুঁজ� পাই। যতগুলা পড়েছি ততবারই কোনো না কোনো ভাবে কিছু না কিছু� সাথে উনার সৃষ্টি কর� চরিত্রগুলো� সাথে মিলে গিয়েছে। তারপ� স্কু� জীবনের বর্ণনা� আমরা সবাই হাসি� কিংব� রাস্তি� মত� সহপাঠী দেখেছি� আমার ক্লাসে� ফার্স্টবয়ের নামও ছি� হাসি�, তব� তা� পরিণতি গল্পের হাসিবে� মত� হয়নি। আপ� লিখেছে�, তারা� ভাষায়, টপাররা অন্যের নো� মুখস্থ কর� অন্যের ভাষা লিখে, আর আম� লিখি সম্পূর্ণ আমার নিজে� ভাষায়� এটুকুতেই বোঝা যায় আমাদের সমাজ, আমাদের রাজনীতি, আমার চারিপা�, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কতটা ঘুণে ধরা। স্কুলে হয়ত� আমরা সবাই মালবিক� ম্যামে� মত� নিষ্ঠাবা� শিক্ষকদে� পেয়েছ�, যারা টপার বা প্রথ� সারীদে� নম নম করতে� না!
আম� খু� গুছিয়� আয়োজন কর� কোনো বইয়ের রিভি� কখনো� লিখত� পারি না� আমার যখ� ইচ্ছ� হয� তখ� লিখি, যা মনের ভেতর আস� একের পর এক হুবহ� তা� লিখে ফেলি� তা� এই লেখা পড়ে কে� উপকৃ� হবেন কিনা জানি না!
কিছু উপন্যাসে� পরিসমাপ্তি "শে� হইয়াও হইলো না শে� এর মত�"� ফ্ল্যাপে পড়া মি� এব� ম্যাজি� রিয়েলিজ� খুঁজতে গিয়� হারিয়� গেলা� অদ্ভুত লৌকি� এক রহস্যে�
অতীতে� বিচ্ছিন্� দৃশ্যগুল� বিচ্ছিন্� হয়ে কিংব� কখনো সেলুলয়েডে গড়া ছায়াচিত্রের মত� ঘুরে বেড়িয়েছে গল্পকথকে� সামনে।গল্পকথ�,তা� বো� এব� শিমন চাচা� পরিচয় নিয়েই উপন্যাসে� শুরু।য� চাচা পর� স্নেহে মাউথ অর্গান� সু� তুলে শিশু� কান্না ভোলাতে চাইত এব� দুইবোন কে রক্ষ� করতো জগতে� সমস্� অন্যায� অবিচার থেকে, সে চাচা হঠাৎ হারিয়� গে� অত� সাগরের গভীরে।হারাল� অনেকেই।ধীরে ধীরে অতী� থেকে বেড়িয়ে আস� মালবিক� ম্যা�, দীপে� স্যা�, লাইব্রেরির ধুলো জম� বই, হাসি�, রাস্তি, ইমতি, অব� ভা�, তালিসমান, রিফা রা�
উপন্যাসে� শে� দিকে এস� জানত� পারা যায় গল্পকথকে� নাম।ফোনকলে� নীরবতা ভেঙে কোনো এক চেনাকন্ঠ ডা� দিয়� উঠ� "তারা " বলে।
এক অন্ধকারাচ্ছন্ন উত্তপ্� সময়� তারা'� সাথে দেখা হয� লাইব্রেরিত� পার্টটাই� কা� কর� পাশে� সেকশনে� ছেলেটা�, তাসলিমানের।যাক� 'তারা' সমস্� ইন্দ্রিয� দিয়� ভোরবেলার স্নিগ্� শিশিরে� মত� ভালোবেসেছিল।গল্পের আবহে সে ভালোবাসাটুকু টে� পাওয়া যায়।শেষ পৃষ্ঠা� মত� দূ� থেকে আমরা� শুনত� পারি নর� প্রতিধ্বনি� ঘুমপাড়ানি গানে� মত� কে� গেয়� যায় "তারা-তাসলিমান, তারা- তাসলিমান, তারা- তাসলিমান.....
অন্যদিকে দুইবোনের অমীমাংসিত অজস্� অভিমান বৈদ্যুতি� তারে� মত� মিলেমিশে আছ� এই গল্পে।নগরজীবন� ফিরে আসার পরেও পাহাড় থেকে ভেসে আস� রহস্যময় সে� ঘ্রা�, নদী� বাতাসে� শীতলতা, তাসলিমানের অসম্পূর্ণতার প্রতিচ্ছবি তারা'� ভেতর� বেদনাতুর কোনো কোলা� এঁকে দিয়েছ� প্রতিনিয়ত।জীবনকে সহজভাব� দেখত� ভালো লাগত� তারা'র।পছন্� করতো বই নিয়� আলাপ করতে, ভালোবাসত� নতুন কিংব� পুরন� বইয়ের ঘ্রাণ।কিন্তু সর্বদা অতী� তা� পিছন� ঘুরে বেড়াতো।তারা'� মন� হত� পরিত্যক্� কোনো ট্রেনে� বগিত� কে� তাকে ফেলে রেখেছে অবহেলায়, অযত্নে�
হাইস্কুল� পড়াকালী� মা কে হারানো,মায়ের অতীতে ঘটিত সত্য এব� স্মৃতি� অত� থেকে বেড়িয়ে আস� মায়ের আবছা চেহারা� উপস্থিতি টে� পাওয়া গল্পকে নিয়� গিয়েছিল অন্য মাত্রায়�
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত বলেছিলেন " মানুষে� প্রকৃত যুদ্� তা� স্মৃতি� সাথে বিস্মৃতি� লড়াই।" তারা'� জীবন� সমস্� স্মৃতি বিস্মৃতি লেখিকা লিখেছে� রহস্যে� আদলে� লেখিকা� লেখনী ইফোর্টলেসল� সুন্দর� উপন্যাসে� শে� পাতা পর্যন্� টেনে নিয়� গেলে� বিরক্ত� বা দ্বিধা উৎপাদন ছাড়াই� প্রথ��বা� পড়লাম তাঁর লেখা, সাবলীলত� প্রশংসনীয়� সমকালী� হো� বা ক্লাসি�, উপন্যা� থেকে ইহাই আমার চাওয়া�
"বেঁচ� থাকা মানে ভাবগম্ভী� কোনো ভবনে� তল� হাঁসফাঁস কর� না, বেঁচ� থাকা মানে জীবনের বর্ণ-গন্ধ- শিল্� ছায়ায� নিবিড়ভাবে নিজেকে জড়িয়� রাখা� আনন্দ।" -মাহরী� ফেরদৌস
"জল� লকার" আমার পড়া লেখিকা� প্রথ� বই� বইটি যত� পড়ছ� তত যে� লেখিকা� শব্দের বুনন� মুগ্� হয়েছি� বে� কিছু শব্দ, কথ�, লাইন যে� মন� দা� কেটে গেছে� একটু একটু কর� পড়ে বইটা শে� কর� ফেললাম এব� বে� কিছু লাইন হাইলাই� না কর� পারলাম না�
আমরা যে শহরে বা� কর� সে� শহরে বসবাসর� প্রতিট� মানুষে� জীবনের গল্প কি এক নাকি অভিন্ন? একটি মেয়� যে বই ভালোবাসে, যা� জগ� জুড়� বই তা� জবানিত� আমরা জানত� থাকি একটি শহরকে। যে শহরে� মানুষদের টুকর� টুকর� গল্পগুলো এক এক কর� উঠ� এসেছ� বইয়ের পাতায়� কখনো নিরাপদ সড়ক আন্দোল�, কখনো রানা প্লাজা ট্রাজেডি, গু� হত্য�, অন্যায�-অবিচার এরকম� আমাদের চারপাশ� ঘট� যাওয়া ছো� বড� নানা ঘটনা লেখিকা খু� সুন্দর কর� তুলে ধরেছেন গল্পে। লেখিকা� লেখন শৈলী অত্যন্� চমৎকার� গল্প কথকে� ভাষায় যে গল্পটি ব্যক্ত হয়েছে তা� সাথে নিজে� অ��ে� মি� খুঁজ� পেয়েছ� এব� কো� নাটকীয়তা ছাড়াই নিজে� মত� কর� গল্পটা বল� গেছে� যা� মধ্য� ছি� না কো� বাহুল্যতা।
একটি মৃ� শহ� সে� শহরে বসবা� কর� হাজারো মানুষ। রহস্�, মিথ্যা মায়াজাল� যে� এই শহরট� আটকে ফেলেছে কয়েকট� জীবনকে� জীবনের এই বেড়াজাল� জড়িয়� একজন মানু� সমাজের বাস্তব চিত্রে� বর্ণনা যেমন দিয়� যাচ্ছে� ঠি� তেমন� তা� পরিবার তা� নিজে� জীবনের নানা দিকগুল� গল্পের ছল� জানা� দিয়েছেন আমাদের� লেখিকা আমাদের সামন� সমাজের শোষণ, বৈষম্য, খু�, হত্য� ইত্যাদ� বিষয� গুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন� বইটি পড়ত� যেয়� আপনি বুঝত� পারবেন যে আপনা� এই বিষয়গুল� নিয়� আর� বিস্তারি� ভাবা� বা চিন্তা করার সুযো� আছে। বিগত বছরগুলোত� ঘট� যাওয়া নানারক� ঘটনা দুর্ঘটনা� কথ� বইটিতে লেখিকা উল্লেখ করেছেন যা বিশেষভাব� উল্লেখযোগ্য।
এই শহরে ঘট� যাওয়া প্রতিট� ঘটনা বাস্তব নাকি ভ্রম সে� প্রশ্ন আপনা� মন� জাগতেই পারে� তব� আম� যে� আমার চিরচেন� ঢাকা শহরে� স্পষ্ট চিত্রই চোখে� সামন� দেখত� পাচ্ছিলাম। এছাড়া� ম্যাজি� রিয়ালিজ� নিয়� বই বরাবরই আম� পড়ত� আগ্রহী তা� ফ্ল্যাপে� লেখা পড়ে বইটি পড়া� আগ্র� জন্মে। তব� এই সম্পর্কে গল্প� যতটা দেয়� তা যে� নিতান্তই কম মন� হল এব� শেষট� একটু অন্যরক� হব� আশ� করছিলাম। তব� বে� সময় নিয়� বইটা পড়াতে বইয়ের সাথে বে� দারু� সময় কেটেছে� আমার পড়া এটাই এই বছরে� বইমেলা� প্রথ� বই�
Always been a silent reader but this book had me talking. Almost Spent 48hrs glued to this book honestly it was worth it. Story is quite captivating, enjoyed the different take on magic realism but NOVO?! Well...he felt like a mystery to be solved and I was kind of rooting for him the entire time. Yet I think such intriguing character should have been more explored but overallagreatread.
