['Ranadipam Basu' is a Bangladeshi writer, blogger and published author. He is well-known as a freethinker, rationalist and humanist. Till (2017) now he has published nine Bangla books, and many of his poems and articles have been published in magazines and journals. Some of his books, 'Yoga, Susthotay Jogcharcha' (Yoga for Better Health), 'Obomukto Goddorekha' (Free Essays on Freethinking and Literature), 'Utbochon' (Freethinker's Line), 'Khokar Janala' (Windows of Childhood), 'Tiplu' (Juvenile Story) and 'Carvaker Khonje Bharotio Dorshon' (Atheism, Carvaka and The Indian Philosophy), and `Carvaketara Bharotia Dorshon� (The concept of Jain, Bauddha, Nyaya, Vaisheshika, Samkhya, Yoga, Purva-Mimamsa, Vedanta in Indian Philosophy) have been well-received and are popular Bengali books on literature, philosophy and rationalism.]
ভাবাবেগে আপ্লুত আর দশটা বাঙালি তরুণের মতোই ছাত্রজীবনের মধ্যলগ্ন� ছড়�-কবিত� দিয়ে হাতেখড়� হলেও কব� কিংব� লেখক হয়� ওঠবো এমনট� ভাবনায় ছিলো না কখনোই। শখের বশ� লেখা কবিত� বিভিন্� দৈনি� পত্রিক� � ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হত� থাকল� লেখালেখি� ইচ্ছেটাও পল্লবি� হত� থাকে সমান-সমান্তরালে� কিন্তু কর্মসূত্রে দেশে� বিভিন্� প্রত্যন্� অঞ্চলে ছোটাছুটি এব� দীর্ঘকালী� অবস্থিতি � অবহেলা� কারণ� যাবতী� লেখাসুদ্� ডায়েরিগুলো হারিয়ে তখনই মাথা� আস� লেখা সংরক্ষণে� তাগিদ। নিজে� লেখা নিজে� কাছে তো সন্তানতুল্যই� তখনো আধুনিক তথ্যপ্রযুক্ত� নাগালে ছিলো না বল� সে� বিবেচনায় হাতে� কাছে যথাসাধ্য সংরক্ষিত পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত কবিতাগুল� নিয়ে� প্রথ� কবিতাগ্রন্থটির জন্ম হয় 'অদৃশ্য বাতিঘর' (২০০৬)� অতঃপ� আপাত ঢাকাবাসী হয়� অন্তর্জালি�-জগতে� সুবিধা� আসা। ইচ্ছেখুশ� পঠ�-পাঠন আর অধ্যবসায়ের সুযো� পেয়ে যো� হল� লেখালেখি� বহুমাত্রিকতা� নিজেকে বিস্তা� এব� এক� সাথে বিভিন্� কমিউনিটি ব্লগ � ফোরামে সক্রিয় পদচারণা। সে� ধারা� লেখালেখি� সমপরিমাণ� না হলেও সমান্তরালে হত� থাকে