ট্রাপিজে� খেলা দেখেছে�? তাতে এক দি� থেকে অন্যদিকে উড়ে যায় খেলোয়াড়� মাঝখান� অপেক্ষ� কর� থাকে অসংখ্য মানুষে� উৎকণ্ঠ�, চো�-ধাঁধান� আল�, অপার শূন্যত�, আর তারও নীচে মৃত্যু! এই বই� এক ট্রাপিজ। এত� এক প্রান্তে আছ� ২০১৮ সালে� ঘটমা� বর্তমান। মূলত নজরদার� করেই প্রাইভেট ডিটেকটিভ তুর্বস� রায়ের পে� চলে। তা� প্রথ� ক্লায়েন্ট ছিলে� চন্দননগরের বাসিন্দা দেবাশি� গুহ। ইতিহাস নিয়� গভী� পড়াশোনায় আসক্� দেবাশিসে� সঙ্গ� তুর্বস�'� সম্পর্কট� বন্ধুত্ব� স্তর� পৌঁছ� গেছিল। সে� দেবাশি� তুর্বসুক� একটা অস্পষ্� ছব� হোয়াটসঅ্যাপ করেছিলেন� তারপরে� বীভৎসভাব� হত্য� কর� হয� দেবাশি�-কে� স্বাভাবিকভাবেই পুলিশি তদন্তে জড়িয়� পড়ে তুর্বসু। আর তখনই বোঝা যায়, এক বিশে� কারণ� তুর্বস�'� কাছে পৌঁছোত� চাইছিলেন দেবাশিস। কাহিনি� অন্য প্রান্তে আছ� ঊনবিংশ শতাব্দী� শে� দশকে� কলকাতা� সেখানে চিনেপাড়ায� একটি মৃতদেহের বুকে এক আপাত-দুর্বোধ্� চিহ্� দেখে চিন্তিতভাব� পুলিশক� খব� দে� তরুণ গণপত� চক্রবর্তী� পুলিশে� তরফে তদন্তে নামে� আরেক তরুণ� ডিটেকটিভ প্রিয়না� মুখোপাধ্যায়� শব-ব্যবচ্ছে� করতে গিয়� প্রিয়নাথে� সঙ্গ� আলাপ হয� লন্ড� থেকে আস� এক রহস্যময় তরুণের, যা� না� সাইগারসন মোহেলস� কনসাল্টি� ডিটেকটিভ! এদিক� গণপত�'� কা� থেকে এই মৃত্যু� কথ� শুনে চঞ্চ� হয়ে ওঠেন তাঁর বন্ধ� তথ� কলকাতা� প্রথ� প্রাইভেট ডিটেকটিভ তারিণীচর� রায়� �'দি� পরেই, এঁদে� সবার সামন�, করিন্থিয়া� থিয়েটার� মৃত্যু হয� দু� যাদুকরের! ঘনিয়ে ওঠ� সে� যাদু� খেলা, যা� শেষে সাফল্যের পাশাপাশি অপেক্ষায� থাকে মৃত্যু� তারই না� সূর্যতামসী! ভালো কথ�, পুরোনো কলকাতা� বুকে ওই চরিত্রদে� চিনলেন তো? তাঁদের মধ্য� তারিণীচরণে� কথ� বিশেষভাব� উল্লেখযোগ্�, কারণ তিনি তুর্বস�'� পূর্বপুরুষ... এব� এই কাহিনিতে তুর্বসুর প্রবেশের প্রধান কারণ� তারপ� কী হয�? সোনাগাজি� গল� থেকে বড়োলাটে� প্রাসা�, সেদিনে� লন্ডনে� ইস্ট এন্ড থেকে আজকে� চন্দননগর গ্রন্থাগার� এই সর্পিল � পিচ্ছি� পথ বেয়� কি পৌঁছোন� যায় সত্যের কাছাকাছি?
এই বইয়ের ভালো দি� কী-কী? প্রথমত, বাস্তব � কল্পনা� চরিত্রদে� একসঙ্গ� আনার 'ক্রস-ওভার' নামক পদ্ধতিটি ইংরেজি সাহিত্যে বহুলপ্রচলি� হলেও বাংলায� তা অত�-বিরল� লেখক এর আগ� তাঁর "তোপসের নোটবুক" নামক বইয়েও এই পদ্ধতিটি প্রয়ো� করেছিলেন� কিন্তু এই বইয়� তিনি সে� প্রক্রিয়াটিকে আর� দক্ষ, নিপু� � পরিণতভাব� ব্যবহা� করেছেন� এট� নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়� দ্বিতীয়�, 'পিরিয়� পি�'-এর ক্ষেত্রে সবচেয়� গুরুত্বপূর্ণ বিষয� কী? অনেকেই মানবেন যে তথ্যনিষ্ঠা� পাশাপাশি সে� বিশে� আবহটিক� ফুটিয়� তোলা� গুরুত্� এক্ষেত্র� অপরিসীম। 'সূর্যতামসী'-তে লেখক সে� কাজে ষোলো আন� সফ� হয়েছেন। স্পষ্ট� মন� হয়েছে, যে� হেমে� রায়ের গল্প� পড়া ব্ল্যা�-আউটে� কলকাতা� মতোই এই বইয়ের মাধ্যম� আমরা পৌঁছ� গেছি সে� বিশে� স্থা� � কালে� তৃতীয়�, লেখকের গদ্য নির্ভা�, স্বচ্ছন্� এব� অত্যন্� গতিময়� ফল� গল্প� যত মোচড়ই আসুক না কে�, তাদে� মোকাবিলা করতে অসুবিধ� হয়নি। পরিবেশিত রহস্যটিও তেমন� আকর্ষণীয় এব� ঘোরালো ছিল। সবমিলিয়� বইটা প্রায় আনপুটডাউনেবল গোত্রের। চতুর্থ�, পুরোনো কলকাতা� ইতিহাস এব� যাদুবিদ্যা নিয়� পাঠকদে� মন� আগ্রহে� সঞ্চার করতে পুরোমাত্রায় সফ� হব� এই লেখাটি� তারই সঙ্গ� মিশে থাকব� আর� অনেক কিছু নিয়� জন্মান� কৌতূহল�
এই বইয়ের খারা� দি� কী-কী? �) যে কাজগুল� টীকা/অ্যানোটেশনের মাধ্যম� কর� উচিত ছি�, সেগুলো এখান� মূ� টেক্সটের মধ্য� ঢোকানো� ফল� ভয়ানক ইনফো-ডাম্পি� ঘটেছে। এত� পাঠক বিভ্রান্� হন এব� রসচ্যুতি ঘটে। এক্ষেত্র� লেখকের দ্বারা সম্পাদিত 'কলকাতা� রাত্রি রহস্�'-কে মডেল হিসেবে বিবেচন� কর� উচিত ছিল। আশ� রাখি যে পরবর্তী পর্ব� আমরা এই ধরনে� তথ্যভারে ভারাক্রান্� হব না� �) কাহিনিটি দু� সময়কালে দু'টি হত্যারহস্য-� সমাধান করতে চেয়েছে। এদের মধ্য� ঊনবিংশ শতাব্দী� রহস্যটির সমাধান রীতিমত� অ্যান্টি-ক্লাইমেটিক� কিন্তু লেখক এক্ষেত্র� লিন্ডস� ফে'� 'দ্� গড� অফ গথাম'-এর মডেলকে অনুসরণ করেছেন বল� চলে� যেখানে প্রদীপে� নীচে জম� থাকা অন্ধকারে� প্রত� দৃষ্টি আকর্ষণ করাই মুখ্য। কিন্তু একবিংশ শতাব্দী� হত্যারহস্যের সমাধান� হয়নি। কাহিনি� অনিবার্য দ্বিতীয় পর্বের জন্য আমাদের প্রস্তুত করার জন্য� লেখক এই পদ্ধতি ব্যবহা� করেছেন� এট� বুঝত� পারছি। কিন্তু এম� রুদ্ধশ্বাস আখ্যানের শেষে চাতকের মত� অপেক্ষায� থাকত� ভালো লাগে কারও?! �) গৌতম কর্মকারে� কিছু অলংকরণ দুর্ধর্ষ, কিন্তু কিছু অলংকরণ একেবারেই ছেলেমানুষি গোছের। একটি চরিত্রকে বারবার এমনভাব� আঁকা হয়েছে যা গল্পের অন্যতম প্লট-ডিভাইসকে প্রকাশ কর� দিয়� সাসপেন্স নষ্ট কর� দেয়�
বইটি� প্রচ্ছ� অসাধার�, সামগ্রিক মুদ্রণ� অত্যন্� চমৎকার� সব মিলিয়� বল�, এই বই পড়া মানে শুধু হুড়মুড়িয়ে এক প্রান্� থেকে অন্যত্� ধেয়� যাওয়া নয়। বর� মঞ্চের সামন� অন্ধকারে বস� যাদু দেখা� মতোই �-এক অভিজ্ঞতা� এক� উপভো� করুন� আর পরের শো-� টিকিটে� জন্য এখ� থেকে� বল� রাখুন। নইলে �-খেলা� শেষে কী আছ�, তা যদ� আর দেখা না হয�?
মূলত �.� স্টার। বে� আশাবাদী ছিলা� বইটা নিয়ে। বা� আশানুরূপ হয়নি। দুটো টাইমলাইন� কাহিনী এগিয়েছে� অতী� � বর্তমান। অতীতে� টাইমলাইন উনিশ শতকে� ব্রিটি� ইন্ডিয়াতে� বাংলার প্রথ� গোয়েন্দ� কাহিনী� লেখক প্রিয়নাথে� ডায়ের� থেকে উঠ� এসেছ� এই অংশটা। স্টে� ম্যাজি�, মানসিক বিকারগ্রস্তদের ওপ� বিভিন্� এক্সপেরিমেন্�, গুপ্তসঙ্�, সেসময়কা� কলকাতা� পুলিশি প্রক্রিয়া ভালোমত� উঠ� এসেছে। বর্তমা� সময়েও একটা কে� নিয়েই বর্ণিত যা অবধারিতভাবেই অতীতে� কেসটার সাথে সংযুক্ত। বইয়ের পজিটিভ দি� হল একটা ভালো ডিটেকটিভ উপন্যা� লেখা� চেষ্টা কর� হয়েছে, অযথা ইনফো ডাম্পি� হয়নি। যতটুকু ইনফো আছ� সেটুকু উপভোগ্য। ওয়ে� রিসার্চড রহস্যে� জালও দু� টাইমলাইনেই ভালোভাবে বুনা হয়েছে� লেখনশৈলী দারুণ।
নেগেটি� দি� হল টুইস্টগুলো সামান্� দুর্বল � প্রেডিক্টেবল লেগেছে� মন� হয়েছে তাড়াহুড়ো কর� ইত� টানা হয়েছে কাহিনীর। আর বর্তমানে� কেসট� অসমাপ্ত। হয়ত� পরবর্তী বইয়� সমাধান টানা হবে।
সবমিলিয়� যারা মিস্ট্রি/ক্রাইম জনরা� বই পছন্� করেন তারা বইটা পড়ে আশ� কর� যায় হতাশ হবেন না�
বইটা� ফ্ল্যা� উলটে দেখল� আপনি জানত� পারবেন এই মেনুতে আছ� উনিশ শতকে� কলিকাত�, গোপন ষড়যন্ত্�, সিম্বোলজ�, দুর্ধর্ষ চাইনিজ গুপ্তসঙ্�, ফ্রি ম্যাসন, একের পর এক নৃশং� হত্যাকান্ড এব� জাদুবিদ্যা� এতোগুল� দারু� মশলায় মাখানো এক সুস্বাদু রহস্যোপন্যাস আপনা� হাতে, তাতে আপনা� থ্রিলারগ্রাসী পাঠকমনের জিভে জল আসাট� স্বাভাবি�, কিন্তু তা� উপ� অনলাইন� ধুন্ধুমা� ব্র্যান্ডি� আর পাবলিসিট� দেখল� আশার পারদ বেড়� যায় আরও। কিন্তু কতোটুক� দিতে পারল� সূর্যতামসী? এক শতাব্দী আগেকার বিজ্ঞাপনের ঢঙ্গ� ব্যা� কভার� লেখা ‘অতী� রহস্যময় উপাদেয� ডিটেকটিভ উপন্যাস� এর বিশেষণ কতটা সার্থক হল�, নাকি বদহজ� হওয়ায� ভোজন শেষে উলটে দিতে হল� এই পাঁচমেশালি প্লট?
