জীবনানন্দে� কবিতার এই লাইন সবার� জানা� কিন্তু প্রশ্ন হল�, হাজা� বছ� ধর� পৃথিবী� পথ� কে হাঁটেন? যিনি হেঁট� চলেন, তিনি কি কব�? হত� পারে� তিনি কবি। তিনি পাগল� তিনি ঐতিহাসিক� কিংব�, তিনি এক প্রেমিক। অবশ্� প্রেমি� বললে কেবল নারী� প্রেমে ডুবে থাকা পুরুষে� কথাই মন� হয়। কিন্তু, প্রে�, পরিণয়, পরিজ�, পুত্রক� পেছন� ফেলে� কে� কে� হেঁট� যান। হেঁট� চলেন পৃথিবী� পথে। কেনন�, পৃথিবী� জন্য� তাঁদের প্রেম। মানুষে� জন্য, প্রাণীকুলে� জন্য� প্রেমে� বার্তা নিয়� হেঁট� চলেন তাঁরা।
কপিলবস্তুর শাক্� বংশে তাঁর জন্ম, পিতা শুদ্ধোদন� জন্মলগ্ন� মাতৃবিয়োগ� তিনি বেড়� উঠেছিলেন আপ� মাতৃষ্বস� (মাসী) প্রজাবতী� কাছে� যা� আরেক না� গৌতমী� পিতৃদত্ত সিদ্ধার্� নামে পরিচিত রাজকুমার, তা� গৌতম নামে� পরিচিত�
ক্ষত্রিয়ে� কর্তব্� অস্ত্রধারণ� অথ� অস্ত্রবিদ্ধ্যায় পারদর্শী হয়ে� তাতে কো� আগ্র� নে� সিদ্ধার্থের। রাজ্যশাস�, সিংহাসনে� প্রত� উদাসীন। নারী� প্রত� আগ্র�, কৌতূহল আছ�, কিন্তু তাঁর শয্য� শূন্যই থাকে� অতঃপ� বিবাহ। প্রে�, কা�, পত্নী সহবাস। ঝড়ে� মত� কেটে যাওয়া দিন। পুত্রলাভ� চারদিক� সুখে� হাওয়া� কিন্তু সিদ্ধার্থে� মন� স্বস্ত� নেই।
অতঃপ� এক আষাঢ়ী পূর্ণিমা� রাতে, সারথ� ছন্দকে� সাহায্যে প্রিয় অশ্ব সুজাতক� নিয়� বাড়� ছাড়লে� তিনি�
�. � কাহিনী আমাদের সকলে� জানা� কিন্তু কেমন ছি� সে সময়ের ভারতবর্ষ? কেমন ছি� সে সময়ের কপিলবস্ত�? মহারাজ শুদ্ধোদন কেমন ছিলেন। সক� রাজপরিবারে� অভ্যন্তর� নোংর� রাজনীতি থাকে� শাক্� বংশে তা কি ছি� না?
ছিল। সব� ছিল। আর তা কেমন ছি�, তা নিয়েই দ্বৈপায়নে� এই উপন্যাস। উপন্যাসে� শুরু, সিদ্ধার্থে� অষ্টাদ� বর্ষ বয়সের কাছাকাছি সময় থেকে� রজ্জুবদ্� এক মূ�, বধির শিশু� দুর্দশ� দেখে তাঁর করুণার উদ্রেক থেকে� অতঃপ� লেখক দেখিয়েছেন সিদ্ধার্থে� শে� কৈশো� আর প্রথ� যৌবন� তাঁর চারিপাশ। সে সময়ের ভারতবর্ষ�
গৌতম বুদ্ধক� নিয়� হয়ত রচিত হয়েছে অনেক বই� কিন্তু চা� খণ্ড� প্রায় বারশ� পাতা� এম� মহাকাব্য বাংল� ভাষায় আর কে� রচনা করেননি, যেমনটা করেছেন দ্বৈপায়ন। বাংল� ঐতিহাসিক উপন্যাসে দ্বৈপায়� এক অনন্� নাম। সে� তিনি দেখিয়েছেন মানু� সিদ্ধার্থকে। সে� সঙ্গ� তাঁর পারিপার্শ্বিকতাকে। এক গভী� অন্তর্দৃষ্টি দিয়� লেখক উপলব্ধ� করেছেন সুদূ� অতীতকে।
গৃহত্যাগের পর কুমা� সিদ্ধার্থে� পথ চলার শুরু� তখ� আর তিনি সিদ্ধার্� নন� তিনি গৌতম, কেবল� গৌতম� তিনি হেঁট� গেছেন। পরনে কষায� বস্ত্র, মুণ্ডি� মস্ত� সন্ন্যাসী� কখনও কারো গৃহে আশ্রয় নিয়েছেন, কখনও কো� আশ্রমে� শুনেছে� বিভিন্� ধর্ম কথা। ছুটে গেছে� এক রাজ্� থেকে অন্য রাজ্যে� দেখে� জীবন বাস্তবতা, শুনেছে� ধর্মের জটিল কথা। শিখেছে� সাধন পদ্ধতি� কিন্তু মন শান্� হয়নি।