এক� এক� বিভিন্� গ্রন্থের ধারাবাহি� প্রকাশ� শিশুতো� ছড়ার বই 'তি� দশ� তেরো' (২০০৮), কিশো�-কবিতার বই 'খোকা� জানালা' (২০০৮), মনোদৈহিক স্বাস্থ্� � সচেতনত� বিষয়� যোগব্যয়ামে� ওপ� প্রয়োজনী� তথ্য � তত্ত্বসমৃদ্ধ ব্যবহারি� গ্রন্থ 'ইয়োগ�, সুস্থতায় যোগচর্চা' (২০১০), মুক্তচিন্ত� � সাহিত্� বিষয়� প্রবন্�-গবেষণা গ্রন্থ 'অবমুক্� গদ্যরেখা' (২০১১), পাঠক-ভাবনায় বিচিত্রত� বিষয়� যুক্তিবো� চারিয়ে দেয়া� ব্যতিক্রমী গ্রন্থ 'উৎবচ�' (২০১২), শিশু-কিশোরদের বিচিত্� আবেগানুভবে� মনস্তত্ত্বকে উপজীব্� কর� কিশো�-গল্পগ্রন্থ 'টিপল�' (২০১৩), ছো�-ছো� চতুষ্পদী প্রণয়মূল� কবিতাকণা� সংকল� 'চতুষ্পদী কষ্টগুলি' (২০১৪), এব� সর্বশে� প্রাচী� ভারতী� দর্শনে� একমাত্� জড়বাদী তথ� বস্তুবাদী দর্শ� � গোষ্ঠি চার্বা�-সম্প্রদায়ক� নিয়ে বৃহদাকার গবেষণাগ্রন্থ 'চার্বাকে� খোঁজ� ভারতী� দর্শ�' (২০১৫)� ইতোমধ্যে অন্যান্য ভারতী� দর্শ� যথ� জৈ�, বৌদ্�, সাংখ্য, যো�, ন্যা�, বৈশেষি�, মীমাংস� � বেদান্� দর্শনে� ওপ� সম্পন্� কাজগুল� নিয়ে ফেব্রুয়ারি ২০১৭-তে চা� খণ্ড� প্রকাশিত হয়েছ� 'চার্বাকেতর ভারতী� দর্শ�' শিরোনামে� গ্রন্থ� আর �-সবকিছু� মূলত সে� পাঠক-সত্তাক� সামন� রেখে, লেখক হিসেবে যাঁর� আমার কৌতুহল � আগ্রহে� মূলবিন্দুত� থাকেন।
হাওড়-বাওড় আর জলার দে� নামে পরিচিত সুনামগঞ্জে� মরমীয়া সু� আর জল-হাওয়ায় বেড়ে ওঠ� মননে � মরমে লেগে আছ� পলিমাটির দাগ। চট্টগ্রা� বিশ্ববিদ্যাল� থেকে রসায়নবিদ্যায় সম্মানসহ স্নাতকোত্ত� ডিগ্রী (১৯৮৫) নিয়ে কর্মজীবন� একজন ব্যাংকার হিসেবে ক্ষুণ্নিবৃত্তি� দা� মেটাতে হলেও পঠ�-পাঠন-অধ্যয়ন� সর্বভুকই বল� চলে। বেঁচ� আছ�- এই অপরিশোধযোগ্য ঋণটুকু� প্রত� সর্বময় কৃতজ্ঞতা� স্মারক� আমার লেখালেখি� প্রেরণা। সমাজ-সংস্কৃতি-ভাবন�-দর্শনে মুক্তচিন্ত�, যুক্তি আর বিজ্ঞানমনস্ক থাকা� ঢালটুকুই এযাব� সম্ব� কর� এক অনিশ্চিৎ পথের যাত্রী� পূরণ হো� বা না-হো�, সামন� অঢেল স্বপ্ন� কেনন�, নিজেকে একজন স্বাপ্নি� ভাবত� ভালো লাগে, এটুকুই�
... প্রচলি� ভাবন�-স্রোতে� মধ্য� থেকে� ব্যক্ত�-মানুষে� চিন্তা-শৈলীতে স্বাতন্ত্র্য রয়েছে� ব্যক্তিবিশেষ� এই স্বাতন্ত্র্য বা ভিন্নত� এতোটাই যৌক্তি� যে, এক� অভিন্ন বিষয়ক� দেখা� ভঙ্গ� � আপতি� অবস্থানে� তা অনিবার্য পার্থক্য এন� দেয়� কখনো কখনো এই বৈচিত্র্যময় চিন্তারেখা এতোট� ব্যতক্রমী � প্রশ্নপ্রব� হয়ে ওঠ�, তা আর প্রচলি� ধারণ� বা ভাবনাস্রোতের অনুষঙ্� হয়ে থাকত� পারে না� ক্ষেত্রবিশেষ� বিপরী� স্রোতে� যাত্রী হয়ে ওঠে। এটাকেই মুক্তচিন্ত� বা চিন্তা� স্বাধীনত� বল� যেতো� কিন্তু চিন্তা� কো� দৃশ্যমান সত্ত� নে� বল� অপ্রকাশি� চিন্তা� আসলে কো� কার্যকরিতা� নেই। ভাষা, চিত্�, শব্দ বা সু� ইত্যাদ� ইন্দ্রীয়গ্রাহ্� মাধ্যম� চিন্তা� প্রকাশ ঘটাত� হয়। কিন্তু চাইলেও তা সবসময় সম্ভ� হয়ে ওঠ� না বিভিন্� বিপত্তিগ� কারণে। এই প্রকাশের স্বাধীনতাকেই আমরা বল� চিন্তা� স্বাধীনতা। তব� অপ্রকাশি� চিন্তাকে অস্তিত্বহী� বলাটাও অযৌক্তিক হবে। কেনন� চিন্তক ব্যক্তির অদৃশ্য মননকোষ� সত� সঞ্চারমা� অসংখ্য ভাবন�-স্রোতে� জারণ-বিজারণ ক্রিয়ার ফলাফলই তা� নিজস্ব চিন্তারেখা� প্রতিনিয়ত তা প্রভাবিত হচ্ছ� অন্যান্য চিন্তাস্রোতে� সাথে, কোথা� বাধাপ্রাপ্� হচ্ছ�, কোথা� প্রাণি� হচ্ছ�, কোথা� থেমে যাচ্ছে, কোথা� আবার গত� পাচ্ছে� এই যে চিন্তা� অনিবার্য অভিঘাত, তা� উপ� ভিত্তি করেই ব্যক্ত� তা� চিন্তাজগতে এগিয়ে যায়, থেমে যায়, এব� কখনো বা পেছন হাঁটে।
ব্যক্তির এক� চিন্তা কখনো� সমাজ� বা জনগোষ্ঠিতে কো� প্রভাব ফেলে না, যতক্ষণ না তাঁর কর্মকাণ্ডে� মাধ্যম� চিন্তারাজি� প্রকাশ ঘটে। সৃজনশী� ব্যক্তির� অপ্রকাশে� ভা� সইতে পারে� না বল� তাঁর� তাদে� ভাবনারাশিক� কো� না কো� মাধ্যম� প্রকাশ করতে উদ্যোগী হন� যিনি লিখি� ভাষা� মাধ্যম� তা প্রকাশ করেন তাঁক� আমরা লেখক-সত্ত� নামে আখ্যায়ি� করি। এই লেখক-সত্ত� যাকে উদ্দেশ্য কর� তাঁর ভাবনাগুল� প্রকাশ করেন তিনি হলেন চিন্তাশী� পাঠক� এই লেখক-পাঠক মিথষ্ক্রিয়া� মাধ্যমেই জগতে� যাবতীয় চিন্তারেখা� পরিবৃত্তায়ন ঘটতে থাকে, হত� থাকে চিন্তাপরিধির পর্যায়ক্রমি� বিস্তার। তা� পরবর্তীতে কো� ভাবন� গৃহি� হো� বা না-হো�, চিন্তা বা প্রতিচিন্ত� প্রকাশের সুযো� থাকা মানব সভ্যতা� জন্যেই অতী� গুরুত্বপূর্ণ� এট� মৌলি� মানবাধিকার� সে� কবেকার প্রাচী� গ্রি� কব� ইউরিপিডি� (৪৮�-৪০� খ্রিস্�-পূর্বাব্�) চিন্তা� স্বাধী� প্রকাশের অনুসার� ছিলে� এই বল� যে- ‘চিন্তারাজিক� লুকিয়� রাখা� মধ্য� কো� মাহাত্ম্� নেই। তা প্রকাশ করতে যদ� লজ্জাবোধ হয�, তব� সে ধরনে� চিন্তা না করাই বো� হয� ভালো।� এতকা� পর� এসেও এই উক্তিটার চিরকালী� গুরুত্� একটু� ক্ষুণ� হয়নি।