একবাক্যে সে উত্ত� খোঁজ� সহ� হব� না, তা� সে চেষ্টা করছি না�
সূর্যতামসীকে পুরদস্তু� গথিক মিস্ট্রি বল� চলে। তব� ভিক্টোরিয়ান এরা’র লন্ডনে� প্রশস্� রাস্তা, সুউচ্চ প্রাসা�, আর ধোঁয়াটে পাবে� বদলে সূর্যতামসী� প্লট এস� ঠেকেছে ১৮৯৩ সালে� ভারতবর্ষ�,, আর� ঠিকভাব� বললে - কলকাতা আর চুঁচুড়া� গলিঘুঁপচ�, চীনাপাড়� আর নিষিদ্� পল্লিতে। বইয়ের একটা অং� অবশ্� বর্তমা� ২০১৮’র টাইমলাইন� চলছে, তব� উনিশ শতকে� কলিকাত� বর্তমা� কলকাতাকে কাহিনী� ঘনঘটনায়, বর্ণনা� খুঁটিনাটিত� আর রহস্যময়তায় ছাপিয়� গেছে বহুগুণে।
বইটা� ফ্ল্যাপে কিছুটা ড্যা� ব্রাউনিয� কায়দায় লেখা আছ� মূ� কাহিনীটা বাদে বইয়� ব্যবহৃ� সক� স্থা�, স্থানি� ইতিহাস, গুপ্তবিদ্য�, চিকিৎসাবিজ্ঞান/জাদুবিদ্যা� খুঁটিনাটিস� বে� কিছু ঘটনা সত্য� মজার ব্যাপা� হল�, শুধু কাহিনী বা ঘটনা বাদে� বইয়ের কয়েকজ� প্রধান চরিত্র রক্তমাংসের ঐতিহাসিক ব্যাক্তিত্ব। যেমন গথিক কলকাতা� দু� (নাকি তি�?) প্রোটাগনিস্টের মধ্য� একজন হলেন প্রিয়না� মুখোপাধ্যায়, যাকে অভিজ্ঞ পাঠক চিনবেন প্রিয়না� দারোগা হিসেবে� উপমহাদেশের প্রথ� প্রকাশিত বাংল� গোয়েন্দ� কাহিনীগুলো� মাঝে অন্যতম ‘দারোগার দপ্তর� এর ট্রু ক্রাইম লেখাগুলো প্রিয়না� দারোগা� পুলি� জীবনের� কে� ফাইলস। আবার আরেক প্রোটাগনিস্ট হলেন ছন্নছাড়� গণপত�, যা� জীবনের ঝোঁক ম্যাজিকে� প্রতি। এই গণপতিই যে বাংলার অগ্রণী ম্যাজিশিয়ান গণপত� দ্� গ্রে�, জাদুকর পি.সি. সরকারে� গুরু, সেটা আমার মত� অনেক পাঠক� খেয়াল করবে� না ধরিয়ে দেওয়া� আগ পর্যন্ত। এরকম বে� কিছু ঐতিহাসিক চরিত্রকে খু� সুচারু ভাবে তাদেরও বইয়ের ঘটনা� জালে জড়িয়� ফেলা� জন্য লেখকের একটা ধন্যবা� প্রাপ্� থাকবে। তব� লেখক এই পর্যন্� এস� ক্ষান্� দে� নি, এইসব ইতিহাসের বেড়� ডিঙিয়� ইতিহাসের ফিকশনা� চরিত্রকে� টেনে এনেছেন গল্পে। সে ব্যাপারে বেশি বললে স্পয়লার হয়ে যাবে, তা� না বলি।
জনরা/সাবজনরায� আটকে ফেলা কতোটুক� ঠি� জানিনা, কিন্তু সূর্যতামসী আগাগোড়া একটা রহস্যোপন্যাস হিসেবে� মর্যাদ� পাবে আমার কাছে� বর্তমানে� হরেক রক� থ্রিলারে�/হররে� মাঝে একটা নিখাঁদ ডিটেকটিভ মিস্ট্রি বে� রিফ্রেশি� ছিলো� এখান� গোয়েন্দার� তদন্তে নেমে কিছুক্ষণ পরপর� রোমহর্ষক অ্যাডভেঞ্চার� জড়িয়� যায়নি, আবার হিরোয়িক ফাইট সিকোয়েন্স� জুড়� বসেন� পদ� পদ�, বর� একদম খাটি হুডানি� মিস্ট্রি� মত� রহস্যে� পেছনের রহস্� খুলে এসেছ� পরতে পরতে� বে� খাটন� কর� দাঁড� করান� একটা প্লটকে গল্পের বুনন� মোটামুটি ভালো� গাঁথতে পেরেছে� লেখক� তব� গল্পটা বহুলাংশে� প্লট ড্রিভে� থেকে গেছে, ক্যারেক্টা� ড্রিভে� হত� পারেনা� চরিত্রগুলো কিছুটা একমাত্রি� মন� হয়েছে� গথিক পার্টে� তারিণী, প্রিয়না� আর সাইগারসন - সবাইকে� কমবেশি সদ� সত্যসন্ধানী কান্ডারি� মতোই উপস্থাপন কর� হয়েছে,, তা� তাদে� প্রত� আকর্ষণটা যতটুকু হওয়� উচিত ছিলো ততটুকু হয়নি। সে� আকর্ষণ কেড়� নিয়� গেছে গঙ্গার ঘা� আর করিন্থিয়া� থিয়েটারের স্টেজে� গণপত� দ্� গ্রেট। চরিত্রগুলো সাদামাটা ভালো-খারা� না কর� আরেকটু ভার্সেটাইল করলে বাকিদে� প্রত� আকর্ষণটা যথায� হতো। আর বর্তমা� সময়ের প্রোটাগনিস্ট তুর্বসুর ক্যারেক্টা� ডেভেলপমেন্� আর্কটা সুন্দর, ওয়ে� হ্যান্ডেলড� বর্তমানে� এক দেশি প্রাইভেট ডিটেকটিভের কা� যে কমবেশি ডিভোর্� কে� নিয়েই হব�, সেটা� বিশ্বাসযোগ্য�
তব� প্রোটাগনিস্টের বিষয়ে একটা কথ� বল� প্রয়োজন, এক� কাহিনীতে একাধিক গল্প এক� সাথে চলতে থাকল�, দু� ক্ষেত্রে� প্রোটাগনিস্টের বিষয়ট� পরিষ্কার থাকল� ভালো হয়। যেমন বর্তমা� সময়ের প্রোটাগনিস্ট তুর্বসুর সাথে পাঠকের বোঝাপড়া হত� কোনো সমস্যা� হয়ন�, কিন্তু অতীতে একবা� তারিণী, আরেকবা� প্রিয়না�, আবার মাঝদিয়ে গণপত�, এব� এই তিনে� উপ� দিয়� আবার সাইগারসন - এতোগুল� পজিটিভ প্রটাগনিস্� চরিত্র এল� পাঠক খে� হারিয়� ফেলত� পারে� সে� ব্যপার� আর� একটু সতর্কত� অবলম্ব� করলে ভালো লাগতো।
ইতিহাস নিয়� লিখত� গেলে, তা� আবার এরকম পুরদস্তু� গথিক সেটি� � ঐতিহাসিক চরিত্রদে� নিয়� লেখা বইয়ের জন্য কম পড়াশোনা করার সুযো� নে�, বইয়ের শেষে লেখকের সহায়ক গ্রন্থের ফিরিস্তি দেখল� বোঝা যায় লেখক একদম ফাঁক� দে� নি� লেখক নিজে বে� ভালো নন-ফিকশ� রাইটার, তা� তা� রিসার্� আর পাঠকের কাছে তথ্যের উপস্থাপনটা� বে� স্বতঃস্ফূর্ত� কিন্তু কতটুকু বিদ্যে লেখক তা� লেখা দিয়� পাঠককে জানাবে�, তা নিয়� হয়ত� ভাবা� বে� কিছু জায়গা আছে।
সে বিষয়ে বলার আগ� লেখকের গদ্য নিয়� বল� উচিত� সূর্যতামসী বইয়ের গদ্যভাষা ঝরঝর�, মেদহীন। যতটুকু ভিজ্যুয়াল বর্ণনা প্রয়োজন লেখক ঠি� ততটুকু� দিয়েছেন, লেখা� সাথে গল্পের গাঁথুন� খু� ভালোভাবে এগিয়েছে� অন্যান্য বইয়ের তুলনায� চাপ্টারগুল� ছোটছোট, তা� পাঠক� তরতরিয়ে পড়ে ফেলত� পারেন। প্রিয়না� দারোগা� ডায়েরী, সেকালে� গোয়েন্দ� তারিণীচরণে� ডায়রী, লেখকের দৃষ্টি থেকে তৃতীয় পুরুষে বর্ণনা আর বর্তমা� সময়ের প্রোটাগনিস্ট তুর্বস� নি� বর্ণনা- বইটা চারট� ভিউপয়েন্ট থেকে লেখা, যা প্রায় প্রত� চাপ্টারে পরিবর্তি� হয়েছে� দৃষ্টিকো� বদলে� সাথে সাথে ভাষা� পরিবর্তনটা প্রশংসনীয়, যেমন প্রিয়না� দারোগা� ডায়েরী সাধুভাষায় সেকেলে বর্ণনা, সেকেলে যতিচিহ্নের ব্যবহা� দেখা যায়, আবার তারিণী� ডায়রীতে বা লেখকের অতী� বর্ণনায় ব্যাবহারিক ইংরেজি শব্দের আধিক্য কম - যা আবার পরিপূর্ণ ভাবে আছ� বর্তমানে তুর্বসুর বর্ণনায়�
এই পরিবর্তনগুলো একদম যথাস� হলেও, একটা জিনি� সবগুলো চাপ্টারে� স্বমহিমায় বিদ্যমান, সেটা হল� এক্সপোজিশন, সোজা বাংলায� ব্যাখ্যা প্রদর্শন� এব� এই এক্সপোজিশন� হচ্ছ� এই বইয়ের দুমুখো ছুড়ি। কিছুক্ষণ আগ� লেখকের বিস্তর পড়াশোনা� প্রশংস� হচ্ছিল�, একটা হিস্টোরিকা� ফিকশনে সবার আগ� দরকা� পর্যাপ্ত রিসার্� এব� দ্বিতীয়তে প্রয়োজন সঠিক এক্সিকিউশন� হিস্টোরিকা� ফিকশ� অথবা মিথোলজ� বেজড ফিকশনে পাঠককে পর্যাপ্ত পরিমাণ তথ্য-ইতিহাস-পাতিহা� জানানোটা আবশ্যি�, সেটা না জানিয়� উপায়ও নেই। সে কারণেই রবার্ট ল্যাংড� সিম্বোলজির ফিরিস্তি শোনাতে গল্পের মাঝে ফ্ল্যাশব্যাক� চল� যা� তা� ক্লাসরুম�, বা অন্যান্য বইয়� সিধু জ্যাঠাগোত্রীয় জ্ঞানে� জাহাজীরা এস� পর্যাপ্ত তথ্য শিখিয়� পড়িয়� যা� পাঠককে�
এট� এই এক্সপোজিশন তখনই গল্পকে আর� তুখোড় কর� তোলে যখ� তা সঠিক জায়গায় কো� বিশ্বাসযোগ্য সংলাপে বিশ্বাসযোগ্য লোকে� কা� থেকে জানছ� পাঠক� এই বইয়েও তথ্য আর গল্পের পার্টনারশি� বে� কিছু জায়গায় দারু� কা� করেছ�, পাগলাগারদে�� সিকোয়েন্সটা অথবা করিন্থিয়া� হলের কাহিনী উল্লেখ্য� কিন্তু যখ� গল্পের প্রতিট� চরিত্র� কমবেশি জ্ঞা� ঝেড়� তা� এক্সপোজিশন সিকোয়েন্স ঝাড়তে থাকে, কিংব� লেখককে� বারবার তা� তৃতীয় পুরু� বর্ণনা� মাঝে দশাস� তথ্যের এক্সপোজিশন করতে দেখা যায়, তখ� পাঠকের কাছে গল্পের গাড়� বারবার ব্রে� কষছে এমনট� লাগত� পারে বইকি� পর্যাপ্ত তথ্য জানানো ছাড়াও এরকম এক্সপোজিশনের আরেক ধরনে� ব্যবহা� হচ��ছে খু� দারু� কো� তথ্য পাঠককে জানিয়� চমকে দেওয়া, চরিত্রের জ্ঞা�-গরিম� বোঝাতে � যেটা পড়ত� ভালো� লাগে তা অস্বীকা� করার উপায� নেই। কিন্তু শুধু চটকা� তথ্যের সাইজ যদ� দেড় পৃষ্ঠা পেরিয়� যায় তখ� পাঠকের বিভ্রান্� হওয়াট� অস্বাভাবিক নয়। আর� একটা বিষয� এখান� উল্লেখ্য, আম� বাংলাদেশ� না হয়ে পশ্চিমবঙ্গের কে� হল� হয়ত� স্থানগুলোর সাথে ব্যক্তিগ� পর্যায়ে কানেক্� করতে পারতাম� সেক্ষেত্রে হয়ত� ভ্রুকুটি কিছুটা কম হত� পারতো। ঢাকা নিয়� এম� বিশদ রিসার্� কর� একটা ফিকশ� পড়ত� যে বে� দারু� লাগত�, এই বই পড়ত� গিয়� বুঝেছি� ( ঢাকা নিয়� এম� কিছু দেখেছিলা� মাশুদু� হকের কাল্� থ্রিলা� ‘মিনিমালিস্ট� এর একটা অধ্যায়ে, ঢাকা� আহসা� মঞ্জিল থেকে ঐতিহাসিক হট এয়া� বেলু� ওড়ানো নিয়� দারু� একটা সিকোয়েন্স ছিলো� )
আর নামকরণের বেলায়, জীবনানন্দে� কবিতার নামে নামকৃত এই বই আদতে� যে শুধু কবিতার নামকরণেই সীমাবদ্ধ না, কাহিনী� মাঝপথেই। তারপরও বইয়ের শুরুতে এব� শেষে জীবনানন্দে� পংক্তি, আর অধ্যায়ে� নামকরণ� কবিতার না� ব্যবহা� করাট� দারু� মানিয়� গেছে�
সূর্যতামসী� বইটা� পেছনের কথাও একটু বল� উচিত� বইটা� বাঁধাই, প্রচ্ছ�, ছাপা বে� ভালো, প্রকাশনা বুকফার্ম এক্ষেত্র� প্রশংস� পাবে� তারা এস� বাদে� আর� একধা� বেশি করেছেন, বইয়ের শুরু� আর শেষে� ব্লার্� অংশটাতেও রঙিন আর্ট পেপা� ব্যবহা� কর� ইলাস্ট্রেশ� জুড়� দিয়েছেন, বইয়ের প্রোডাকশনক� অন্য একটা মাত্রা দিয়েছ� এটা। আর বইয়ের লেখা� ফাঁক� ফাঁক� গৌতম কর্মকারে� কালিতুলিতে আঁকা ডার্� এব� গ্রিটি আর্টওয়ার্� গুলো উপরি পাওন� ছিলো, উপন্যাসে� লেখা� ফাঁক� হঠাৎ দু� পৃষ্ঠা জুড়� কোনো টেক্সটবিহী� স্প্রে� আর্টওয়ার্� দেওয়াটা� একটা সাহসী পদক্ষেপ।
তব� এইখানে একটা বিষয� একটু বলতে চাইছ�, শিল্পী� আঁকা নিঃসন্দে� মুগ্� করেছ� কিন্তু কাহিনী� সাথে তা� অসামঞ্জস্যতা দেখে কিছুটা হতাশ� হয়েছি� শুরু� ছবির বর্ণনায় ১৮৯৩ এর গভী� রাতে পালক� কর� চায়নাটাউন� যাওয়া� দৃশ্যে� বর্ণনায় আমরা জানত� পারি চারিদি� ভয়ানক সুনশান, রাস্তা� ল্যাম্পপোস্ট ছাড়� কে� নেই। কিন্তু ইলাস্ট্রেশনে দেখা যাচ্ছে রাস্তা� দু� ধা� ভর্ত� লোকসমাগম� আবার তুর্বসুর দেবাশীষদার প্রথ� দেখা� দি� বর্ণনায় আছ� যে তুর্বস� বৃষ্টিতে কাপড� ভিজিয়� ফেলায় ধুতি শার্� পর� নিয়েছ�, কিন্তু ইলাস্ট্রেশনে তাকে দিব্যি শার্� প্যান্� পরাই দেখা যায়� এই ভিজ্যুয়াল ভুলগুল� আঁকিয়ের অনেস্ট মিস্টে� কিনা, নাকি তাকে দেওয়া নির্দেশনার অপর্যাপ্তত� তা জানিনা�
সবমিলিয়� সূর্যতামসী একটা পড়া� মত� বই, অবশ্যপাঠ্য কিনা সে বিচা� কর� সহ� নয়। হয়ত� এই বই না পড়ল� আপনা� পাঠকজীবনের অর্থ বৃথা হয়ে যাবেনা, কিন্তু পুরোনো দিনে� নানা� ঘটনায় ঠাসা একটা রহস্যোপন্যাস মি� করবেন। বাংলায� গথিক মিস্ট্রি উপন্যা� খু� বেশি নে�, তা� মধ্য� এট� একটা অন্যতম উদাহরণ হয়ে থাকব� নিশ্চি� � একটা ভালো শক্ত প্লটের রহস্যোপন্যাস পড়ত� চাইল� পড়ত� পারে�, কিংব� আমার মত� কোনো ফিকশনে� সাথে ননফিকশনে� একগাদা ফিরিস্তি শুনত� ভালো লাগল� পড়ত� পারেন।
অত� অত� অত� মৃদু স্পয়লার- বইটা� সিকুয়েল আসবে এরকম কো� আভাস ছিলোনা, কিন্তু বইয়ের শেষে খু� ভালোমত� আগামী বইয়ের ইঙ্গিত দেওয়া আছে। সিরি� হব� আগ� থেকে জানতাম না, তা� সেটা একটা চমকই ছিলো�
অনেক দি� রিভি� না লেখা� ফল, এট� নিয়� লিখত� গিয়� দেখি কিছু� মাথায় আসছেনা�
তব� এইটুকু বলবো অনেকদি� পর কো� থ্রিলা� পড়ে খু� মজ� পেয়েছি। বই শে� না কর� উঠ� যায়না এম� একটা বই সূর্যতামসী� তব� লেখক অনেক ইনফো ডাম্পি� করেছেন, যেগুলো অযথা লেগেছে�
মাথা� বারোটা বাজাতে আর রাইটারকে গালি দিতে যেমন বই দরকা� হয� এট� ঠি� তেমন বই� তব� বেশিদু� অবদি না� প্রথ� দু� চা� অধ্যায� অবদি� তারপ� আবার রাইটারের লেখা� প্রত� মুগ্� হওয়� ছাড়� উপায� নাই। লেখক যে খুবই পড়াশুনা করেন/করেছেন আর খুবই যত্নসহকারে সবকিছু� যোগসাজ� করেছেন এই ব্যাপারট� চিন্তা না করতে চাইলেও এমনিতে� চিন্তা� ভেতর চল� আসে। আর এসেই লজ্জ� দিয়� যায় এইটা বল� যে তোমা� দ্বারা হবেন�, তুমি পারব� এত খুটিনাটি বিষয� মন� রাখত�? পারব� এরকম কর� পড়ত�? এত ধৈর্য্� না� তোমা�, হবেওনা কখোন�, শুধু ভাবতেই পারব� মন� মন� কিন্তু বাস্তব� পারবানা।
কৌশি� মজুমদারে� "সূর্যতামসী" শুরু হয� আর আট দশটা ডিটেকটিভ থ্রিলারে� মতোই� গল্পের শুরুতে� খুন। তব� যে সময়� লেখক গল্প লিখছেন সেসময়ের খু� না� এই বীভৎ� খুনে� ঘটনা ঘট� প্রায় ১২�-২৫ বছ� পূর্বে� কলিকাত� শহরে� ১৮৯২ আর ২০১৮ টাইমলাইনেই গল্প এগোত� থাকে।সেসময়ে� হত্যাকাণ্ড তদন্তে� দায়িত্ব পা� দারোগা প্রিয়োনাথ মুখোপাধ্যায়� এই খুনে� রে� কাটত� না কাটতেই আর� দুইট� মৃত্যু করিস্থিয়া� হল� কার্টা� সাহেবে� জাদু� প্রদর্শনের সময়� অনেক সময় পর� ২০১৮ সালে চন্দননগর� প্রায় এক� পদ্ধতিতে আবার খুনে� ঘটনা ঘটে। আর এখান� জড়িয়� পড়ে� তরুণ ডিটেকটিভ তর্বসু রায়� এই খুনে� রহস্� জানত� অবশ্যই সে� ১২� বছ� আগের কাহিনী জানত� হবে। আর সে� কাহিনী আর এই কাহিনী নিয়েই গল্পকে এগিয়ে নিয়� গেছে� কৌশি� মজুমদার।
গল্প� যেভাবে ইতিহাসকে তুলে ধর� হয়েছে সেটা প্রশংসার দাবিদার। শুধু ইতিহাস� না, বাস্তব চরিত্রদে� যেভাবে ফিকশনালাইজ� কর� উপস্থাপন কর� হয়েছে সেটা এক কথায� অসাধারণ। দারোগা প্রিয়না�, গণপত� বা সাইগারসনের কথাই বল� যায়� সাথে খুনে� পদ্ধতি, সিম্বল সবকিছু নিয়েছেন হিস্ট্রি থেকে�
গল্প এক টাইমলাইন থেকে অন্য টাইমলাইন� দৌড়াদৌড়ি করার কারন� প্রথমে কিছুটা অসুবিধ� হলেও, চরিত্রগুলো পরিচিত হয়ে যাবা� পর আর এই সমস্যাটা থাকেনা� কিন্তু কিছু প্রশ্ন থেকে যায়� চিনাদে� সাথে সম্পর্� খুনে� বা তারা খু� করতে চায় শুধু, কিন্তু সে� বক্স সমন্ধে তারা জানল কিভাবে বা তারা সেটা চাইছেই বা কে� সে কথ� লেখক স্পষ্ট কর� বলেননি� যদিও বাক্� রহস্� উন্মোচ� হয়ন�, হয়ত� পরবর্তী বই গুলোতে কর� হবে। কিন্তু কোনো হিন্টও পাওয়া গেলোনা এখানে। রহস্� উন্মোচ� আমার কাছে এভারেজ লেগেছে� দু� টাইমলাইনেরই। পা� কেটে বে� হয়ে যাবা� মতো। রহস্যটাও খু� যে মর্মান্তিক বা আহামরি এমনটাও না� তব� খারাপও না� পর� রিফ্লেক্� করতে বসলে মন� হব� আহ এইটা�!!