একটা শহ�, সে� শহরে� বদলে যাওয়া, শহরে� মানুষে� পরিবর্তন হওয়�, সবকিছু একজনের পক্ষ� ঠি� কতটুকু অবজার্� কর� যায়?? একজন এক� মানু� কি পারে নিজে� অতী�, বর্তমা�, ভবিষ্যৎক� মিলিয়� চলতে? পারে না� তবুও আমাদের বর্তমানে থাকে অতীতে� দা�, থাকে ভবিষ্য� নিয়� চিন্তা�
এই গল্প� অতী� যে কতটা জীবনের সাথে জড়িয়� থাকে সেটা এত সুন্দর কর� লেখা যে পড়ত� গেলে মন� হব� এরকম তো ঠি� আমার সাথে� হয�! যখ� পড়া শুরু কর� তখ� ভেবেছিলা� বড� উপন্যা�, এই মাসে পড়ে শে� করতে পারি কিনা কে জানে! কারণ আম� ঠি� কো� সময় পড়ত� পারব� তা আমার বুঝে আসেন�! বে� কত� মা� বই পড়া-� হচ্ছিল না� কিন্তু রমজা� মা� হবার হেতু আমার বে� ভালই দিনে� বেলাতে একটু আধটু বই পড়া হচ্ছে৷ আবার সেহরির আগ পর্যন্� জেগে থাকল� সে� সময়েও পড়া হচ্ছে৷ তা� এই বইটা পড়ে শে� করেছি। আর পড়া� পর� এত ভা� লাগছিল যে বুঝানো সম্ভ� না� গল্পের সবকিছু� যে� চিরচেনা। তবুও কোথা� কোথা� অমিল� আমাদের জীবনের কত ঘটনা� সাথে মিলে যায়� আবার আমাদের আশেপাশের পরিবেশ� কি হচ্ছ� লেখিকা সেটা� গল্প� তুলে এনেছেন� বে� বে� বে� লেগেছে�
গল্পটা পড়ত� গিয়� মন� হব� এই বুঝি তারা� জীবনের গত� অন্য মোড়� গেলো� আবার মন� হব� এই বুঝি তারা� মায়ের মারা যাওয়া� রহস্� জানা যাবে� আবার মন� হব� রিফা বোধহয় নর� মনের হয়ে যাবে একেবারে। এর মাঝে তালিসমানের তারা� জীবন� প্রভাব, শিমন চাচা� গায়েব হওয়�, তারা� আব্বার অনুশোচনা সবকিছু� যে� একটা জায়গায় এস� স্থি� হত� যাচ্ছে বল� মন� হবে। তবুও অস্থিরতা সর্বক্ষণের� বইটা পড়া� সময় প্রচুর কমফোর্টেবল ফি� করছিলাম। প্রতিট� ঘটনা� কিছু না কিছুতে জীবনের সাথে অনেক কিছু� মিলে যাবা� আভাস আছ� এখানে। তা� হয়ত� আগ্র� বেড়েই চলছিল। অবশেষে সমাপ্তি। শুধু সমাপ্তিই নয�, তৃপ্তি� সমাপ্তি৷ ❤️
থার্মোডাইনামিক্স এর দ্বিতীয় সূত্� বল� - the state of entropy of the entire universe, as an isolated system, will always increase over time - অর্থাৎ কো� একটা সিস্টেমে� বিশৃঙ্খলার পরিমাণ সর্বদা� বাড়তে থাকব�, কখনো� কমবে না� ঠি� একইভাব�, পৃথিবী নামক এক গ্রহের মানু� নামক প্রাণিদে� দ্বারা সংগঠিত কৃতকর্মে� ফল� সৃষ্� ক্যাওস, সময়ের সাথে সাথে কখনো� কমবে না বর� বাড়তে� থাকবে। এম� এক অস্থির সময়ের মধ্য� দিয়� চলতে থাকা আমাদের জীবনের গল্পকে জাদু � বাস্তবতা� এক অদ্ভুত মিশেলে এঁকেছে� লেখক তা� 'জল� লকার'- বইতে�
'জল� লকার' - এইবারে� বইমেলা� আমার প্রথ� কেনা � পঠিত বই� প্রচ্ছ� দেখে বায়াস� হয়ে বই কেনা� ব্যাপারে বন্ধুমহল� আমার ব্যাপক সুখ্যাতি (!) থাকাকে জাস্টিফা� করতে, বইমেলায় এক সেকেন্ডে� জন্য� পদধূলি না দিয়েও, কজেটিভ ভার্বে� সাহায্যে হাতে এনেছিলাম বইটি� খুবই সহজপাঠ্য হওয়ার কারণ� একদম বুলে� ট্রেনে� গতিত� পড়ে ফেলেছি� নতূন লেখকদে� বই কিনত� খু� বেশি পরিমাণ এলার্জ� থাকা� পরেও, হালে� বই পড়ুয়াদের রিকমেন্ডেশ� � আকর্ষণীয় প্রচ্ছ� দেখে এই বইটি কিনে� ফেলি একপ্রকার� খু� ভালো লেগেছে লেখক যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্য� বর্তমা� থেকে অতীতে� গল্প বলতে জাম্� করছিলে� - এই ব্যাপারটা। কিছু প্রশ্নের উত্ত� অজান� রেখে� হয়ত� শে� হয়েছে গল্প� কম্ফোর্ট জোনে� বাইর� গিয়� অনেকদি� পর নতূন কো� লিখা পড়ে ভালো লাগলো। কো� একটা বই শে� কর� সুখী সুখী অনুভূত� নিয়� এদিক সেদি� হাঁটাহাঁটি করার ব্যাপারট� বে� লাগে আমার কাছে! কে� কি পড়েছে� জল� লকার? পড়ল� জানিয়েন কেমন লাগলো।
"Stories are for joining the past to the future. Stories are for those late hours in the night when you can't remember how you got from where you were to where you are. Stories are for eternity, when memory is erased, when there is nothing to remember except the story."
.... কে� এত কিছু ঘট� যাওয়া� পরেও আমাদের না বল� গল্পটা আমরা বল� যেতে চা� কোনো নির্জন ঘর� বস�, তা� জানি� তব� জীবন কেটে যায় স্মৃতি রোমন্থ� � স্বীকারক্তির তীব্� আকাঙ্ক্ষায়।
জল� লকার, মাহরী� ফেরদৌস�
জীবন মানুষক� মৃত্যু� পরওয়ানা� আগ� উপহা� দিয়� থাকে, হয়ত দেয় জীবনকে গুছিয়� একটি সুন্দর সাজানো ড্রয়ি� রুমে আস� বসন্তে� প্রথ� প্রহরে� উষ্ণতা� অথবা যাযাবরের স্রোতধারার কোনো গন্তব্যহী� নিরন্ত� পথচলাক� পরওয়ানা� ফাসে� চাপে� শে� অবধি পর্যন্� অক্লান্ত চালিয়� যাওয়াকে দু হাতে তুলে দেয়� হয়ত যাযাবরী এই পথচলায� চলতে চলতে গন্তব্যে� আশ জাগলেও মরূদ্যানের মরীচীকা� মত সব ছা� হয়ে যায়� নির্লিপ্� একাকিত্বের আড়ালে থাকা অনুভূতির স্রোতধারাক� বারংবা� আটকে রেখে এগিয়ে যেতে হয�, কেনন� নিষ্ঠু� জীবন কাউক� বিন্দুমাত্� করুণ� কর� না� তাহল� কে� যদ� জীবন� তা� গন্তব্� খুজে পায়, তখ� কি জীবন তাকে করুন� কর�? হয়ত, কিন্তু তখনও জীবন তা� কড়া� থাবাকে গুটিয়� রাখে না� আর এইভাবে� জীবনের গল্পগুলো জম� পর� একেকজনের লকার�, যে লকার হয়ত সকলে� কাছে খুলব� না� কিন্তু যে হৃদয়ক� ছুয়� যেতে পারে কিংব� নিজে� পেশিজো� প্রয়ো� করতে পারে, তখ� সে গল্পসমৃদ্ধ লকার যেনো কোনোভাবে খুলে যায়, আর হুড়মুড়িয়ে বেরিয়� আস� গল্পের ভান্ডার। তব� আজ� আম� ভেবে যা�, জীবনের যাযাবর পথচল� আমাদের কি দেয়? দুমুঠো গল্প? নাকি একঝা� ভগ্ন অনূভূতির জঞ্জাল? এই প্রশ্নের উত্ত� আমার কাছে নে�, তব� খুজে যাবো� ততদিনে হয়ত জীবনের শে� ঘন্টার কাটা আমায� ছে� কর� যাবে�
এই এক যাযাবরের অস্থির জীবনের পথচলার গল্প জল� লকার� যে তা� জীবনের কেন্দ্রবিন্দুর স্থিরতায� থেকে জীবনের গতিময়তায় নিজেকে ধর� রাখত� গিয়েও হারিয়� ফেলছেন অনবরত৷ মাছে� পিঠে টলমলরত এক শহরে থাকা এক মৃয়মা� নারী, তাকে ঘিরে থাকা সম্পর্কে� ছড়িয়� ছিটিয়� থাকা বেড়াজালের আবদ্ধতার গল্প� নির্লিপ্� একাকিত্ব� থাকা একজনের গল্প যিনি ক্রম� সঙ্গ দিয়� চলেছেন, কিন্তু তবুও তিনি যেনো কোথা� হারিয়� যেতে থাকেন। যেনো তালিসমানের স্মৃতি� টানে, কিংব� তা� হারিয়� যাওয়া মায়ের কন্ঠে। কখনোবা ডক্ট� নভোর কোনো আরব্� রজনী� গল্পে। কিন্তু প্রশ্ন একটা�, যাযাবর তারকারাশ� কি কখনো তা� গন্তব্� খুজে পায়? নাকি সারাজীবন খুজে ফেরে কোনো এক ঠিকানা� জন্য? এই গল্প যাযাবর তারকারাশির, এক জাদুকর� তালিসমানের, এক নৃশং� ক্ষুরধার বুদ্ধিসম্পন্� মারিয়ার, কিংব� পারিবারি� চাপে থাকা হাসিবে�, জীবন� স্থি� হয়ে যাওয়া ইমতি�, গন্তব্� খুজে পাওয়া রিফার। অথবা এট� কলুষতায় নিমজ্জিত এক শহরে� গল্প, যেখানে হয়ত কে� নিজে� জীবনকে খুজে বেড়াচ্ছ� ক্রুঢ়তা� ছুরি হাতে� ম্যাজি� রিয়ালিজমে� হালক� স্বাদে মোড়ান� এক নির্লিপ্� শহরে� ক্রূঢ়তা এব� একাকিত্বের গল্প জল� লকার�
মাহরী� ফেরদৌস এর পড়া প্রথ� বই এট�, এব� প্রথ� বইয়ের প্রতিট� পাতা উল্টানোর সাথে সাথে হাওয়া� মিঠা� এর মত ফেলে যাওয়া তুলতুল� মিষ্টি আবেশ রেখে গেছে আমার মনে। লেখিকা যেনো গল্প লিখেছে� ছন্দের সুতো বুনত� বুনতে। গল্পের লেখন� দিয়� লেখিকা আমায� বারংবা� মুগ্� করেছে। কাব্� বুনত� বুনত� লেখিকা যেনো আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন উপন্যাসে� চরিত্রের সাথে, কথ� বলেছেন ছন্দের আবেশে। যেনো পুরো উপন্যাসে� ঝংকা� ছন্দের বিন্যা� আর লেখনির বুনিয়াদ কোনো কবিতার থেকে কম নয়। গল্পের শুরুতে লেখিকা অনেক গুলো বিচ্ছি� গল্পের সুতোকে আলগাভাবে ছড়িয়� ছিটিয়� এগিয়ে গেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় চরিত্রের হা� ধর� এই বিচ্ছিন্� সুতোকে ধীরে ধীরে গুটিয়� এনেছেন, শেষে এস� যেনো গল্পের আবেশ পাঠকের মাঝে রেখে দিয়� ইত� করলে� গল্পটিকে� গল্পটি যেনো আমার আপনা� জীবনের, কিন্তু এই গল্পের মাঝে থাকা ম্যাজি� রিয়ালিজ� যেনো আরেকটু ভিন্� ছোয়� দিয়েছ�, যেটি যেনো প্রয়োজন ছিল। গল্পটি যেনো দাঁড়িয়� গেলো নি� এক পারদ�, যা পড়ত� আরাম, এব� শে� না কর� রাখা দায়� মেলা� পড়া প্রথ� বইয়� আম� খুজে পেলা� চমৎকার এক গল্প, যে গল্প এখনো তা� রে� আমার মাঝে রেখে দিয়েছে। জল� লকার এম� এক গল্প, যে গল্প পড়ত� গিয়� জীবনের দর্শনক� লেখিকা� আর প্রধান চরিত্রের চো� দিয়� দেখা যাবে, এক অন্যরক� দৃষ্টিতে�
দ্রবিভূত হওয়� দুঃখ বাঁটোয়ারা করতে পারল� তা কি কম�? আসলে কি জানে�, সে� দুঃখের সাগর� ডু� দেওয়া� ঢে� শ্রেয় সিদ্ধান্�! দুঃখের দহনে জীবন খাঁট� হয়। জীবন যাত্রা� সবচেয়� গুরুত্বপূর্ণ পথচলার সময়গুলো� আপাত দৃষ্টিতে পক্ষপাতদুষ্ট! এক জীবন� সেইস� না বল� কথ� বল� ফেলা তো হুটহাট কর� সম্ভ� নয়। কব� থেকে আটঘা� বেঁধ� বসতে হয়। সময় বড� নিঠু� অমানিশ� তাকে টেক্কা দেওয়া সহ� নয়।
আমাদের ব্যক্তিগ� দুঃখগুলো� যবনিকাপা� কখনও হয়ন� হবেও নাহ। সূদু� নীহারিকা যারা অতিক্র� কর� এলেন তাদে� দুঃখ� কম নয়। তা� মাভৈ বলেন, এম� মনস্তা� আর দুঃখ বাঁটোয়ারা করতে পারে এম� জীবনের আক্ষেপ নিয়েই গল্পটা এগিয়েছে এব� এটাই সত্যি। দুঃখ� চিরন্ত�!
জলের উপরে এক কাল্পনিক অস্তিত্বশী� শহরক� নিয়� উপন্যাসে� যাত্রা শুরু হয়েছে� ছোটবেল� থেকে বড়বেলায� আউ� বই পড়া� ঝোঁক মাথাচাড়� দিয়� উঠলে এব� সে� অভ্যাসটি বহুবছর অব্দ� চলমা� থাকব� এম� একটি ছোটবেল� হয়ত� অনেকের� স্বপ্নের মত� মনেহয়� মানসপট� বির্নির্মি� এম� এক শৈশব� ছিলো উপন্যাসে� মূ� চরিত্রের প্রথ� এব� একমাত্� নেশা যা সে তা� জীবন� সত্য� কর� তুলেছে� বইয়ের পাতায় পৃথিবী আবিষ্কারের এই নেশাটা কখনও এতোট� সহজে এস� হাতে� মুঠোয় ধর� দিবে অনেকের� সে� ধারণ� আদতে সহজে আস� না� এই আবিষ্কার� ডুবে বুঁদ হয়ে গেলে কাউক� তুলে আন� সম্ভবও নয� যদিন� জীবন� কো� প্রব� আঘাত আস�! সে� বাস্তব অভিজ্ঞতা� মধ্য দিয়� গিয়েছ� মেয়েটি।
ঢাকা শহরক� রিলে� করতে গিয়� কিছু কালক্রমি� ঘটনাপঞ্জী� উল্লেখ থাকলেও একটি বারে� জন্যেও শহরটার না� নেনন� লেখিকা� লেখা� ধরনে কিছুটা তা� প্রবাস জীবনের সংশ্লিষ্টত� চোখে পড়লো। এম� ঢং � বাংল� উপন্যা� লেখাটা বহ� বিদেশি উপন্যা� পড়া� আফটা� ইফেক্ট� হত� পারে বল� ব্যক্তিগ� ভাবে মন� হয়। সময়টাকে সজী� � প্রাসঙ্গিক রাখা� যে প্রচেষ্ট� সেটা আমার খারা� লাগেনি�
সচরাচর উপাদান� লেখা বই এট� নয়৷ ঘটনা� ঘনঘট� বে� ভালো� আছ� উপন্যাসে� দু'মলাটে। ব্যক্তিগ� জীবনের হিসে� নিকে� কর� তা� সাথে সমকালী� সময়কে সাথে নিয়� ভিন্� ভিন্� দৃশ্যেকল্প সাজানো হয়েছে� বইপত্র পড়া নিয়� খন্ড খন্ড স্মৃতিগুলো একদম মন� গেঁথ� থাকবে। পড়ন্ত সূর্যে� উত্তাপ নে� যেখানে তেমন কো� স্থানই হয়ত� এই গল্পের শে� হয়েছে� সবগুলো ভু� � অজ্ঞানতাকে স্বীকৃতি দিয়� এগিয়েছে গল্প� দু� বোনে� সাথে মায়ের বোঝাপড়া সেরে ফেলছ� উপন্যাসে� ১৭� পাতা� পর থেকে ঝিরিপথ বেয়� উঠতে আর একটু� বে� পেতে হয়নি। অতিদ্রুত ঘটনা� গতিশীলত� আঁকড়ে ধরবে যেকোনো পাঠককে�
এক বসায� পড়া হয়নি৷ মোটামুটি নিরিবিলি সময় নিয়� এই ঈদের ছুটিতে শে� কর� প্রথ� উপন্যা� নিয়� এখনও একটা ঘোরে� মধ্যেই আছি।
জীবনকে পেছন� ফিরে খু� একটা দেখত� ইচ্ছ� কর� না আমার� হয়ত� কারোরই না� কারণ, দেখত� গেলে� টে� পাওয়া যায়, টেনে ধর� রাখবার ক্ষমতা নিয়� অসংখ্য মুহূর্� ঘাপট� মেরে রয়েছে সেখানে� ভালো খারা� মিলিয়� অসংখ্য স্মৃতি� সমারোহ; যাকে পুরোপুরি উপেক্ষ� কর� যায়না যেমন আবার ওর মধ্য� আটকে থেকে বেচে� থাকতেও হাসফাঁ� লাগে খুব। কখনো আক্ষেপ জম� আবার কখনো দম বন্ধ হয়ে আস� হঠাৎ� আর তা�, জীবনকে বর্তমানে� চোখে দেখতেই ভালো লাগে বেশি� হো� জটিল কিংব� সহজ। বিষণ্ন কিংব� সুখী� খারা� কিংব� ভালো, তব� বর্তমা� তো� সাজিয়� নেওয়া� সুযো� থাকে নিজে� মত� করে। হেরে গেলে� সুযো� থাকে “হের� যাওয়া”টাকেই অতী� হিসেবে� মেনে নিয়� আবার� নতুন উদ্যমে সবটা শুরু করার� প্রত� মুহূর্তক� নিজে� মত� কর� সাজিয়� বাঁচবা� থিওরিতেই বিশ্বাসী আমি।
তব� এত আয়োজন কর� মন এব� মস্তিষ্ককে এত কর� বোঝানো সত্ত্বেও তারা মাঝে মাঝে� অবাধ্য হয়ে ওঠ� খুব। এক� অপরে� সাথে ষড়যন্ত্� কর� তাদে� জন্য� তৈরি কর� দেওয়া নিয়মে� বাইর� গিয়� হাঁটতে শুরু করে। যে অতী� পেরিয়� হাজা� কোটি মাইল পথ পাড়� দেওয়া হয়ে গিয়েছ� তারই সামন� এন� দাঁড� করিয়ে দেয়� আর তখনই এত কষ্ট কর� সাজানো, নিজেকে বোঝানো সমস্� বাস্তব টুকু চুরমার হয়ে ভেঙ্গে পড়ত� থাকে সামনে।
ঠি� যেমন কট্ট� এক অতী� পেরিয়� সবকিছু বুকে চেপে রেখে সামন� এগোন� সত্ত্বেও প্রোটাগনিস্ট তারা� সামন� সে� অতী� এস� হানা দিয়েছ� বারবার� আর তা� তা� অতী�-বর্তমানে� ধোঁয়াশায় আটকে যাবা� গল্প� শুনি আমরা “জলজ লকারে”। যেখানে কখনো এস� হানা দেয় পৃথিবীকে গভী� অন্ধকা� থেকে বাঁচাত� এক সাদা কাকে� আত্মত্যাগে� গল্প, আবার কখনো শহরে� জন্মের রহস্� জানত� গিয়� শোনা যায় এক প্রেমময় নৃত্যশিল্পী যুগলের গল্প; যারা একত্রে বধিরতা � অন্ধত্বক� হারালে� ষড়যন্ত্রে� শিকা� হয়ে নিজেরা� হারিয়� গিয়েছিল সমুদ্র জলে। আর বৃহদাকার এক তিমি� পিঠে তৈরি করেছিল এক মায়াবী শহর। হঠাৎ করেই রহস্যজনকভাবে যে শহ� থেকে হারিয়� যায় মানুষেরা� আবার কখনোবা প্রিয় মানুষে� আহ্বান� সাড়� দিয়� মৃতর� চল� আস� কাছে�
তব� শহ� সম্পর্কি� এস� অতিপ্রাকৃত জাদুবাস্তবতা, মি� সমস্তকিছ� ছাপিয়� জল� লকার� সবচেয়� বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছ� প্রোটাগনিস্টের নিজস্ব জীবনের সম্পর্কে� টানাপোড়নে� গল্প� সবার মাঝে থেকে� একাকী বিচ্ছিন্� থাকবার গল্প� রহস্যময় শহ�, রহস্যময় পরিবার, বোনে� সাথে তিক্� সম্পর্�, অতীতে� কিছু স্মৃতি; যাদে� অধিকাংশই বোনে� সাথে থাকা সম্পর্কে� মতোই সুখক� নয�, বহমা� বর্তমানে অপ্রত্যাশি� কিছু ঘটনা� হাতছান� সমস্তকিছুক� ছড়িয়� ছিটিয়� রেখে আবার একসাথে জোড়� লাগানো হয়েছে ধীরে ধীরে� যাপি� জীবনের গল্প বলতে গিয়� এত� যে মি�, ম্যাজি� রিয়ালিজমে� ছোঁয়া রাখা হয়েছে� তা অত� সামান্য। ফ্ল্যা� দেখে যদিও এই দুটো� সন্নিবেশ আশ� করেছিলাম আর� প্রগাঢ়ভাবে।
বইয়� জাদুবাস্তবতা� ছোঁয়াটা বেশি আশ� করেছিলাম বল�, পড়া� মাঝে এব� সমাপ্তিত� গিয়েও আক্ষেপের সু� বেজে ওঠ� মনে। তব�,জীবনের সহ� এব� সত্য গল্প বলতে গিয়� যেভাবে রহস্যে� মিশে� ঘটান� হয়েছে সুনিপুণভাব� তা� মুগ্ধতায� সে� আক্ষেপের সু� টুকু দৃঢ় হওয়ার সুযো� পায়নি খু� একটা� শুধু বহমা� জীবনের বিষন্নতা� নয� বর� সমাজ এব� রাষ্ট্� সম্পর্কে দায়বদ্ধতা� উঠ� এসেছ� এই গল্পে। যা� জ্বলজ্যান্� উদাহরণ শিমন চাচা এব� তালিসমান এই চরিত্রদুটো� যাদে� একজন দায়বদ্ধতা স্বীকা� করতে গিয়� হারিয়� গিয়েছ� অতলে আরেকজন ডুবে থাকে অস্থিরতায়।ব্যক্তিগতভাবে মন� হয়েছে তাদে� উপস্থিতি আরেকটু বেশি থাকা উচিত ছি� গল্পে।
মূ� চরিত্র হিসেবে তারাকে দেখানো হলেও, গল্পের শেষটায� এস� মন� হয়েছে, মূ� চরিত্র আসলে প্রত্যেকেই� রিফা, তালিসমান, শিমন চাচা, অ্যাঞ্জে� এম কিংব� ওই শহরে বা� কর� প্রত্যেকটা মানুষ। প্রত্যেকেই আসলে� এই জল� লকারের মূ� চরিত্র� কখনো আবার মন� হয�, পড়ত� গিয়� হয়ত� আম� নিজে� তাদেরই একজন হয়ে উঠছি� সকলে� মাঝে থেকে� বিচ্ছিন্� বো� কর� প্রোটাগনিস্ট নিজে� গল্প বলতে গিয়� শে� পর্যন্� আস পাশে� সকলে� গল্প� যে� বল� আনমনে। জীবনের নিগূঢ় সত্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় তা� প্রব� জীবনবোধে� সাথে সাথে� শেষটায� এস� উপলব্ধ� হয� দিনশেষ� আসলে প্রত্যেকেই প্রত্য���কের থেকে বিচ্ছিন্� হয়ে থাকে আজীবন� কে� সকলে� মাঝে থেকে� কেউব� আড়ালে থেকে� সকলে� স্বতন্ত্� নিজেদে� চারিত্রি� বৈশিষ্ট্যে� তব� কোনো এক বিন্দুতে সকলে� যে� এক� হতেই তো পারে যা� প্রত� পাহাড়সম অভিমান জম� রেখে ঘুরে বেড়াচ্ছ� তা� মন� আমার প্রত� এর চেয়েও অনেক বেশি অভিমান জম� রয়েছে, ঠি� যেমন ছি� তারা� প্রত� রিফার। আমরা আসলে সকলে� সকলক� বুঝে ফেলা� ভা� ধর� থাকি স্রেফ। অথ� সারাটা জীবন আসলে কেটে যায় নিজেকে� বুঝত� গিয়ে।
সবশেষে বলবো, সুন্দর বই� সুন্দর সমাপ্তি। গল্প শে� হলেও চরিত্রগুলো� যাপি� জীবনের ইত� ঘটেনি। গদ্যশৈলী� কারণ� শুরু থেকে শে� পর্যন্� পৌঁছ� যাওয়া যায় এক নিমিষেই। তব�, এর মাধুর্যতার জন্যেই হয়ত� ইচ্ছ� কর� অল্প অল্প কর� পরিপূর্ণ স্বা� নিয়� তব� সমাপ্তিত� পৌঁছতে� গল্পটা অনেকদি� মন� থাকব� কিনা জানিনা� কিন্তু, এর চরিত্রগুলো মন� থাকব� অনেকদিন। ক্ষুদ্� সময়ের জন্য� আস� চরিত্রগুলো� মন� দা� কেটে গিয়েছে। কাউকেই অপ্রাসঙ্গি� বা অযাচিত মন� হয়নি। আর তা� হয়ত� ফ্ল্যাপে� সাথে বই মেলাতে গিয়� যে অতৃপ্ত� আসবে বল� ভেবেছিলা� তা� ছিটেফোঁটাও আসেন� শেষটায়।
"জল� লকার" উপন্যাসে� শুরুটা অতীতে� বহ� বছ� আগ� জুলাইয়ে� কোনো এক তপ্ত দুপুরে ঘট� যাওয়া ঘটনা স্মৃতি� পাতায় ঢে� তোলে� যে ঘটনা স্মর� করিয়ে দেয়, জীবন থেকে প্রিয় মানুষদের হারিয়� যাওয়া� বেদন� বয়ে চল� কেবল বিষাদময়� নয�, খানিকট� ক্লান্তিকরও। গল্পের শুরুটা অতীতে হলেও তা খু� দ্রুতই ফিরে আস� বর্তমানে�
মূ� চরিত্র� কাজে� ক্ষেত্� হিসেবে লেখক চমৎকার একটি বিষয� বেছে নিয়েছেন, যা আমাদের সমাজ� খু� একটা পরিচিত� পায়নি এখনও� কিন্তু ভবিষ্যত� হয়ত� পাবে� অসুস্থ বা একাকী মানুষেরা সবথেকে বেশি চায় যা, তা হল� সঙ্গ� মূ� চরিত্র এমনই একজন যিনি এজেন্সির মাধ্যম� নির্বাচি� ক্লায়েন্টদে� সঙ্গ দে�, গল্প পড়ে শোনা�, তাদে� গল্প শোনেন।
একেবারেই গতানুগতি� ধারা এড়িয়� গল্প এগিয়ে যায়, কখনও অতী�, কখনো বর্তমানে� ঘটনাকে কেন্দ্� করে। লেখকের গল্প বলার কায়দা� অভিনব। ছোটো ছোটো সহ�, সর� বাক্যে বল� কথার গভীরত� অনুধাব� করতে এক লাইন কখনও দু’বার পড়ত� হয়েছে� আপাতদৃষ্টিতে যা দেখি, তা� পেছনেও কত গল্প লুকিয়� থাকে! যা বল�, তা� পেছনেও লুকিয়� থাকে কত অজান� কথামাল� না বল� বন্দী পাখি হয়ে ডানা ঝাপটায়। খু� সহ�-সর� বা আপাতদৃষ্টিতে হাসিখুশি পারিবারি� জীবনের ছব� সবসময়� রঙী� হয� না, সাদাকালো� হয়। সম্পর্কে� জটিলতা তৈরি হয়। আবার কখনও হয়ত� কারণ ছাড়াই তৈরি হয� ঈর্ষ�, বিদ্বে�, হিংসা। নষ্ট কর� দেয় সম্পর্কে� মাধুর্য। উপন্যাসে� মূ� চরিত্রের সাথে ঘুরপাক খেতে থাকা মানুষগুলোর জটিলতা, তাদে� বিবেচনাবোধ, তাদে� জীবনের প্রত� দৃষ্টিভঙ্গ� খুবই সুক্ষভাব� এঁকেছে� লেখক�
গল্পের সবথেকে ভালো লাগা� জায়গা ছিলো তালিসমানের সাথে কাটানো মূ� চরিত্রের অতীতে� সময়ের স্মৃতিচারণ� পড়ুয়�, নির্বিরোধী তালিসমানের প্রভাব� তা� জীবন� আস� পরিবর্তন উল্লেখযোগ্য। নি� চরিত্রের দূর্বল দিকগুল� সরিয়ে ফেলত� তালিসমানের সঙ্গ সাহস হিসেবে কা� করেছ� মূ� চরিত্রের জীবনে। এই সময়ের বর্ণনাগুলো চমৎকার� কোনো বাহুল্� নে�, সহজিয়� সুন্দর কিন্তু গভীরতায� পূর্� বাক্যে সে� মুহূর্তগুলোক� ফুটিয়� তুলেছে� লেখক�
গল্প এগোয�, অতীতে� ছাঁট ফিরে ফিরে আসে।
মূ� চরিত্রের জীবনের সাথে জড়িয়� থাকে মৃ� মায়ের প্রতিচ্ছবি� ঠি� প্রতিচ্ছবি� নয� আবার অশরীরি কিছু� নয়। কিন্তু এম� কে� আছ�, যা� উপস্থিতি বিপদ�, ভয়ে, খারা� সময়� তাকে আগলে রাখত� চায়� বোধে� বাইরের সে� সত্ত্ব� আশ্বস্� করতে চায়, না থেকে� থেকে যাওয়া যায়� গল্প� সে� সত্ত্বার উপস্থিতি বে� কিছু জায়গায় দেখা যায়� ডা. নভোর সাথে হাসপাতাল� থাকা� সময়� সে� সত্ত্বার উপস্থিতি জানা� দেয়� সেখানে কিছুটা আঁ� দিয়েছেন একটি পুরন� গল্পের উল্লেখ করে। পাঠক নিজে� মত� কর� যোগসূত্র বে� কর� নিতে পারে� সে� গল্প থেকে� তব� এক্ষেত্র� বিজ্ঞানমনস্ক মন যদ� ভাবে, � সত্ত্বার উপস্থিতি কেবল� মূ� চরিত্রের কল্পনা� অং�, তাহল� কি সেটা কো� কালেক্টি� কোনো হ্যালুসিনেশন!