সিদ্ধার্থে� জন্মলগ্ন� কৌন্ডিণ্� নামে এক তরুণ জ্যোতিষী ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সংসারী হয়ে� গৌতম সন্ন্যাস গ্রহ� করবেন। কিন্তু তাঁর জ্যেষ্� জ্যোতিষীরা সমর্থন করেননি তাকে� কিন্তু বাক্যদান করেছিলেন যে কৌন্ডিণ্� সঠিক প্রমাণিত হল� তাঁর� কিংব� তাদে� পুত্�-পৌত্� তাঁর সঙ্গ� হবে। হয়েছিল। সে� ছয� জ্যোতিষী� মধ্য� চারজনে� পৌত্�, কৌন্ডিন্যক� সঙ্গ� নিয়� সিদ্ধার্থে� সন্ধান� বেরিয়েছিলেন� যাকে পেয়েছিলেন, তিনি গৌতম�
�. উপন্যাসে� চতুর্থ খণ্ড� প্রধান হয়ে দেখা দিয়েছ� একটি চরিত্র� তিনি আনন্দ। সম্পর্কে সিদ্ধার্থে� ভা�, খুল্লতাত অমৃতদৌনে� পুত্র। ছেলেবেলায় একত্রে বেড়� উঠছিলে� তাঁরা। বোহেমিয়ান আনন্দ। স্ত্রীলা� তাঁর হয়ন�, কিন্তু সংসারে আটকা পর� গেছেন। মাতামহ ছিলে� গ্রামপতি� এখ� সে� দায়িত্ব� নিয়েছেন তিনি�
নিজে� ধর্ম প্রচার করছে� গৌতম� বাঁধ� আসছে� কেনন� তাঁর ধর্ম� জাতিভে� নেই। নে� যাগযজ্ঞ। প্রেমে� বানী শুনে বুদ্ধে� শরণে আসছে প্রচুর মানুষ। ভিক্ষু সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠ� হয়েছে� ছড়িয়� পড়ছ� ভারতের দিকে দিকে� গৌতম পথ হেঁট� চলছেন। কখনও � রাজ্�, কখনও সে রাজ্য। আনন্দক� তাঁর বড� প্রয়োজন� বারবার ডেকে পাঠিয়েছেন� শেষে এসেছ� আনন্দ।
যখ� গৌতমের ধর্ম প্রসার লা� করছে, গণিক� থেকে রাজন্য তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহ� করছে�, তখ� ভিক্ষুদে� মাঝে� ঢুকে পড়েছে ক্ষমতা� লোভ। ওদিক� ভারতের রাজনীতিতে আসছে পরিবর্তন� সে সবের খব� জানে� আনন্�, জানে� গৌতম� সঙ্ঘকে বাঁচানোর কা� নীরব� কর� চলেন আনন্দ। এমনক� গৌতমের ত্রুটি ধরিয়ে দিতে� তাঁর বাঁধ� না� যেখানে ভিক্ষুদে� হওয়ার কথ� অপার্থিব, সেখানে গৌতমের সবচেয়� কাছে� মানুষট� সবচেয়� বেশি সাংসারিক�
এখান� এস� চমৎকার একটা ছব� এঁকেছে� ঔপন্যাসিক। গৌতমের দিব্যত� কিংব� অপার্থিব ভাবে� সমান্তরালে দাড় করিয়েছে� আনন্দে� বাস্তবতাকে� কখনও কখনও তা� আনন্�, গৌতমের চেয়েও উজ্জ্ব� হয়ে ওঠেন�
সে� সঙ্গ� থাকে বৌদ্� ধর্মের অনেক কথা। বুদ্ধে� আলাপ� মগধে� রাজা বিম্বিসারক� বন্দী কর� সিংহাস� দখ� করেন তারই পুত্র। সে চক্রান্ত� ভিক্ষুদে� কে� কে� যে জড়ি� নন, এম� না� গৌতম কি করবে�?
আনন্� জানে, সময়ের সাথে পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী� গৌতম কেবল পথ প্রদর্শক, কো� কিছু� নিয়ন্তা নন� তা� তিনি কেবল হেঁট� চলেন� প্রেমে� বানী নিয়� যা� দ্বারে দ্বারে� সঙ্গ� হাঁটেন আনন্দ। আসলে, তথাগ�-� ভ্রম� আজ� শে� হয়নি। তিনি হাজা� বছ� ধর� হেঁট� চলেছেন