তব� পড়া� সময় খুবই সুখপাঠ্য লেগেছে� প্রতিমুহূর্ত� ক্লু পাওয়া, উত্তেজনাপূর্� পরিবেশ, গথিক গথিক ভা�, এস� কিছু সাথে নিয়� পড়া� মজাটাই অন্যরকম। ১৯ শতকে� কলকাতা� বর্ণনা, অলিগলি, আর্থসামাজি� অবস্থা, ব্যবসা বানিজ্�, এস� সহ Pale Blue Eyes এর মত� সিনেম্যাটি� অভিজ্ঞতাটা� চোখে� সামন� ভেসে ওঠে। যেটা আসলে ফি� করার বিষয�, কথায� বুঝানো যাবেনা বল� মুভি� উদাহরণ দিলাম। সাথে ভাষা� প্রাঞ্জলতা, শব্দের শ্রুতিমধুরতা, বাক্যগুলোক� ছো� ছো� কর� লেখা, আর লেখা� মধ্য� তালগোল পাকিয়� পাঠকের মাথা আউলায়� না দেওয���া এই বইয়ের অন্যমত ভালো দিকগুলির একটি�
এই বইয়ের মত� পরের বইগুলা� সাথে� সময় ভালো� কাটব� বল� মন� হচ্ছে। আর রহস্যে� যেহেতু শে� হলোন� তা� পড়তেই হবে। পড়ত� ভালো লেগেছে খুবই�
গতানুগতি� থ্রিলা� থেকে একটু ভিন্� লেগেছে, যেটা অবশ্যই একটা পজেটিভ দিক। তব� শুরু থেকে দারু� লাগলেও উপন্যাসে� মাঝামাঝি থেকে সব কিছু অনেকটা প্রেডিক্টেবল হয়ে গিয়েছিল�
লেখনী ছি� সাবলিল আর মোটামুটি বড� কলবরের লেখা, সেখানে আগ্র� ধর� রাখতেও সক্ষ� হয়েছে� লেখক� থ্রিলা� মিস্ট্রি পাঠকদে� জন্য অবশ্যই রিকমেন্ডেড�
আর প্রেডিক্টেবল প্লট? সব� মাত্� ত্রিলোজি� প্রথ� বই পড়লাম� দেখা যা� না, সামন� কি আছ�!
ভা� লেগেছে, দুইট� ব্যাপা� বাদে� এক, নন-লিনিয়ার স্টোরিলাইনের নামে দ্রু� এক ডা� থেকে আরেক ডালে বাঁদরে� মত লাফিয়� লাফিয়� অধ্যায� পরিবর্তন; বারবার� মনোযোগ ছুটে যায়� আর ইতিহাসাশ্রয়ী কাহিনী লিখত� গিয়� লেখকরা মাঝে মাঝে� ভুলে যা� যে, তিনি গল্প লিখছেন, ইতিহাস নিমিত্� মাত্র। কাজে� লেকচার দেয়� বারণ� লেখক প্রায়� সে� লেকচার দিতে গিয়� পাঠকের মনোযোগ সরিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু গল্পটা ভা� লেগেছে� আমার সবচেয়� প্রিয় চরিত্রটা� চিত্রায়� (কে, সেটা বললা� না, স্পয়লার হব�) অবশ্� ঠিকভাব� হয়ন�, সেটা হল� একতারা বেশি দিতাম।
কৌশি� মজুমদা� যেভাবে পুরন� কলকাতাকে জ্যান্� কর� তোলে�, অন্ত� তা� স্বা� নিতে� তাঁর বইগুলো পড়ত� আগ্র� হয়। এর আগ� তোপসের নোটবুক বইতে সামান্� আঁ� পেয়েছিলাম, এবার সূর্যতামসী পড়ে মা� হয়ে গেলাম।
সূর্যতামসী, দুটো সময়ের সমান্তরা� গল্প� এক, গ্যাসবাত� আমলে� ভিক্টোরিয়ান কলকাতা, আরেক বর্তমান। সূর্যতামসী-নীবারসপ্তক-অগ্নিনিরয় ত্রয়ী যদিও নামে ম্যাসন ট্রিলজ�, এব� গুপ্তসংঘের উপস্থিতি আছ�, কিন্তু গতানুগতি� থ্রিলা� লেখকদে� মত� গুপ্তসংঘ দেখিয়� চট� লাগানো� প্রবণত� ছি� না সূর্যতামসী-তে�
গল্পের অবতারণ� ঊনিশ শতকে� কলকাতায়� যখ� গ্যাসবাতির আল� রাস্তাকে আলোকিত করতো কম, বর� তা� রহস্যময়তা বাড়াত� বেশি� ঐতিহাসিক চরিত্র, দারোগা প্রিয়না� মুখোপাধ্যায়, ডা� পেয়েছেন এক খুনে� তদন্তের। নৃশং� খু� হয়েছে চীনা পাড়ায�, ছিন্নভিন্ন দেহে� বুকে� ওপ� �-চি� প্রক্রিয়ায় লেখা, মৃত্যু� এব� আর� মৃত্যু সমাগ�, এই বার্তা� তদন্তে� সুতো� টানে জড়িয়� পড়ে� আর� দু� ঐতিহাসিক চরিত্র, জাদুকর গণপত� চক্রবর্তী, আর গোয়েন্দ� তারিণীচরণ। এঁদে� না� গুগল করলে� দেড়�' বছ� আগের কীর্তি দেখা যায়, এম� বিখ্যা� মানুষদের অরিজিন স্টোরি সাজানো হয়েছে উপন্যাসে, সাথে তাঁদের সময়টাকে, সে সময়ের কলকাতা-কে ফুটিয়� তুলে, সব মিলিয়� জম্পেশ একটা ব্যাপার।
এদিক� বর্তমানে� গল্প� তরুণ গোয়েন্দ� তুর্বস� রায়, নামে প্রাইভেট ডিটেক্টি� হলেও গল্পের গোয়েন্দাদের মত� দক্ষ মোটে� নন� দৈনন্দিন লেজেগোবর� অবস্থা� মাঝে এক হত্যারহস্যের অভিযুক্ত তালিকায় ফেঁস� যান। হত্যাপদ্ধত�? সে� শত বছ� আগেকার! জানত� পারি, তুর্বস� রায়, গোয়েন্দ� তারিণীচর� রায়ের বংশধর। তাহল� পূর্বপুরুষের সম্পৃক্ততা, এত বছ� পর তুর্বস�-কে ধর� বসলো কি?