বেশকিছ� বাস্তব ঘটনা� উল্লেখ আছ� গল্প� যেমন বহুত� ভব� ধ্বস, ফু�-কোর্টে, শপিং মল� আগুন, সাংবাদিক দম্পতি� হত্যা ইত্যাদি� এই ঘটনাগুলোতে দায়িত্ব� থাকা ব্যক্তিদের নীরবতা নিয়� লেখকের আক্ষেপ� ফুটে উঠেছ� তারা� জবানীতে� একজন লেখক কেবল কাল্পনিক বিষয� নিয়� গল্প লেখে� না, বর� একটি সমাজের, সময়ের প্রেক্ষাপটকে উপজীব্� কর� ফুটিয়� তোলে� একটি গল্প, যা সমাজের প্রত� লেখকের দায়বদ্ধতা� কখনও কখনও আপাতদৃষ্টিতে সুন্দরভাবে চলতে থাকা সমাজব্যবস্থা� ভেতর� বা� কর� ঘুণপোকার অস্তিত্ব টে� পাওয়া যায় না� লেখক সে� ঘুণপোকার উপস্থিতি তুলে ধরেন গল্পের মাধ্যমে। সমাজের দৃষ্টিভঙ্গ�, বিচা� ব্যবস্থা� একপেশে আচরণ, অর্থনৈতি� বৈষম্য একজন সাধারণ মানুষে� পুরোটা জীবন পাল্টে দিতে পারে মুহূর্তে� সে� অসহায়, প্রায় হেরে যাওয়া মানুষে� পক্ষ� দাঁড়াতে চাওয়া মানু� খু� বেশি থাকে না� কিন্তু আশার রা� তো আর ছেড়� দেওয়া যায় না! আর সে� আশার আল� জ্বালিয়� রাখতেই লেখক গল্প� মূ� চরিত্র, তালিসমান, শিমন চাচা� চরিত্র এঁকেছে� পর� যত্নে।
উপন্যা� পড়ত� গিয়� সময়কা� এব� স্থা� নিয়� দ্বিধা জেগেছে� কখনো মন� হয়েছে গল্পের পটভূমি এই দেশে, আবার কখনো মন� হয়েছে হয়ত� তারা দূরে কোনও উন্ন� দেশে চল� গিয়েছে। তব� যেহেতু অতী� আর বর্তমা� সময়ের দ্বৈ� পটভূমিতে গল্পের রচনা সেক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্ত� আর আবহাওয়া� পরিবর্তনের ব্যাপারটুক� মেনে নেয়াই যায়�
উপন্যাসে� ধারাবাহিকত� চমৎকার� অতী� থেকে বর্তমানে� দৃশ্� আসার কোনো তাড়াহুড়ো নেই। খু� স্মুথল� এক গল্প থেকে আরেক গল্পের ভেতর� চল� আসতে পারবেন পাঠক� এতটুকু অস্বস্তি হব� না�
উপন্যা� পড়া শেষে বে� অনেকটা সময় আম� ভেবেছি� মাহরী� ফেরদৌস আপুর গল্প আম� আগেও পড়েছি� আপুর সবগুলো প্রকাশিত বই� আমার সংগ্রহ� আছে। তব� এই উপন্যা� আগের সব লেখা থেকে আমার আলাদ� মন� হয়েছে� কখনও কখনও আম� গভীরভাব� ভাবত� বসেছ�, কখনও দৃশ্যপ� ভেসে উঠেছ� চোখে� সামনে। দীর্ঘদিন পর এত চমৎকার একটি উপন্যা� পড়লাম�
মাহরী� ফেরদৌসের 'জল� লকার' কোনো সাধারণ উপন্যা� নয�, বর� এট� এম� একটি রহস্যময় উপন্যা� যেখানে লেখক অত্যন্� সুচারু হস্ত� মানুষে� অতী� � বর্তমা� জীবনকে রহস্যে� বেড়াজাল� আবদ্� কর� তুলেছে� আর দেখিয়েছেন মানুষে� ভবিষ্য� কতটা অনিশ্চিত� এট� আপাত দৃষ্টিতে একটি মিস্ট্রি বা রহস্� উপন্যা� মন� হলেও প্রকৃতপক্ষ� এট� আমাদের বাস্তব জীবন� ঘট� যাওয়া বিভিন্� ঘটনা� সাথে সাদৃশ্� রেখে গড়ে তোলা একটি অসাধার� সৃষ্টিকর্ম�
কাহিনী সংক্ষে�: "জল� লকার" উপন্যাসট� মূলত ব্যক্তিগ� দৃষ্টিকো� থেকে লেখা যেখানে উপন্যাসে� কেন্দ্রীয় চরিত্র এব� তা� সাথে সম্পর্কি� অন্যান্য চরিত্রের অতী� অভিজ্ঞতা � বর্তমা� জীবন� সম্মুখী� হওয়� পরিস��থিতি� দৃশ্যপ� অঙ্কিত হয়েছে� উপন্যাসট� পড়া� সময় পাঠকরা পৌঁছ� যাবে� এম� এক ভাসমান নগরীতে, যেখানে বাস্তবতা � কল্পনা� সীমানা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে� এই নগরী� উত্থানকে কেন্দ্� কর� গড়ে উঠেছ� বিভিন্� লোককাহিন� যেগুলো� কোনোটা� আসলে প্রমাণসাপেক্� নয়। বিশা� এক মাছে� পিঠে গড়ে ওঠ� এই অদ্ভুত শহরক� কেন্দ্� কর� সৃষ্টি হয়েছে এক গভী� রহস্� যেটি নগরবাসী� কাছে আজ� ধোঁয়াশা রয়ে গেছে� গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র একদিকে বর্ণনা করেছ� তা� বর্তমা� জীবনচিত্রক�, অন্যদিকে ছুটে চলেছ� তা� অতীতে ঘট� যাওয়া বিভিন্� ঘটনা� বা দুর্ঘটনা� পিছনের লুকিয়� থাকা রহস্যে� হাতছানির দিকে� সে তা� বর্তমা� জীবনের সম্মুখী� হওয়� বিভিন্� ঘটনা-দুর্ঘটনা� পিছনের আস� রহস্� উদঘাটন করতে বারবার ফিরে যায় তা� সুদূ� অতীতে� তা� এই রহস্� উদ্ঘাটনে� যাত্রায় তা� পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের এব� তা� সাথে সম্পর্কি� অন্যান্য চরিত্রগুলো� জীবন কাহিনী� অংশবিশেষ সম্পর্কে� পাঠকরা অবগত হবেন এই উপন্যাসে� গল্পের প্রায় প্রতিট� চরিত্রের মধ্যেই রয়েছে কোনো না কোনো সুপ্� রহস্য। গল্পের মূ� চরিত্রটি তা� বাস্তব জীবন সম্পর্কে বে� উদাসীন। আজ� সে তা� অতীতে� অমীমাংসিত ভালোবাসা� জন্য� মনের গভীরে কোথা� এক অদৃশ্য টা� অনুভ� করে। সে বারবার স্মৃতিচারণ কর� তা� ফেলে আস� দিনগুলোর, যেখানে অত� অল্প বয়সেই তাকে সম্মুখী� হত� হয়েছে বিভিন্� তিক্� অভিজ্ঞতার। পরিবার থেকে� সে যে� ছি� পরিবারহীন। যদিও বর্তমা� জীবন� সম্মুখী� হওয়� বিভিন্� রহস্যে� সমাধান করতে গিয়� এক� এক� সে জীবন থেকে হারিয়� ফেলা মানুষদের মুখোমুখি হত� সক্ষ� হয�, কিন্তু শে� পর্যন্� কি তা� জীবন� সবকিছু স্বাভাবি� হব�? সেটি জানত� পড়ত� হব� "জল� লকার" উপন্যাসটি।
ব্যক্তিগ� অভিম�: আমার পড়া অন্যান্য রহস্� উপন্যাসগুলোর তুলনায� "জল� লকার" উপন্যাসট� ছি� বে� ভিন্নধর্মী� যদিও গল্পের প্রথ� দিকে কাহিনী� ধারাবাহিকত� বুঝে উঠতে বে� কিছুটা সময় লেগেছে, কিন্তু এক পর্যায়ে মূ� গল্প� ঢুকে যাওয়া� পর বই ছেড়� উঠ� যাওয়া� প্রত� সৃষ্টি হয়েছি� ভীষণ রকমে� অনাগ্রহ। যখনই বই ছেড়� উঠেছ�, বারবার মাথা� মধ্য� গল্পের কাহিনীগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল। পরবর্তীতে কি ঘটবে তা জানা� জন্য মনটা আনচা� করছিল। মন� হচ্ছিল নিজে� যে� গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রের ভেতর ঢুকে গেছি� আম� নিজে� যে� তা� মন� জন্ম নেওয়া� রহস্যগুলোর সমাধান পাওয়া� জন্য� উদগ্রী� হয়ে উঠেছিলাম� যদিও শেষট� যেরক� আশ� করেছিলাম, তা� থেকে বে� ভিন্নতার মধ্য� দিয়� সমাপ্ত হয়েছে (যেটা রহস্যময় উপন্যাসে� অন্যতম প্রধান গুণাবলী বল� আম� মন� কর�), তবুও গল্পের কাহিনীটি আমার মন� বে� গভীরভাবেই দা� কেটেছে� আর এই গল্প� সবচেয়� ভালো লেগেছে যে� জিনিসট� সেটা হল� মূ� চরিত্রের প্রখ� আত্মসম্মানবোধ।