ইউরিপিডিসে� ওই মহত্তম বাণী বুকে ধারণ কর� বিভিন্� সময়� লিখি� বে� কিছু রচনা থেকে গুটিকয� নির্বাচি� রচনা� সমন্বয়ে তৈরি এই সংকল�-গ্রন্থ ‘অথচ’। বিভিন্� লিটল-ম্যাগাজি� � অন্তর্জালি� বিভিন্� ফোরা�-ব্লগ� প্রকাশিত ‘মাথায� কত� প্রশ্ন আসে� জাতীয় লেখাগুলো� কয়েকটিক� একত্� গ্রন্থবদ্ধ করার এই প্রয়া� ভাবু� পাঠকের অপছন্দ হব� না বলেই বিশ্বাস। বিষয�-বৈচিত্রে� কারণ� রচনাগুলোকে মুক্তচিন্ত� � সাহিত্�-ভাবন� নামে মোটাদাগে দুটো ভাগে সূচিভুক্� কর� হলেও এখান� সংস্কা�, ধর্ম, দর্শ�, যুক্তিবা�, সাহিত্�, কবিত�, ছড়া, রাজনীতি, সমাজ ইত্যাদ� বিচিত্� বিষয়ে� অন্তর্ভুক্তি রয়েছে, যা থেকে পাঠক বিচিত্� রসাস্বাদনে� পাশাপাশি নতুন নতুন প্রশ্ন� ভাবি� হবেন বল� আশ� করছি�
পৃথিবীতে আসলে কো� জ্ঞানই চূড়ান্ত মৌলি� নয়। সমকালী� আমরা পূর্বলব্� জ্ঞানক� ধা� কর� সাথে কিছু নতুন জিজ্ঞাসা যুক্� কর� উত্ত� অন্বেষণে ব্যাপৃ� হই, সামন� আগাই� তা� সমকালী� জ্ঞানস্ত� হচ্ছ� চিরকালী� জ্ঞা�-জিজ্ঞাসা� ধারাক্রম মাত্র। এই জিজ্ঞাসা� যেমন শে� নে�, তেমন� শুরু� নেই। অথবা বল� যেতে পারে, সভ্যতা� উন্মেষকালে যে জ্ঞা�-জিজ্ঞাসা� মধ্য দিয়� মানুষে� যাত্রা শুরু হয়েছিলো তা সভ্যতা� সমাপ্তিকাল পর্যন্� চলতে থাকবে। আমাদের সমকালীনত� এই ধারাপথের� আপেক্ষিক অবস্থা�, যা� ঋণ রয়ে গেছে পূববর্তী জ্ঞা�-সাধকদে� সাধনার মধ্যে। � গ্রন্থের মাধ্যম� তাঁদের প্রত� আমার কৃতজ্ঞতা � ঋণ স্বীকা� করছি�
আশ� কর� এই গদ্যসংকল� ‘অথচ� পাঠককে কোনোভাবে হতাশ করবে না� সবার জন্য শুভকামনা রইলো� ... একনজরে...
গ্রন্থ : অবমুক্� গদ্যরেখা / Obomukto Goddorekha লেখক : রণদীপম বস� / Ranadipam Basu ক্যাটেগর� : গবেষণামূলক প্রবন্� সংকল� গ্রন্থ� প্রকাশ� : শুদ্ধস্ব� / Shuddhashar প্রকাশ : ফেব্রুয়ার� ২০১১, ঢাকা, বাংলাদেশ� প্রচ্ছ� : তৌহি� হাসা� পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৮� ISBN : 978 984 8837 65 8 ...