সূর্যতামসী� গল্প অনেকাংশে� টেনে নিয়� গেছে অতীতে� সময়টুকু, এব� আপাত� রহস্যটুক� ওই সময়েরই। আর সে সময়কা� পথঘা�, সংস্কৃতি, এইসব যেমন চোখে দেখা� মত� ফুটে উঠেছ�, তা� পাশাপাশি উপভো� কর� গেছে উল্লেখিত একেকটা জায়গা� পূর্� ইতিহাস, উল্লেখিত ব্যাক্তি বা সাহিত্যে� বর্ণনা�
এদিক�, গল্প যেহেতু মূলত ডিটেক্টি� থ্রিলা�, তা� ডিটেক্টিভে� চোখে� রহস্যভেদ করবে� পাঠক- ঠি� কর� বললে, ডিটেক্টিভদের� মূ� দায়িত্ব� থাকা প্রিয়না� আর তুর্বস� ছাড়াও, যেসব চরিত্ররা নিজেদে� জীবনের পাকে গল্প� জড়িয়� পড়েছে�, তাঁরাও নি� নি� তাগিদে� রহস্যে� ইতিউতি সমাধান করায� হা� লাগিয়েছেন� জাদুকর গণপত� আর গোয়েন্দ� তারিণীচর� ছিলে�, মায় শার্লক হোমস-� বেনামে হাজি� হয়েছে� কৌশি� মজুমদারে� বয়ানে� আর, একেকটা চরিত্রের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি, আর তদন্� কৌশল দেখা� মত� ছি� এখানে।
বই যদ� কোনো একটা সিরিজে� অং� হয�, তা� কাছে চাওয়া থাকে, যে� বইজুড়� যে সাময়ি� কনফ্লিক্�, সেটা� সমাধান হয�, আর সিরিজজুড়ে যে ওভার-আর্চিং কনফ্লিক্�, ওটাও ভালোমত� পরিচিত হয়। এই দাবিটুকু পুরোপুরি ঘুচেছে ম্যাসন ট্রিলজির পয়ল� বই 'সূর্যতামসী'-তে� অবশ্� সিরিজট� কো� রহস্� নিয়� এগোব�, তা� স্পষ্ট ধারণ� পাওয়া না গেলে�, ক্রীড়নক কারা হবেন, তা বুঝা গেছে�
সবকিছু মিলিয়� সূর্যতামসী পড়ে শে� করার অভিজ্ঞতা এতটা জমজমাট ছি�, যে, পরের বইদুটো হাতে পাবা� তর সইছে না�
পড়েছিলা� আফসা� ব্রাদার্� প্রকাশিত বাংলাদেশী সংস্করণে� ভারতীয় সংস্করণে� সাথে পাল্লা দিয়� দেখা� মত� প্রচ্ছ� হয়েছে এটার� ভারতীয় সংস্করণে� চিত্রাঙ্কণ� রাখা হয়েছে� আফসা� থেকে� আসতে যাচ্ছে পরের দুটা�, নীবারসপ্তক, আর অগ্নিনিরয়�
সূর্যতামসী এব� বাদবাক� সিরিজট� সম্বন্ধে স্পয়লার-ফ্রি আলোচনা দেখে নিতে পারে� এখান� :
কয়েকট� জিনি� আমার ভালো লেগেছে, সেগুলো� শুধু উল্লেখ করছি� �. সূর্যতামসী নামকরণ � তা� সঙ্গ� যোগসূত্র �. তুর্বস� নামট�, �. সাইগারসন টুইস্ট �. আর পুরোনো কলকাতা� সাথে পাগলদে� ওপ� লেখা প্লট� ব্যস, এইটুকুই। নাহল� টাইমলাইন এদিক ওদিক কর�, সাধুভাষা-চলিতভাষায় গুলিয়�, ইতিহাস আর থ্রিলারে� চচ্চড়� কর� শেষমেশ যে খিচুড়িট� তৈরী হয়েছে তা শে� করতে আমায� বে� বে� পেতে হয়েছে� কষ্ট হচ্ছ� এইভেবে যে এই প্রেডিকটেব� বইটি যেখানে শে� হয়েছে, সেটা আবার একটা সিরিজে� জন্ম দিয়েছে। :')
"কোথা� পাখি� শব্দ শুনি; কোনো দিকে সমুদ্রের সু�; কোথা� ভোরে� বেলা র’য়ে গেছে� তবে। অগণন মানুষে� মৃত্যু হ’লে� অন্ধকারে জীবি� � মৃতে� হৃদয� বিস্মিতে� মত� চেয়� আছ�; � কোন্ সিন্ধু� স্বর: মরণের� জীবনের?"
জীবনানন্দে� 'সাতট� তারা� তিমি�' কাব্যগ্রন্থভুক্ত সূর্যতামসী কবিতার এই চরণগুল� দিয়েই কৌশি� মজুমদারে� অতী� রহস্যময় উপাদেয� ডিটেকটিভ উপন্যা� 'সূর্যতামসী'� সূচনা। সূচনাং� পাঠে� পর অপ� পৃষ্ঠায় চো� বুলালে� দেখত� পাওয়া যাবে লেখক সমগ্� উপন্যাসটিক� তি� খণ্ড� বিভক্ত করেছেন� অর্থাৎ, পূর্বখণ্�-সংকট,মধ্যখণ্ড-সন্ধান এব� উত্তরখণ্�-সমাধান�
উল্লেখ্য যে, কয়েকখান� খু�, প্রাচী� কলকাতা থেকে আধুনিক কলকাতা� সৃষ্টি� ইতিহাস - এই উপন্যাসে� প্লটের মূ� বিষয়বস্তু� উনিশশতকে� শেষাংশ অর্থাৎ ১৮৯২ সালে কলকাতায় ঘট� যাওয়া চাঞ্চল্যকর তি�-তিনট� রহস্যময় খুনে� অমিমাংসি� একটি কেসে� রহস্� কালে� বিবর্তনে ২০১৮ সালে পুনরায� ঘনীভূ� হবার মাধ্যমেই 'সূর্যতামসী' উপন্যাসে� চম� শুরু� কো� যোগসূত্রের কারণ� এত বছ� পর কলকাতা� অন্ধকা� ইতিহাসের ধূলোজম� খাতা আবার সর্বসম্মুখ� আসলো? -সে প্রশ্নের উত্ত� খুঁজতে গিয়� উপন্যাসটিত� মু� ডুবিয়� দেওয়া ছাড়� আর কোনো উপায� নে� পাঠকের� রহস্যে� সমাধান খুঁজতে গিয়� উনিশ শতকে� প্রাচী� কলকাতা� বিবর�, তা� অন্ধকারে� ইতিহাস, গোপন ষড়যন্ত্�, সিম্বোলজ�, দুর্ধর্ষ চাইনিজ গুপ্তসঙ্�, ফ্রি ম্যাসন,কতিপয় নৃশং� হত্যাকাণ্�,মানসিক স্বাস্থ্যে� সুরক্ষ� বিষয়ক চিকিৎস� � চিকিৎসালয়, জাদুবিদ্যা,'সূর্যতামসী' নামক ভয়ংকর কালোজাদু� সম্পর্কে বিস্তারি� জানা যাবে�
শুধু তা� নয�,ফিকশনে� মাঝে� খোঁজ মিলব� নন-ফিকশনে� অর্থাৎ,বে� �'জন জ্বলজ্যান্� মানুষের। যাঁদের অস্তিত্ব লেখকের কল্পনায় নয� বর� এই ধুলি� ধরায� ছিলো।এ� প্রোটাগনিস্টদে� একজন বইয়ের ভাষ্যমতে, উনিশ শতকে� চাঞ্চল্যকর কেসে� তদন্তকারী কর্মকর্ত� - প্রিয়না� মুখোপাধ্যায়� যিনি বাস্তবজীবন� উপমহাদেশের প্রথ� প্রকাশিত বাংল� গোয়েন্দ� কাহিনী 'দারোগা� দপ্ত�' এর রচয়িতা।অভিজ্ঞ পাঠকমহলে 'প্রিয়না� দারোগা' খ্যাতিপ্রাপ্� প্রিয়না� মুখোপাধ্যায় তাঁর পেশাগত জীবনের সত্যিকারের কেসগুলোকেই 'দারোগা� দপ্ত�' - � লিপিবদ্ধ করতেন।অন্যজন,উপমহাদেশের প্রখ্যাত জাদুকর 'গণপত� রায়' ওরফে 'গণপত� দ্� গ্রে�';জাদুকর পিসি সরকারে� গুরু হিসেবে যাঁর রয়েছে অগাধ জনপ্রিয়তা� তাঁক� এই উপন্যাসে� প্রথ� দিকে নিতান্� ছন্নছাড়� এক ম্যাজিকপ্রেমী যুবক হিসেবে দেখত� পাওয়া যাবে� এমনক�, ছদ্মনামধারী শার্লক হোমসের দেখা� মিলব� বইটি� পাতায়।এতস� ঐতিহাসিক চরিত্রের সম্মিলনে� প্লটটা যে একদম� খে� হারিয়� ফেলেনি বর� ঐতিহাসিক � কাল্পনিক চরিত্রসমূহ নিখুঁতভাবে প্লটের মাঝে একাকার হয়ে গেছে তা� জন্য� লেখককে ধন্যবা� জানাতে� হয়।শুধু কি তা�?দারোগা প্রিয়নাথে� ডায়রি,তৎকালী� নামজাদ� গোয়েন্দ� তারিণীচরণে� অমূল্য ডায়রি,প্রাচী� নথিপত্�, গণপতির রহস্যময় ভূতে� বাক্� কি নে� এই উপন্যাসে?! উপন্যাসে� অন্যতম প্রশংসনীয় একটি দি� হচ্ছ� প্রাচীনসময়ে� নথ�-পুস্তক-প্রিয়না� কিংব� তারিণী� ডায়রি এব� বর্তমা� সময়ের গল্পকথকে� লেখা মাঝে� ফারাকগুল� অবলীলায় ধরতে পারা গেছে।যার একমাত্� কারণ- দৃশ্যপ� বদলানো� সাথে সাথে লেখক বারবার নিজে� দৃষ্টিকো� এব� ভাষা� ব্যবহারে�-� পরিবর্তন ঘটিয়েছেন। দেড়শো বছরে� পুরন� কাগজাদিত� যেমনিভাব� সাধুভাষায় লেখা সেকেলে বর্ণনা,সেকেলে যতিচিহ্নের ব্যবহা� ,ইংরেজি শব্দের প্রয়োগহীনত� পরিলক্ষি� হয়েছে ঠি� তেমনিভাব� বর্তমা� সময়ের কাগজ-পত্র� আধুনিক যতিচিহ্ন� চলিত ভাষা� প্রয়ো� এব� কথায� কথায� ইংরেজি শব্দের সংমিশ্রণ ঘটেছে। এখান� লেখক তাঁর শব্দশৈলী-জ্ঞা� এব� বুদ্ধিমত্ত� দিয়� মুন্সীয়ান� দেখিয়েছেন�
বলাই বাহুল্�, লেখক যথেষ্ট কা�-খড� পুড়িয়ে� এই দুর্দান্� প্লটটাকে দাঁড� করিয়েছেন।নতুব�,ফিকশনে� মাঝে নন-ফিকশনে� এম� চমৎকার সংমিশ্রণ ঘটান� সম্ভ� নয়।তথ্যের বাহুল্� কিংব� ঘটনা� অতিরঞ্জন কোনোটা� চোখে পড়েনি এই উপন্যাসে।বলা ভালো, গোটা উপন্যাসজুড়ে ঝরঝর�, মেদহী� গদ্যভাষায় সুচারুরূপে বাস্তব এব� কল্পনা� মেলবন্ধন ঘটেছে। ঠি� যতটুকু ভিজ্যুয়াল বর্ণনা প্রয়োজন লেখক ঠি� ততটুকু� দিয়েছেন, লেখা� সাথে তালমিলিয়ে গল্পের গাঁথুন�-� সমগতিত� এগিয়েছে।এ� সাথে অনন্� সংযোজন হিসেবে যুক্� হয়েছে বইয়ের পাতায় পাতায় গৌতম কর্মকারে� দারু� অলংকরণ।পড়ার সময় মন� হচ্ছিল�, বর্ণনা� সঙ্গ� এঁটে দেওয়া এই চিত্রগুল� যে� চোখে� সামম� গোটা উপন্যাসটাকেই তুলে এনেছে।
গতানুগতি� ধারা� বাইর� গিয়� সৃষ্টি উত্তেজনায় ভরপু�-শক্তিশালী প্লট নির্ভর রহস্যময় এই উপন্যাসট� পা� না করলে বোধহয় সুসাহিত্যে� স্বা� থেকে কিছুটা বঞ্চিত-� হবেন।এ� উপন্যাসটির শেষাংশ� রয়েছে বিশা� চমক।শে� হয়ে� যে� হব� না শে� ;রয়ে যাবে এর রেশ। হয়ত�, �-কারণেই আবার� গোটা উপন্যাসট� পড়ত� বস� যেতে হত� পারে!