গল্প কথ�, একজন নারী, পেশায় ফ্রিল্যান্সা�, কম্পিয়নশি� ভাড়� দেয়� ধরেন কো� মৃত্যুপথযাত্রীকে শে� স্ময়ে সঙ্গ দেয়া। তা� জীবন� বন্ধ� বলতে এঞ্জেল মারিয়� বা এম নামে একজন আছে। দরকারে-অদরকার� মারিয়ার কাছে কথকে� ডা� পড়ে� মারিয়� বে� স্বার্থপ� মানু�, নিজে� দরকারে, হে� কা� নে� � করতে পারে না, নিজে� ক্ষত� কর� হলেও আদায� কর� নেবে সব� গল্প কথকে� না�, গল্পের এত পর� গিয়� জানা যায়, তা� আমিও রহস্� রেখে যাই। কথকে� জীবনের অনুভূত�, গল্প ঘিরে� এই গল্প� সেখানে অজস্� রহস্� আছ�, যা কোনদিন� সমাধ� করতে পারব� না সে� বা হয়ত� চায় না� একদি� এক শিক্ষকের সাথে, এক সুপা� শপ� দেখা হয� তার। এরপর থেকে এক� এক� মন� পড়ত� থাকে স্কু�-কলেজের অনেক ঘটনা, ব্যাকবেঞ্চার এক ছাত্রী যখ� ক্লাসে� টপ লিস্টে চল� আস�, তখ� কী হয�? সে� শিক্ষাজীবনের একটা ঘটনা� জন্য তা� পুরো জীবন বদলে যায়� জেলে� দরজায় যেতে হয� তাকে, কিন্তু কো� এক জাদু বল� কথ� মুক্তি পায়�
মা মা/রা যাবা� পর, বাবা হারিয়� যায়� শিমন চাচাকে কে� নিয়� চল� যায়� সাথে চল� যায়, সে� মাউথ অর্গানের সুর। হারিয়� যায় সব� একমাত্� বো� রিফা� সাথে কথকে� যোগাযো� নেই। কর� না, রিফা চায় না কথকক� বোনে� পরিচয় দিতে�
প্রতিনিয়ত এক ছায়� অনুসরণ কর� কথককে। সে� শিক্ষক যেমন অতী� কে সামন� এনেছহি�, তেমন� সামন� আস� আর� এক সত্য, যখ� ডঃ নভোক� সঙ্গ দিতে যায় কথক। এম� কিছু সে জানত� পারে, যা� রহস্� হয়ত� সে না জানলেই ভালো হত কিংব� জেনে� ভালো হত� পারে�
পুরো গল্প, পুরো ঘটনা যে শহরে, সে শহ� মাছে� পিঠে গড়ে উঠেছে। অনন্তকাল ধর� সবাই এখান� বা� করছে� কখনো মন� হব�, � আমার নিজে� শহরে� গল্প, পরক্ষণেই মন� হব� না, � অন্য কো� শহর। অসংখ্য চরিত্র আছ� গল্প�, প্রত্যেকের নিজে� গল্প আছে। সে গল্প কে� বল�, কে� বল� না� না বলার মধ্যেও অনেক কিছু� বল� দেয়�
বইটা থ্রিলা� বা সামাজি� বা সাস্পেন্� না, কাজে� রহস্�, শেষে কী হল এরকম প্রশ্ন আস� না� নিজে� মত কর� সাজিয়� নেয়� যায়� গল্প কথকে� অনেক ভাবন�, অনেক দর্শ� পাঠকের সাথে মিলে যাবে�
শিমন চাচা� রহস্যট� কিছুটা খোলাসা হল� ভালো হত� শিমন চাচা হারাবা� ব্যাপারট� পুনরাবৃত্ত� হয়েছে বল� মন� হয়েছে� ইঙ্গিতেই সে� রহস্� আর� উন্মোচ� করতে পারতেন লেখিকা� আর মু� মালিকা চরিত্র এসেছ� ঠি�, এই চরিত্রকে আর� সময় দেয়� যে�, এক সময় গল্প� এক� বে� গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র মন� হলেও পর� হারিয়� গেছে� অবশ্� শিমন চাচা� হারানো রহস্� উন্মোচ� করেছেন কিনা, বা আম� বুঝিনি কি না জানিনা� প্রচ্ছদট� দারু� সুন্দর�
কথকে� দর্শ�, ভাবনার অং� ভালো লেগেছে� জীবনকে আসলে অনেক ভাবে� দেখা যায়� আমাদের অজান� কত কিছু� তো থাকে� সব রহস্যে� সমাধান হয� না�
বইটা জাদুবাস্তবতা, সবার ভালো লাগব� কিনা জানিনা, তব� কিছুটা ভিন্� স্বা� নিতে চাইল� পড়ে দেখত� পারেন। একটু বুঝে পড়ত� হব�, একটু সময় নিয়� পড়ত� হবে। গল্পের ফ্লো বে� ভালো� সবথেকে ভালো লাগে, অল্প দু� চা� শব্দ� কী সুন্দর কর�, অনেক কথ� বুঝিয়েছেন লেখিকা�
XXXXXX এবার আস�, বই এর বাঁধাই আর ব্ল্যাংক স্পে� নিয়ে। বইটি� বাঁধাই ভালো ছি� না আর এত বেশি ব্ল্যাংক স্পে�!! অনায়াসে অন্ত� আর� বে� কিছু পে� কমান� যেত। পরিচ্ছদে� শুরু আর শেষে অনেক বেশিইই খালি জায়গা ছিল। বই খুলে পড়ত� অনেক অসুবিধ� হয়েছে� যেটা কথাপ্রকাশে� মত প্রকাশনী� কা� থেকে আশ� কর� যায় না� XXXXXX
'জল� লকার'- বই হাতে নিতে� না� আর প্রচ্ছ� বে� কর� ধাক্কা দেয় একটা, কৌতুহলী কর� তোলে� স্যাঁতসেঁত�, প্রাচী� একটা হাওয়া বয়ে আন� না�, কিন্তু বে� মিনিমা� অথ� উজ্জ্ব� রঙের মন ভালো কর� দেয়� প্রচ্ছদ। বাস্তব আর কল্পনা, আল� আর অন্ধকা�- বৈপরীত্যগুলোর মিথষ্ক্রিয়া� এই ব্যাপারট� অবশ্� কেবল নামে� নয�, রয়েছে পুরো উপন্যাসজুড়েই। বলছিলা� কথাসাহিত্যিক ম��হরী� ফ���রদৌস এর সদ্যপ্রকাশিত উপন্যা� 'জল� লকার' এর কথা।
মাছে� পিঠে গজিয়ে ওঠ� এক জনপদ, যা কিনা যেকোনো দি� আবার তলিয়ে যেতে পারে গভী� সমুদ্র�- লোককথায় ব্যুৎপত্তি� এম� এক ইতিহাস আছ� এম� এক নগরী, আর তাতে বসবাসর� �'জন মানুষে� যাপি� জীবনকে যদ� একটি পিৎজার সাথে তুলন� কর� যায়, সে� পিৎজার একটা ছোট্� স্লাইসের গল্প এই 'জল� লকার'� আপাত মৃয়মা�, কিন্তু এক ছায়াচ্ছন্� অতীতে� গল্প বয়ে নিয়� বেড়ান� এক তরুণী� প্রথ� পুরুষে লেখা গল্প এটি। পড়ত� পড়ত� পাঠক প্রায়� নিজেকে আবিষ্কার কর� ফেলবেন বাস্তব আর কল্পনা� মাঝামাঝি এক ধূসর জগতে� কখনো সড়ক আন্দোল�, শ্রমিক বিক্ষোভে� গল্প ইত্যাদির আয়োজন� মন� হব� এট� তা� বা আমাদের ঢাকা শহরেরই গল্প, কিন্তু বর্ণনা� শৈলী বা আবহে মন� হব� এট� সম্ভবত তা নয�- এম� এক শহ� এট� যা� সাথে আমাদের পরিচিত কো� জায়গা� কোনো মি� নেই। বা হয়ত� আছ�, শুধু খুঁজ� পাচ্ছি না আর কি� এর� মধ্য� নিচুস্বর� গল্প বল� চল� কথক। আমরা পরিচিত হই আর� বে� কিছু চরিত্রের সাথে� পরিচিত হই তাদে� অন্তর্গত ঘা�, প্রতিঘাত, দ্বন্দ, ব্যক্তিগ� দ্বিচারিতা ইত্যাদ� ইত্যাদির সাথে� বুঝত� পা� যে মেয়েট� 'কিছু একটা' বলতে চাইছ�, তা� বলার মত একটি গল্প আছে। কিন্তু সে বলতে পারছ� না... কারন হয়ত� সে নিজে� জানে না� তবুও একটা� একটা� পর একটা পর্দার আবরণ খস� পর� আর আমরা এগোই সত্যের আর� একটু কাছে� পা� না হয়ত� পুরোপুরি, কিন্তু কিছু তো এগোই...