কী জানে তুর্বস�? সেটা সে নিজে� জানে না! তব� এটুক� বুঝত� পারছ�, উত্ত� খুঁজতে হল� ডু� দিতে হব� উনিশ শতকে� কলকাতায়, জাদুবিদ্যা, পাগলাগার�, ভয়ংকর ষড়যন্ত্� আর গুপ্তসমিতি� ইতিহাসের মধ্যেই লুকিয়� আছ� দেবাশীষদার খুনে� রহস্যে� সমাধান�
লেখক শুরুতে� বল� নিয়েছেন, এই উপন্যাসে তিনি ব্যবহা� করেছেন বাস্তব তথ্য � চরিত্র� সে� সূত্রে� গল্প� চল� এসেছেন উনিশ শতকে� গোয়েন্দ� � 'দারোগা� দপ্ত�'� লেখক প্রিয়না� মুখোপাধ্যায়, বাংলার আধুনিক জাদুবিদ্যা� পথকৃ� গণপত� চক্রবর্তী, ডাক্তা� মহেন্দ্রলা� সরকারে� মত� বাস্তব চরিত্ররা�
দু'টি টাইমলাইন� রহস্� এগিয়ে নিয়� যাওয়া� ধারাটায় এখ� নতুনত্� নে� তেমন� তব� বইটি� প্রধান আকর্ষণ পুরোনো কলকাতা আর জমজমাট রহস্য। তি� খন্ড� সাজানো গল্প� উনিশ শতকে� জাদু� মঞ্চ থেকে বেশ্যাপাড়ায� সমাধানের খোঁজ� ছুটে বেড়িয়েছে প্রিয়না� � তারিণী� আর সে� সুতো এই সময়� ধর� এগিয়ে গিয়েছ� তুর্বসু। বিভিন্� সময়� � ভিন্� ভিন্� চরিত্রের দৃষ্টিকো� থেকে গল্প বলার সময় লেখক খেয়াল করার মত� ভাষাগত পরিবর্তন এনেছেন�
বইটি� ফ্ল্যাপে� কথ� এব� পরিবেশনা� ছি� পুরোনো লিফলেটের বিজ্ঞাপনের আদলে� ইলাস্ট্রেশনগুল� বইটিকে আর� উপভোগ্� করেছে। কৌশি� মজুমদারে� ঝরঝর� লেখনশৈলী পড়ত� ভালো লাগে, তা� গল্প বলার ঢঙ� অনেকটা� সত্যজি� রায় বা সে� সময়ের লেখকদে� একটা ধাঁচ আছে। সংক্ষিপ্� অধ্যায� আর টানা গল্পের গাঁথুন� তো আছেই� কিছু কিছু দৃশ্যায়� দারু� রোমাঞ্চক� ছিল। বইটি লিখত� লেখককে পুরোনো কলকাতা নিয়� প্রচুর পড়ত� হয়েছে সন্দেহ নেই। যদিও কখনো মন� হয়েছে তথ্য � ইতিহাসের আধিক্য একটু কম হলেই ভালো হতো।
'সূর্যতামসী'� ফ্ল্যাপে� আর বাইরের চেহারা দেখে যেকোনো পাঠকের জিভে জল আসতে বাধ্য। তব� ইতিহাস, বহ� চরিত্র, ঘটনা� ঘনঘট� আর কাহিনী� জটিলতা সব ধরনে� পাঠকের জন্য সুস্বাদু হব� কি না নিশ্চি� নই�
কার্টা� সাহে� দেখাবে� 'ইন্ডিয়া� রােপ ট্রি�' - হিমালয� থেকে শিখে আস� সে� খেলা যা সহজে কে� দেখানো� সাহস কর� না � শূন্যে ছুঁড়ে দেওয়া দড়ি বেয়� উঠ� গেলে� কার্টারে� সহযােগী চি�-সু-লি� � সাহে� মন্ত্র পড়ছেন... 'ওম-�-�...'� গােট� হল� পিনপতন নীরবতা � হঠাৎ.. মঞ্চের পাটাতন ভেঙে উপ� থেকে পড়লাে একটি দে� - চী�-সু-লি� ! নগ্ন, ঘাড় মটকানা�, নিঃসাড� !
📝 প্রতিক্রিয়া : এই বইয়ের ফ্ল্যাপে দেখত� পাবে� এত� আছ� - উনিশ শতকে� কলকাতা, গোপন ষড়যন্ত্�, সিম্বোলজ�, দুদ্ধর্ষ চাইনিজ গুপ্তসঙ্�, একের পর এক নৃশং� হত্যাকান্� এব� জাদুবিদ্যা � তা সত্বেও এট� একটি নিখা� ‘ডিটেকটি� মিস্ট্রি� উপন্যা� �
▪️এই উপন্যাসে� দুটি প্লট � একটি ১৮৯৩ সালে� ভারতবর্ষ, আর� বিশদ� বললে - কলকাতা আর চুঁচুড়া� গলিঘুপচি, চীনাপাড়� এব� নিষিদ্� পল্লী � বইয়ের অপ� অং� ২০১৮ অর্থাৎ বর্তমা� সময়ের � তব� উনিশ শতকে� কলিকাত� বর্তমা� কলকাতাকে কাহিনী� ঘনঘটনায়, বর্ণনা� খুঁটিনাটিত� এব� রহস্যময়তায় ছাপিয়� গেছে বহুগুণ� � ইতিহাস এব� রহস্যে� সঠিক মিশ্রণ ঘটলে তা ঠি� কতটা আকর্ষণীয় হত� পারে, তা� অন্যতম উদাহরণ এই বই � এই বইতে মূ� একটি চরিত্রের মধ্য� দিয়েই গল্পের ছল� ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে, যা কখনই মূ� গল্পের একমুখী স্রো� থেকে পাঠককে বিচ্ছিন্� করেন� �
▪️লেখক কৌশি� মজুমদারে� অন্যত� বৈশিষ্ট্� হল - যে কোনো বিষয়ে দুর্দান্� রিসার্� কর� এব� টানটান নির্মে� লেখনী � তব� লেখকের সিগনেচার স্টাইল হচ্ছ� রক্তমাংসের ঐতিহাসিক ব্যাক্তিত্বদেরকে নিজে� কাহিনী� চরিত্র হিসেবে সুনিপুণভাব� প্রতিস্থাপ� কর� (যা এর আগেও লক্ষ্য করেছ� ‘তোপসে� নোটবুক� বইটিতে) � এই উপন্যাসে� প্রোটাগনিস্টদে� মধ্য� একজন হলেন প্রিয়না� মুখোপাধ্যায়, যাকে পাঠক চেনে� ‘দারোগার দপ্তর� এর লেখক হিসেবে � এছাড়া� আর একটি মূ� চরিত্র ‘গণপতি’। এই গণপতিই যে বাংলার অন্যত� শ্রেষ্� জাদুকর ‘গণপতি দ্� গ্রেট�, তা নিশ্চয়ই পাঠকরা বুঝত� পারবেন � তব� লেখক শুধু এই পর্যন্� এস� ক্ষান্� দেনন�, তিনি সাহিত্যে� ইতিহাসের বিশিষ্� একটি ফিকশনা� চরিত্রকে� টেনে এনেছেন নিজে� গল্প�, যা গল্প� অন্� মাত্রা যো� করেছ� �
📜 উপন্যাসটির গদ্� ঝরঝর�, উপস্থাপনাও ভীষণ সুন্দর এব� দৃশ্যপ� বর্ণনা একদম যথায� � প্রোটাগনিস্টদে� চরিত্রায়ন যথায�, বিশে� ভাবে বলতে হয� তুর্বস� চরিত্রটি� কথ� � পাঠক খু� সুন্দরভাবে � চরিত্রটি� সাথে একাত্মতা খুঁজ� পাবে� � তব� এইসময়ের একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ যে ক্রাইম মিস্ট্রি� থেকে� ডিভোর্সে� কে� বেশি পাবে তা বলাই বাহুল্� �
▪️উপন্যাসে� অতীতে� প্লট ‘গথিক� পরিবেশ সৃষ্টি করতে পুরোপুরি ভাবে সক্ষ� � কিন্তু, � কাহিনীতে প্রোটাগনিস্ট চরিত্রের ভীড় একটু বেশি�... কে যে সত্যিকারে� মূ� চরিত্র সে� ব্যাপারে একটু যে� খটকা� থেকে যায় �
▪️এছাড়া, কাহিনীতে বর্তমা� সময়ের যে মিস্ট্রি তৈরি কর� হয়েছে তা� সমাধান হয়ে ওঠেন� � লেখক ক্লিফহ্যাঙ্গা� দিয়� ঝুলিয়� রেখেছে� পরবর্তী বইয়ের জন্�, যা রহস্� উপন্যাসে� ক্ষেত্রে অত্যন্� বিরক্তিক� একটি বিষয� �
🔹তব� সবমিলিয়� বলতে পারি... প্রচুর তথ্� এব� পাঁচটি প্রোটাগনিস্ট ক্যারেক্টা� সামল� যদ� গল্পের মধ্য� ঢুকে যেতে পারে�, তাহল� ২৩� পাতা� বই একটানে শে� করতে বাধ্� হবেন �
প্রথমে� বল� রাখি, আমার খু� একটা ভালো লাগেনি� ফেসবুক� কিছু রিভি� পড়ে আর অ্যা� দেখে কিনে ফেলেছি� সূর্যতামসী একটি ডিটেকটিভ উপন্যাস। এক সাথে দুটো সময়ের ঘটনা বলেছেন� এক, ১৮৯২ এর কলকাতা আর দু� ২০১৮� কলকাতা আর চন্দননগর� লেখক পুরন� ঘটনা বলতে গিয়� খু� সুন্দর সাধু ভাষা ব্যবহা� করেছেন� সত্যিই চমৎকার লেগেছে, অনেক দি� পর সাধু ভাষায় ডিটেকটিভ উপন্যা� পড়লাম� কিছুটা সত্য ঘটনা মিলিয়�, খু� চমৎকার একটা গল্প উপস্থাপন করেছেন� "দারোগা� দপ্ত�" বইয়ের স্রষ্ট� প্রিয়না� বাবু� ঘটনা গুলো খু� সুন্দর লিখেছেন।
কে� খারা� লেগেছে বল� - �. বইটা� প্লা� পয়েন্� যেমন প্রচুর তথ্য ভান্ডা� তেমন� ওটাই সবচেয়� বড� দুর্বল পয়েন্ট। একটা ডিটেকটিভ উপন্যা�, যেখানে থ্রি� আছে। সেখানে হঠাৎ কর� চুঁচুড়া� না� চুঁচুড়া কে� হল� , ব্যান্ডে� এর না� ব্যান্ডে� কেনো , চন্দননগরের না� চন্দননগর কেনো, চন্দননগরের পাঠাগারে� ইতিহাস নিয়� পাতা� পর পাতা খর� করেছেন যা� সাথে মূ� উপন্যাসে� কোনো যো� নেই।
�. ভালো ডিটেকটিভ উপন্যা� আর থিসি� পেপা� এক বস্ত� নয়। লেখকের অগাধ জ্ঞা� আছ� জানি, উন� উপন্যা� লিখা� জন্য প্রচুর বই পড়েছে� জানি - তা� বলেন একটা ডিটেকটিভ উপন্যা� সে� সব জাহি� করার কোনো মানে হয� না� গল্পের ফ্লো নষ্ট হয়ে যায়�
�. প্রচুর চরিত্র� মানলাম বড� উপন্যাসে অনেক চরিত্র হব�, তা� বল� এত হব� না যে ১০ পাতা আগ� কি পড়েছিলা� গুলিয়� যাই। মাঝে� মাঝে� পেছন� গিয়� দেখত� হচ্ছ� - এট� আবার কো� রবার্ট, নী� চো� আবার কা� ছি�, এর বাবা কে ছি�, ম্যাজি� কা� কাছে শিখেছি�, চরিত্রের আগ� না� এট� ছি� এখ� না� এটা।
পরিশেষ� বল�, এইসব বা� দিলে খু� একটা খারা� নয� উপন্যাসটা। তা� বল� বিশা� উচ্ছ্বসি� প্রশংস� করার মত ডিটেকটিভ উপন্যা� নয়।
নামে গুপ্তসংঘ হলেও, বিষয়ট� মোটে� গুপ্� কি না � নিয়� একটা সন্দেহ আছে। যে সংঘে� না� কারো অজান� নয�, তাকে কি গুপ্� বল� যায়?
গুপ্তসংঘ নিয়� কচকচান� এখ� থাক। এখ� তুর্বসুর কথ� বলি। জীবন� অনেক কিছু করতে চাওয়া ছেলেটা� যখ� কিছু� কর� হল� না, তখ� সে পুরনোক� আকড়� ধর� বেঁচ� থাকা� চেষ্টা করে। বড়ো দাদা� পুরন� ডিটেকটিভ এজেন্স� খুলে ডিটেকটিভ হওয়ার চেষ্টা চলে। টুকটাক রহস্� সমাধান� ডা� আসে। প্রথ� কেসে� পরিচয় হয� এম� এক মানুষে� সাথে, যা� সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠ� খু� দ্রুতই�
দু� বছ� পর আরেকটি কেসে ছুটে চলতে গিয়� থমকে যেতে হয়। সে� মানুষট� আজ আর নেই। গতকা� হোয়াট� অ্যাপে এক মেসে� দিয়েছিলেন� এরপর? পুলি� জানায় নৃশংসভাব� খু� কর� হয� দেবাশিসদাকে। মৃত্যু� পর যৌনাঙ্� � অণ্ডকো� কেটে নেওয়া হয়। আর খুনে� পদ্ধতি? পুরন� এক চীনা পদ্ধতি� কে� এভাব� খু�? খুনি কি কিছু বলতে চায়? দেবাশিসদ� তুর্বসুক� ফাঁসিয়ে গেছে� এর মর্ম উদ্ধার না কর� নিস্তা� নেই।
জানা যায়, প্রায় এক� বছরেরও আগের এক কেসে� সাথে যোগসাজ� এই রহস্যের। যোগসাজ� তুর্বসুর সাথেও। কেনন� সে� কেসে� সমাধান করতে আগুন� ঝাঁপ দেওয়া তারিণী যে তুর্বসুর বড়ো দাদু� সে� সময়� খু� হয়। তিনট� খুনে� রহস্� সমাধান� ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাইভেট ডিটেকটিভ তারিণী, পুলি� অফিসার প্রিয়না� � একজন সাহে� সাইগারসন� অনেক জল ঘোলা কর� সে� রহস্যে� সমাধান হয়।
কিন্তু বর্তমা� রহস্যে� সমাধান করবে কে? তুর্বস� যা জানত� পেরেছে, এরপর জীবন নিয়� না টানাটানি লাগে!
কৌশি� মজুমদারে� "সূর্যতামসী" দু� সময়� এগিয়ে যাওয়া একটি উপাখ্যান� বর্তমা� সময়ের পাশাপাশি ঊনবিংশ শতাব্দী� শেষভাগের গল্প এগিয়ে যায়� বর্তমানে� সাথে অতীতে� গল্পের যোগসাজ� থাকলেও তা� পরিমাণ ছি� খুবই কম� এমনক� শেষভাগ� এসেই দুটি টাইমলাইন একসাথে মেলেনি� বিষয়ট� বোধগম্� হয়নি। হয়ত� সিরিজে� পরবর্তী বইয়ের জন্য জম� রেখে দিয়েছেন�
উপন্যাসটির একটি সময় ছি� বর্তমান। আরেক টাইমলাইন ছি� ঊনবিংশ শতাব্দী� শেষভাগ� স্বভাবতই সে� সময় ব্রিটিশদের শাসন চলছিল। সে� সময়ের কোম্পানি� শাসনের একাং� উঠ� এসেছ� এখানে। এক� সাথে উপমহাদেশের সে� প্রাচী� ইতিহাসের কলকাতা� জীবনযাত্রা� এক খণ্ডচিত্� লেখক তুলে ধরেছেন যেন। ইংরেজদের কাছে এই বাংলার মানু� ছি� নেটিভ। চাকর শ্রেণীর। তা� বড়ো কোনো উৎসব� প্রবেশাধিকার সংরক্ষ� কর� হতো। দেশীয় কে� সেখানে প্রবেশের অনুমতি পে� না� অবজ্ঞা যে� ছি� সবসময়ের সঙ্গী�
শুধু তা� নয�, সাদা চামড়া� মানু� দেখলেই যে� বিনয়ে গদগদ হয়ে উঠ� এদেশের সর্বসাধারণ� সে� বিষয়ট� এখনো আছে। আমরা বিদেশি কিছু দেখলেই নিজেদে� মূল্যে� চেয়েও তা দামি মন� করি। নিজেদে� মূল্যায়� না কর� বিদেশিদে� মূল্যায়� করি। ফলাফ� খু� বেশি ভালো হয� না� নিজেদে� প্রত� এই অবজ্ঞা সে� সময়ের ইংরেজর� ভালো মত� ঢুকিয়� দিতে পেরেছি� বল� আজ� নিজেদে� নিয়� আমাদের এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব�
লেখক বই লিখত� গিয়� অনেক পড়াশোনা করেছেন বলেই মন� হয়েছে� সে� ছা� তিনি রাখত� চেষ্টা করেছেন পুরো বই জুড়ে। ফলাফ�, প্রয়োজনের অতিরিক্ত তথ্য তিনি দিতে চেয়েছেন� যা� খু� একটা প্রয়োজন ছি� না� গুপ্তসংঘের একটা সূক্ষ্� বিষয� উপন্যাসে থাকলেও ফ্রি ম্যাসন নিয়� লেখকের অতিরিক্ত কথাবার্ত� উপন্যাসে� মে� বাড়িয়েছে শুধু� প্রয়োজনের তাগিদে যে সক� তথ্য আস� প্রয়োজন, তা মেনে নেওয়া গেলে�; অতিরিক্ত তথ্যের ভা� বারবার পড়া� গতিক� মন্থ� কর� দিয়েছে।
উপন্যাসে একবা� প্রিয়নাথে� কথ�, কখনো তারিণী� ডায়ের�, আবার তুর্বসুর কথ�, বর্তমা� সময়, অতীতে ফিরে যাওয়া, সাধু/চলিত� মিশ্রণ; এক উপন্যাসে এতকিছু যে� তালগোল পাকিয়� দিচ্ছিল। আমার মন� হয়েছে লেখকের মাথায়� তালগোল পাকিয়� গিয়েছিল� কেনন� শুরু� দিকে টাইমলাইন আলাদ� করতে সময়ের উল্লেখ থাকলেও শেষে� দিকে তা ছি� না� এছাড়া অন্তিম পর্ব� লেখক প্রিয়নাথে� বয়ানে সাধু রীতিতে কথ� শুরু কর� হু� কর� চলিত ভাষা� আশ্রয় নেন। আবার গুগলের বর্ণনা ছি�, যা প্রিয়নাথক� বা� দিয়� তুর্বসুর কথ� বোঝায়� এগুল� আলাদ� কর� প্রয়োজন ছিল। যা� অভাব� পড়ত� গিয়� বারবার হোচট খেয়েছি।
আমার সবচেয়� ভালো লেগেছে চরিত্রায়ন� একেকটি চরিত্রের মাধ্যম� গল্প এগিয়ে গিয়েছে। সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র দারুণভাব� আলোকিত ছিল। তব� একটা বিষয� ভালো লাগেনি� তারিণী তুর্বসুর প্রয়া� বড়ো দাদু� তাকে তুর্বস� না� ধর� উল্লেখ করছি� কে�? যত� প্রাচী� সময়ের হো�, সম্মান দেখানো এই উপমহাদেশের ধর্ম� বিষয়ট� পছন্� হল� না�
পাগলদে� চিকিৎস� নিয়� যেভাবে আলোকপা� কর� হয়েছে এক কথায� অসাধারণ। প্রাচীনকাল থেকে� নিজেদে� স্বার্থসিদ্ধির জন্য মানু� সব করতে পারে� গবেষণা� নামে গিনিপি� বানিয়� মৃত্যু� মুখে ঠেলে দিতে পারে� তাতে কা� কী যায় আস�? যেখানে বৃহৎ স্বার্�, সেখানে ক্ষুদ্� বিষয� নিয়� মাথা ঘামাতে হয� না�
গোয়েন্দাগির�, তদন্� প্রক্রিয়া ভালো মতোই এগিয়ে চলেছে। আম� আরেকটু প্রত্যাশ� করেছিলাম� একটা জিনি� প্রায়শই লক্ষ্য কর�, নতুন কোনো গোয়েন্দ� কাহিনি লিখত� গেলে� লেখক ফেলুদা, ব্যোমকেশ, শার্লক হোমসদে� রেফারেন্� টেনে আনেন� আমার কে� জানি ভালো লাগে না� লেখকের তৈরি যেকোনো চরিত্র স্বতন্ত্র্� হওয়� বাঞ্ছনীয়� কালজয়ী সেসব চরিত্র কল্পনায় আনার কারণেই হয়ত� বর্তমানে কোনো কালজয়ী গোয়েন্দ� চরিত্র তৈরি হয� না� একটা বাঁধ� থেকে� যায়!