কিছু কিছু জায়গা বে� কৌতুহলোদ্দীপক� যেমন গল্পের অনেকটা দূ� পর্যন্� গল্পটা যা� ভাষ্যে, অর্থাৎ গল্পের কথকে� নামট� আমরা জানত� পারি না� তালিসমান নামক চরিত্রটি- সেটিকে ব্যাখ্যা করাও মাঝে মাঝে কঠিন হয়ে যায়� নিছক দুর্বলতা বল� তাকে ব্যাখ্যা কর� যায় না� আবার সে 'মো�'� না ঠিক। নাকি ধর� নেবো শাব্দি� অর্থের মত তাকে সৌভাগ্যে� প্রতী� হিসেবে� নেয়� ভালো- লাকি চার্�? এম� আর� বেশকিছ� সাবপ্লটে� কারণ� এক� একটি নির্দিষ্� জঁনরায� ফেলা কঠিন� কখনো মন� হয়েছে কি
কখনো মন� হয়েছে কিছু জায়গা না থাকলেও কিছু ক্ষতিবৃদ্ধ� হত� না� আবার কখনো অনু্যো� এসেছ� মন� মন� যে কিছু চরিত্র আর� একটু জায়গা পেতে পারত� কিনা, কিংব� গল্প� কিছু সাবপ্লটে� অবদা� হয়ত� আরেকটু বেশি হত� পারতো। মাহরী� ফেরদৌসের গল্প� ম্যাজি� রিয়েলিজ� সবসময়� মোটামুটি পরিচিত একটি উপাদান� বোঝা যায় এই উপন্যাসে লেখক চেয়েছেন এই জায়গায় আরেকটু খেলতে। যা� কারণ� লেখনী� দি� থেকে আগের মত� সাবলী� এই লেখায় নুনে� ব্যাবহার কোথা� কম, কোথা� একটু বেশি� ইতিবাচকভাবেই নিতে হচ্ছ� কারন এই সাহসটুকু করবা� মত সাহস লেখকের আছ� ভেবে ভালো লাগছে। সংগ্রহ� রাখা� মত একটি বই� লেখককে আন্তরি� ধন্যবা�!
এই শহ� একদি� জেগে উঠেছিল বহুকাল আগ� জলের আবরণ ঠেলে, রহস্যময় কো� এক দ্বীপে� মতো। জলের গভীরে, অগোচরে তাকে পিঠে কর� বয়ে নিয়� বেড়াচ্ছিল এক রুপকথা� মাছ।অধিবাসীদে� কেউই জানত� না সে কথা। তারা কেবল বেড়� উঠছি� নিজেকে প্রকাশ করবা� নিরন্ত� এক প্রকার দ্বিধা নিয়ে। হঠাৎ হঠাৎ নিজে� পরিচয় খুঁজ� পেতে তাদেরক� বারবার ফিরে যেতে হচ্ছিল বিগত দিনে� স্মৃতিসরণিতে� কখনো কখনো এই শহ� তাদে� কাছে ধর� দি� এক সুবিশা� ক্যানভাস হয়ে� নানাবি� রং হাতে দল� দল� সবাই তখ� আঁকত� শুরু কর� এই ক্যানভাস জুড়ে। তারপ� হঠাৎ একদি� সে� সুবিশা� ক্যানভাস ভর� উঠ� বিশৃঙ্খল সব রংয়ের বিন্যাসে� শহরে� অধিবাসীদে� অনেকেই একের পর এক মুখোমুখি হত� শুরু কর� ব্যাখাতি� সব অভিজ্ঞতার। এস� অভিজ্ঞতা� বেশিরভাগ� ছি� অস্বস্তি�, ভয়ে� কিংব� কখনো কখনো বিচ্ছিণ্ণতাবোধের� একসময় এসবে� কারণ হিসেবে তারা দায়ী করতে শুরু কর� এক� অপরকে। কে� কে� আবার ভাবল অন্যের উপ� আধিপত্� বিস্তারে� এইতো সুযোগ। শুভবোধ ধর� রাখা মানুষগুল� কোণঠাস� হত� হত� একসময় শুরু কর� দৃশ্� থেকে হারিয়� যেতে� অধিবাসীদে� কারো তখনো জানা ছি� না জলের গভীরে ধ্যানী মাছে� সন্তর্পন দীর্ঘশ্বাসের কথা। তাদে� জানা ছি� না মূলত প্যান্ডোরা� বাক্সে� মত� জলের গভীরে লুকোনো এক প্রাচী� লকার থেকে বেরিয়� পড়া এক রহস্যময় অন্ধকা� গ্রা� কর� নিয়েছ� গোটা শহর।
মাহরী� ফেরদৌসের উপন্যা� “জলজ লকার� বিষয়বস্তু � প্লট বিবেচনায� নি:সন্দেহ� দারু� � অভিনব। বিষয়বস্তু� সাথে ঝরঝর�-মেদহী� বর্ণনা কৌশলের কারণেই সম্ভবত পাঠক শুরুতে� অনায়াসে গল্পের ভেতর ঢুকে পড়ত� পারবেন এব� দ্রু� পৌঁছ� যেতে পারবেন শে� পর্যন্ত।
এই উপন্যাসে� ভূগো� লেখকের নিজে� তৈরি।তবু� অজস্� চেনা অনুষঙ্�, সংকট � নানাবি� ঘটনা পরম্পরার কারণেই সম্ভবত এই ভূগোলে� সাথে পাঠক একাত্ম হত� পারে সহজেই। চিরচেন� বাস্তবতা� সাথে লেখকের কল্পিত যাদুবাস্তবতা� সমন্বয়ট� যথার্থ হওয়ায� ঘটনাগুলোকে পরষ্পর বিচ্ছিন্� মন� হয� না�
বিষয়বস্তু� সাথে সঙ্গতি রেখে� লেখক সচেতনভাব� নির্মা� করেছেন প্রতিট� চরিত্র� প্রতিটি চরিত্রের ভেতর� যে� এই শহরে� একটা সাধারণ আদ� লক্ষ কর� যায়� শহরে� মত তারা সবাই কো� না কোনভাব� দ্বিধা � প্রতারিত হবার বোধে আক্রান্ত� চরিত্রগুলো� মধ্যবর্তী সংকটের বড� একটা অং� উঠ� এসেছ� দীর্� সব সংলাপে� ভেতর দিয়ে। আমার মন� হয� সংলা� যেমন লেখা� সাথে পাঠকের সংযো� বাড়ায� এক� সাথে সেখানে অনাকাঙ্খিত মেলোড্রামা তৈরি� একটা ঝুঁকিও থেকে যায়� এই উপন্যাসে লেখক অনেক ক্ষেত্রে� এই ফাঁদ� পড়লেও শেষমেশ উৎরে গেছে� সফলতার সাথে� এজন্� তাকে সাধুবাদ।
সাম্প্রতিক সময়� যারা সাহিত্� রচনা� সাথে যুক্� আছেন তাদে� অনেকের ভেতর� নতুন নতুন সব আঙ্গিক নির্মাণে� প্রবণতার পাশাপাশি একটা বিনির্মা� প্রবণতাও লক্ষ কর� যাচ্ছে� সাহিত্� রচনা� মত� সৃষ্টিশী� কাজে� ক্ষেত্রে এই ব্যাপারট� আমার খু� দরকারি মন� হয়। পুরন� আঙ্গিক বরাবরই নতুনদে� হাতে ভিন্� একটা ভাষা পায়� “জলজ লকার� উপন্যা� সেক্ষেত্রে বে� ভালো একটা উদাহরণ যা যে কো� পাঠককে� আগ্রহী কর� তুলবে।
‘জলজ লকার� নামট� বইয়ের প্রচ্ছদে� মতোই ডুয়াল টোনে�, বা দুইরঙা হিসেবে দু� ভিন্� অর্থের� চাইল� পুরো বইটা� অসরলরৈখি� গল্পের সাথে মিলিয়� নিয়�, একটা পূর্বানুমা� নিয়েও গল্পটাকে পা� কর� যায়� ঠি� তা� বিপরীতক্রমে, পুরো গল্পের পা� শেষে� পাঠকমাত্রই বিভ্রান্� হত� পারে� এই ভেবে- কারা, কে�, আর কী� বা এই জল� লকার� জম� কর� ছিলো? আস্ত একটা সমান্তরা� পৃথিবী, যা কি না আবার ত্রিকালদর্শী! এই মুহুর্তে� বর্তমা� যা হয়ে যায় অতী�, অথবা ভবিষ্যতে� যেসব সম্ভাবনা� পটভূমি উঠ� আস� তা তো পাঠকের বর্তমানকালের সাথে� মিলে যায়!
জল� লকার নিছক� রহস্� উপন্যা� নয�, কিংব� ম্যাজি� রিয়ালিজ� নামে� সাহিত্যকৌশলে� বাইর� বেরিয়� আস�, এক নতুনতর পা� অভিজ্ঞতা� মত কিছু, বল� যেতে পারে ইউনি� একটা দূর্দান্� ভাষি� কথনযাত্র�! বহুবিভাজনে�, বহুতলে�, বহ� আধারের বিচিত্� মানুষদের নিয়� যে বিশদ পরিসরে� আখ্যানের দিকে এগিয়েছে�- সে� পথ� মনোযোগী পাঠক তুমু� এলোমেল� রকমে� গোছানো এক যাত্রা করবে�; আল�-আঁধারি� হিসে� ছাপিয়� এক নিখা� কথনবিশ্বের পৃথক দৃশ্যশব্দচিত্রের আলাদ� আলাদ� মহল্লায়, যেখানে একমাত্� বস� কর�- গল্পের চরিত্ররা, আমরা অথবা ওরাই- এব� মূলত মানু�!