শেষট� নিয়� আগেই বলেছ�, কেমন যে� মিলল না সবকিছু� হয়ত� পরের বইয়� খোলস� হব� বাকি জিনিস। পড়া� অপেক্ষায� রয়েছি� এই ধরনে� বইয়� লেখক চাইল� আর� ভালো কর� ফুটিয়� তুলত� পারতেন� আমরা সাধারণ পাঠক� একটু তৃপ্তি� ঢেঁকুর তুলত� পারতাম�
বইয়ের বাঁধাই নিয়� অভিযোগ আছে। বই কিছুক্ষণ পড়া� পর� এক ফর্ম� খুলে হাতে চল� এসেছে। আফসা� ব্রাদার্�-এর মত� বড়ো প্রকাশনী� কা� থেকে এমনট� কাম্� নয়। না-কি শুধু আমার বইয়� � সমস্যা, কে জানে?
খু� বেশী প্রত্যাশ� নিয়েই বইটা পড়ত� বসেছিলাম� নামটাও কিযে সুন্দর� অসম্ভব ভালো বাইন্ডিং আর কাভার। কি সুন্দর চিত্র। আর বইয়ের শেষে রেফারেন্স। বে� ভালো প্রচেষ্ট�, কিন্তু কে� যে� ভা� লাগল নাহ। বাকীগুলা পড়ব, দেখি কেমন লাগে� লেখা� থেকে মার্কেটি� � বেশী প্রচেষ্ট� মন� হল�
বইটি শে� করার পর তাৎক্ষণি� অনুভূত� হচ্ছ� 'চুড়ান্ত হতাশ�'� এর অসম্ভব সুন্দর স্টোরি বিল্ডি� আমাক� যেমন হিলিয়াম বেলুনে� মত� উড়িয়� নিয়� গেছে, এর এন্ডিং আবার তারচেয়ে� বীভৎ� ভাবে সে� বেলুনে আলপি� ফুটিয়� দিয়েছে। আপাত� হতাশার তিক্� স্বা� নিয়� বস� আছি। এর থেকে বেরোতে সময় লাগবে।
প্রচুর তথ্য� ঠাসা এব� কৌতুহলোদ্দীপক� কিন্তু গনপত� � তারিণীদে� সাথে তুর্বস� � দেবাশিসদের যোগসূত্রতা� দূরত্ব ঠেকছিল� শেষে মিলিয়� দিয়� লেখক অবশ্� উতরে গেছে� তবুও সুখপাঠ্য হওয়ার পরীক্ষায় কতটু� উত্তীর্� হয়েছে� তা প্রশ্ন রাখে(!)� যা� হো� প্রচুর আগ্র� নিয়� কেনা হয়েছি�, ততটা অবশ্� পূরণ করতে পারেনি� হত� পারে আমার ব্যর্থতা যে আম� ঠি� বুঝে উঠতে পারতেছিলাম না এব� একটা ঘটনা� সাথে আরেকটা ঘটনা সিনক্রোনাই� করতে পারছিলাম না� সময় পেলে আর� একবা� পড়া� ইচ্ছ� আছে। ততদিনে না হয� নীবারসপ্তক পড়া� কথ� চিন্তা করতে হয়। হ্যাপি রিডিং�
'সূর্যতামসী', রিসেন্� টাইমের দু� বাংলার সবচেয়� বেশী হাইপ� থ্রিলা� বইগুলো� একটা আর জনপ্রিয় ম্যাসন ট্রিলজির প্রথ� বই� বইটা জনরায় মূলত ডিটেকটিভ মিস্ট্রি থ্রিলা�, তব� বইয়ের ফ্ল্যাপে� লেখা পড়ল� বর্তমা� সময়ের ড্যা� ব্রাউনীয় মশলা মাখানো গতানুগতি� হিস্টোরিক্যা� কন্সপিরেসি থ্রিলারই বেশী মন� হয়। একারণে বাজারি স্টাইল� লেখা ফ্ল্যাপট� পড়ে বইটা কেনা� তেমন ইচ্ছ� ছি� না, তব� একবা� বাতিঘর� বইটা� বাংলাদেশী সংস্করণে� প্রচ্ছ� দেখে ভালো লাগায় কিনেছিলাম।
সেইসাথ� এই ট্রিলজির অতীতে� অংশে লেখক কিছু জনপ্রিয় আর ক্লাসি�, বাস্তব আর ফিকশনে� চরিত্রদে� ক্রসওভার রেখেছে� শুনে কিছুটা আগ্র� ছি�, বে� ভালো ভালো রিভি� দেখে তা� পুরো ট্রিলজিটাই সংগ্রহ� নিই। যাইহোক, সিরিজে� প্রথ� বই 'সূর্যতামসী', যা শুরু থেকে� একটা জমজমাট মিস্ট্রি থ্রিলা� হবার সম্ভাবনা দেখায়�
সিরিজে� গল্প নিয়� বলতে গেলে, এট� একটা ভিক্টোরিয়ান আমলে� ডিটেকটিভ গল্প বর্তমা� সময়ের কন্সপিরেসি এডভেঞ্চা� থ্রিলা� হিসেবে মোটামুটি মানের। অতীতে� গল্প� যদিও লেখক অনেকরকমেরই উপাদান রেখেছে�, তব� তা কতটুকু কার্যকরী? এই বইয়� লেখকের লেখনী ভালো� বলতে হবে। সাবলী� গল্পকথ�, পড়ত� ভালো লাগে আর তা গল্পের সাথে মানানসইও� অতীতে� অংশে ইংরে� শাসি� কলকাতা� সিস্টেমটাক� লেখক বে� ভালোভাবে ফুটিয়� তুলেছে� সেইসাথ� সোনাগাছি� বেশ্যাপল্ল�, জাদুকরদে� কার্যক্র�, উনিশ শতকে� চিকিৎসাক্ষেত্রের অবস্থা সবকিছু� উপস্থাপন� মোটামুটি ভালো হয়েছে�
তব� সবকিছু� শে� কথ�, গল্পের রহস্� আর তা� সমাধানটা কেমন? আমার মত� খু� একটা সুবিধা� না� প্রথমত, বর্তমা� সময়ের মূ� রহস্যে� কথ� বললে বল�, সেটা খু� কম� বিকশিত হয়েছে� অল্প স্থানে কোনোমত� লেখক মূ� রহস্যটাক� শুরু করেছেন বল� চলে। সামনের পর্বগুলোতে তা আর� ভালো কর� প্রকাশ করবে� আশ� করি। তব� যা এসেছ�, তা খুবই গতানুগতি�, তেমন ইন্টারেস্টিং কিছু পেলা� না�
আর অতী� অংশটার ব্যাপারে বলতে গেলে, যে� কাহিনীটা লেখক এই বইয়� শে� করেছেন, তা খু� একটা খারা� ছি� না� কিন্তু লেখক অজস্� চরিত্র, পরবর্তী পর্বের রহস্যে� সেটা�, যেটা� সাথে� মূলত বর্তমা� সময়ের গল্পটা কানেক্টে�, রাখত� গিয়� সেটাকে খু� একটা ভালোমত� গড়ে তুলত� পারে� নি� আমার মত� তা হওয়ার সবচেয়� বড� কারণ তিনখান� আলাদ� আলাদ� গোয়েন্দাদের দিয়� তদন্� করানো। হুটহাট অতী� বর্তমা� টাইমলাইন বদলানো� মাঝখান� কিভাবে গোয়েন্দার� তদন্� করলো, সূত্� পেলো আর সবশেষে সমাধান হল� তা খু� একটা বোধগম্� হব� না� সবশেষে� রহস্যে� সমাধানটা মোটামুটি�
চরিত্রায়নেও কিছুটা সমস্যা আছে। অতীতে� গল্প� এতোবেশী চরিত্র আর কি বলব। সেইসাথ� তি� গোয়েন্দ� প্রোটাগনিস্ট প্রিয়না�, তারিণী আর সাইগারসন কাউকেই তেমন সুগঠিত চরিত্র বল� যায় না� বিশে� কর� সাইগারসনের চরিত্রটা বে� হতাশ করেছ� (যারা জানে� তারা জানে�)� শুধু একটু ভালো লেগেছে পরের পর্বের গুরুত্বপূর্ণ গুটি হত� যাওয়া গণপতিকেই, যাকে কিছুটা জোড় কর� এই বইয়� আন� হয়েছে বল� চল�, তবুও এই জনপ্রিয় বাঙালি ম্যাজিশিয়ানকে ফিকশনরুপ� মোটামুটি দারুণভাবেই উপস্থাপন কর� হয়েছে�
এবাদ� বর্তমা� সময়ের কাহিনীটা তো তেমন একটা প্রকাশ পা� নি, দুয়েকটা হাতেগোনাদে� বাদে তেমন ক��ন� চরিত্র আস� নি� ফল� ছোটখাট� টুইস্টখানা অনুমান কর� কঠিন হব� না� বাদবাক� চরিত্রগুলো খু� আহামরি কিছু� নয়। হুটহাট অতী� বর্তমা� জাম্পকাট, কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জ্ঞা� দেওয়া বিরক্ত� সৃষ্টি করেছে। সবমিলিয়� আম� 'সূর্যতামসী' বইটা নিয়� বে� হতাশ� হয়ত� লেখক পরের পর্ব� ভালো করবে�, তা� প্রথ� পর্ব� সেটা� করেছেন বেশী� তবুও এত� জনপ্রিয় এই বইটা, যা� হাইপেই এই সম্পূর্ণ ট্রিলজিট� জনপ্রিয় হয়েছে বল� চল�, তা থেকে আর� বেশী কিছু এক্সপেক্� করেছিলাম�
Even a five stars rating is less for such a stupendous writing. The suspense kept on banging in my head until I read the last word, still I feel of having one-track mind. The way the real incidents are linked together to form a story is worth mentioning. Got to know about many unknown facts regarding Kolkata and its outskirts. The bibliography has given me names of many new interesting books which I want to read in future. Even the suspense with theoretical proofs regarding existence of Sherlock Holmes in person and his visit to India, is an extra pie to enjoy.
অদ্ভুত এক ঘোরে� মধ্য� আছ�,এট� কি পড়লাম! ইতিহাস থেকে শুরু কর� কাহিনী, যত� পড়ছ� অবাক হচ্ছি।নীবারসপ্তক পড়া শুরু করেছ�,পাতায় পাতা� উত্তেজনা।যার� ডিটেক্টি� উপন্যা� পছন্� করেন তাদে� প্রত্যেকের বইটা পড়া উচিত