উত্তরসত্� যুগে�, সমকালী� সাহিত্যবাহানায� ‘জলজ লকারে� আমরা যে পথ� আমরা ঘুরত� থাকি, সেখানে কথাকার কী বলতে চেয়েছেন গল্প বলার ছল�, আম� যা দেখি, তুমি তা দেখো? সত্য� বলতে, জল� লকার পা� অবদি এই প্রশ্নের সর� উত্ত� দেয়াট� রীতিমত� অসম্ভব, কারণ বোধকরি তারা� হাসি, তালিসমানের ছা�, ডাক্তা� নভোর নভোযাত্রার স্থিরত� কিংব� আর� ‘যার�-তারা� এই গল্পজগতে� নামধারী তাঁদের অনেককে� হয়ত চেনা মানুষে� ছাপে খুঁজ� পাবেন। অন্যদিকে, যেসব চরিত্র আর কাহিনীকে মন� হব� অচেন� এক জগতে�, তাঁদের সন্ধান� পাঠক এম� আখ্যান থেকে বেরিয়� আসতে পারে� কই? এই পা� এক গোপন গল্পের সুলুকে সন্ধান তো দেয়�, একইসাথ� বুঝিয়� দেয় এম� এক রহস্�-সর� দ্বিধারই গল্পের বয়ানে� মত� আমাদের� বসতবাড়ি� আলসে-আলাপ� পাঠককে স্বাগত জানাতে� হয� এম� এক পা� অভিজ্ঞতায় যেখানে অন্ত� খু� বেশি স্বস্তির শ্বা� না এলেও, উপন্যাসে� জগতে� ভ্রান্তিপাশে নিজে� জায়গাটা খুঁজ� নিতে� পারেন।
ম্যাজিকা�, না কি সত্যানুসন্ধা� � এই উত্তরে� দিকে জল� লকার� আপনি আটকে� যেতে পারে� স্বেচ্ছায়�
"কে� এত কিছু ঘট� যাওয়া� পরেও আমাদের না বল� গল্পটা আমরা বলতে চা� কোনো নির্জন ঘর� বস�,তা� জানি না� তব� জীবন কেটে যায় স্মৃতি রোমান্থন � স্বীকারোক্তি� তীব্� আকাঙ্ক্ষায়।�" মাছে� পিঠে কাল্পনিক এক শহরে গল্প, গল্পের প্রোটাগনিস্ট তারা হলেও মন� হব� গল্পটা কিছুটা তালিসমানের, রিফা�,এঞ্জেল এম,তারা মায়ের কিংব� আমাদেরও। অদ্ভুতভাবে তারা� শহরে� সাথে আমাদের শহরগুলোর মি� আছে। সড়ক আন্দোল�, ফ্যাক্টরিত� আগুন, উদ্ধার কা� শে� হওয়ার পরেও একজনের আশ্চর্যজনক ভাবে ফিরে আস�, প্রতিদিনের গু�-খু*নে� ঘটনা� সাথে আমাদের শহরে� অনেক মিল। এখান� আমাদের অবস্থা� তালিসমানের মত�, আমরা রোজকার অন্যায�-অবিচার দেখে নিজে� মন� দগ্ধ হই কিন্তু আমাদের কিছু করার থাকে না� গল্প� আছ� এঞ্জেল এম, যাকে খু� পরিচিত কোনো চরিত্র মন� হব�, যে ক্ষমতা� দাপট� যা ইচ্ছ� করতে পারে� আমরা কিছুটা শিমন চাচা� মতোও, নিজেদে� মধ্য� লালন কর� আদর্� দিয়� শে� পর্যন্� টিকে থাকত� পারি না, আমাদের হেরে যেতে হয� ক্ষমতা� কাছে।অপরাধ না করেও শুধুমাত্� ক্ষমতা� বল� হত� দেখি ইমতিকে।গল্পে আছ� তারা মায়ের বল� মি�, আছ� বিড়াল � কুকু� এব� চাঁদ, নক্ষত্� � সূর্� নিয়� অসাধার� এক গল্প, আছ� জাদু বাস্তবতা� পুরো বইয়ের মধ্য� কাহিনী গুলো বুঝত�, ধরতে একটু বে� পেতে হয়েছে� গতানুগতি� উপন্যাসে� বাইর� গিয়� লেখা একটা গল্প বলতে হবে। পুরো লেখায় আছ� একটা মেলানকলি� ভাব। সব চরিত্র নিজেদে� মধ্য� এক�, কিংব� নিজেদে� খুঁজেই যাচ্ছে যেমন আমরা নিজেদে� খুঁজ� রোজ। তারা মায়ের বল� জীবন নিয়� দর্শ� আমার বে� ভালো লেগেছে, "ঝড�, ঝঞ্ঝ�, আগুন, বিদ্যু�, বৃষ্টি, বজ্র,আঘাত � বেদন� এই অষ্টধাতু দিয়� তৈরি আমাদের জীবনের দুর্ভেদ্� দেওয়াল। আমরা যত বেশি এগুল� সহ্য করতে পারব তত� দুর্বলতা কাটিয়� উঠতে পারব�" হয়ত� সারাজীবন আমরা সেটা� কর� বা করছি�
মাহরী� ফেরদৌসের লেখনী আমরা খু� পছন্� হয়েছে, ঘাটাঘাটি কর� জানলাম লেখিকা আগ� "একুয়া রেজিয়�" নামে লিখতেন� জল� লকার� লেখিকা প্রতিট� গল্প� মনস্তাত্ত্বি� বিশ্লেষণ� লিখেছেন।মানুষে� মনের গভীরে লুকিয়� থাকা আবেগ,মনের মধ্য� থাকা দ্বন্দ্ব সেখানে এতোই স্পষ্ট ছি� যে পড়ত� গিয়� নিজে� সাথে মি� পেয়েছি।
"ঠি� কব� আম� এই গল্পটা বলার জন্য অপেক্ষ� করছি,তা নিজে� জানি না� একবা� মন� হয�, আমার জন্মের� আগ� হয়ত� এই অপেক্ষ� শুরু হয়েছিল। আবার মন� হয�, খু� সম্ভবত সে� দিনট� থেকে আমার গল্প বলতে চাওয়া� আকাঙ্ক্ষ� শুরু, যে দিনটাক� আম� একবা� বা দুবা� নয�, বর� ভুলে যেতে চা� হাজা� হাজারবার�"
লেখিকা মাহরী� ফেরদৌস তা� উপন্যাসে� যাত্রা শুরু করেছেন এভাবেই� পুরো উপন্যাসজুড়ে আমার কাছে মন� হয়েছে লেখিকা নিজে� জীবনের টুকর� টুকর� ঘটনা তুলে ধরেছেন, কখনো কখনো সে� টুকর� অংশগুল� মিলে গিয়েছ� এক জায়গায়� প্রতিট� ঘটনা পাঠকের মন� আলোড়ন তৈরি করবে, পাঠক জানত� চাইব� সামন� কি হত� চলেছে। লেখিকা� সার্থকতা হয়ত� এখানেই, পাঠকের আকর্ষণ শে� অব্দ� ঠি� একইরকম থাকবে।
লেখনী নিয়� যদ� বল�, ব্যক্তিগতভাব� তা� লেখাগুলো ভীষণ সহ� এব� সাবলী� মন� হয� আমার কাছে� শব্দের বাহুল্যত� এব� ত্রুটি নে� বললে� চলে।এছাড়া� লেখিকা যে শহরে� গল্প তুলে ধরেছেন, সে� শহ� আপনা� আমার চেনা পরিচিত শহর। এই শহরে ঘট� যাওয়া খু�, হত্য�, বিভিন্� অঘটন নিয়� পাঠক নতুন কর� ভাববে। শহরে� প্রতিট� অলিগলিতে জম� থাকা গল্প পাঠককে অজান� রহস্যে� সন্ধান� নিয়� যাবে � ফ্ল্যাপে উল্লেখ্য মি� এব� ম্যাজি� রিয়েলিজমে� ধাঁচ যেমনটা আশ� করেছিলাম তা� তুলনায� কম মন� হয়েছে� নতুন পাঠক কিংব� রিডার্� ব্লক কাটাতে চাওয়া পাঠকের জন্য বইটি দারু� উপভোগ্� হব� �
'জল� লকার' বইটা� না� আর প্রচ্ছদে� দিকে ভালোভাবে তাকালে ভাবায়, এম� নামকরণ করলে� কেনো? লেখিকা কি বলতে চাচ্ছে� তা� লেখা� মাধ্যমে–ইন্টারেস্টি� না�!
সাধারণভব� ভাবল� দেখা যায়, জল� আটকা পড়া কিছু গভীরে ভেসে বেড়াচ্ছ� তীরে� খুঁজে� অস্তিত্ব উদ্ধার�! আমাদের জীবনের অস্তিত্বটা ভেসে বেড়াচ্ছ�, অতীতে� গল্পগুলি বিশ্লেষণ কর� বর্তমানে ভেসে ভবিষ্যতক� আঁকড়ে ধরার চেষ্টায়� যাতে রয়েছে বিষন্নতা, বিচ্ছিন্নত�,একাকিত্ব� ভরপু� ছায়াক� পিছু ছাড়িয়ে এগিয়ে যাওয়া� প্রচেষ্টা।
সমাজের প্রত্যেক মানব-� কি তা� নিজস্ব লকার� বন্দী নয� কি? যে-� লকার� তারা বন্দী কর� রাখে নিজে� যত গল্প, সংগ্রা�, হারন� টুকর� স্মৃতিকে আঁকড়ে ধর� সামন� এগিয়ে যাওয়া� শক্ত�!
জল� লকার বইটা আসলে তেমন� একটা বই যেটা আম� পড়ত� চা�, দীর্� আলাপ করবে� কিন্তু ছোটো বাক্যে আর উপমা ভর কর� সেটা� রে� থেকে যাবে বহুদিন� লেখিকা প্রোটাগোনিস্টে� ভাবনার মধ্যদিয়� তুলে ধরেছেন আমাদের� কিছু সত্য, আমাদের শহরে� ঘট� যাওয়া কিছু নিত্যদিনকা� সত্য ঘটনা� লেখা যত� সামন� গড়িয়েছ� তত� মন� হচ্ছ�, কোনো দার্শনিক জীবনাদর্শে� গল্প শুনাচ্ছে�, যিনি অস্তিত্ব, জীবনের দর্শ�, সংগ্রামে ফুটিয়� তুলছেন মানুষে� প্রতিচ্ছবি�
বইটি� মাঝপথে আছ� এখনও, বইটি এতোই ভাবিয়� তুলছ� যে, সে-� ভাবনার কিঞ্চি� না লিখে পারিনি