ŷ

musarboijatra 's Reviews > বিরূপকথা

বিরূপকথা by তানজীম  রহমান
Rate this book
Clear rating

by
30265308
's review

it was amazing

বিরূপকথা� ভেবেছিলা� গল্পসঙ্কলন হব�, লেখকের আগের বই 'অবয়�'-� যে নামটার উল্লেখ এসেছিল� আমার বিশ্বা� একটা বড� সংখ্যক পাঠক অবয়� পড়ে� বিরূপকথা পড়ত� এসেছিলেন, সবুক্তগীনে� জন্তুর খোঁজে। পড়ত� গিয়� দেখলাম, উপন্যাস। জনরা? সবাই এতদিনে যেটা জেনে গেছে�- 'বড়দের রূপকথা'�

বিরূপকথা লিখত� গিয়� লেখক যে� পাঠকের কল্পনাশক্তির চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে নেমেছিলেন। যে দুনিয়ার চিত্� এঁকেছে� উপন্যা� জুড়�, তা� উপকরণগুল� নিয়� ফ্যান্টাসি ওয়ার্ল্� বানানো যাবে ভালোভাবেই। যেমন ধরুণ, মেঘমল্লা�, মূ� চরিত্র� এক গ্রামে� দেবত�; মে�-বৃষ্টি� দেবত�, যেমনটা তা� নামে� প্রকাশ পায়� প্রত� গ্রামে একজন কর� দেবত� আছ� তাদে� দুনিয়ায�, তারা ধূমকেতুয� চড়ে বাৎসরি� উৎসব� যা� একসাথে� সে ধূমকেতুর বরফপিন্ড-চূড়োয� মাহু� বস� মশাল হাতে ধূমকেতুক� ভয� দেখা�, আর গল� যাবা� ভয়ে� দুর্বা� গতিত� ছোটে ধূমকেতু।

মল্লার ভেবেছি�, নেহা� গ্রামে� দেবত� হয়ে থাকা� চেয়� শহরে� দেবত� হওয়� বর� উত্ত�, মানুষে� বৈচিত্রময় জীবনের মাঝে বেশি সমী� মিলবে। এক দেবতাহী� শহ� খুঁজ� বে� করেও ফেলে সে উদ্দেশ্য�, কিন্তু সেখানে পৌঁছ� আর কাঙ্ক্ষি� দা� পায় না সে মানুষে� আপ�-আপ� জীবনযাত্রা� ভিড়ে। তা� মল্লার মানুষে� মাঝে মানু� সেজে মেশা� চেষ্টা কর�, তাদে� অভাবগুলো সমাধান কর� দেবতার আসনে আসী� হব� ভেবে�

উপকরণে� কথ� বলছিলাম। শহরে� মোড়� মোড়� পুরো শহরে� ম্যা� অঙ্কিত আছে। তা কিসে আবার, পিঁপড়ের ঢিবিতে! ঠি� শহরে� মতোই রাস্তাঘা� সে� ঢিবিতে, মানুষে� মতোই পিঁপড়ের ঝাঁক, আর "মানুষগুলোও যে� পিঁপড়ের� যা করছে তা� অনুকরণ কর� যাচ্ছে"�

শহরে� রাস্তায় ছোটা যানবাহনও অভিনব। যাত্রী� আসনে� সামন� বাঁধ� হরিণ, আর পেছন� বাঁধ� বাঘ। বাঘে� তাড়ায� হরিণ ছুটব�, আর দুইয়ে মিলে ছুটিয়� নিবে 'বাহন'-কে� সে� বাহন ডাকারও 'Uber' আছ�! কেমন? নিয়মি� যাত্রীদে� কাছে খোপে পোরা পাখি থাকে, যাদে� ছেড়� দিলে নির্দিষ্� ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসে� যানে� কাছে পৌঁছ� যায় তারা� তখ� যানচাল� পাখি� যাত্রাপথ খুঁজ� উদ্দিষ্ট যাত্রী� পি�-আপ পয়েন্টে পৌঁছ� যায়�

পাখি� ব্যবহা� এখানেই শে� না� নামকরা শিল্পীদে� প্রচুর কদ� সে� দুনিয়ায়। গায়কদের তো আর সম্মানী দিয়� ভাড়� কর� গা� শুনবার সামর্থ্য সবার হয� না, তা� মাঝে মাঝে শিল্পীদে� রেওয়াজস্থলে দেওয়া� ঘিরে গায়�-পাখীদে� খাঁচ� সাজানো হয়। শিল্পী সপ্তাহখানে� বা মাসখানেক গা� করেন, আর সে গা� শুনত� শুনত� পাখিরা কন্ঠস্� কর� নেয়� তাদে� পাঠানো হয� দূ�-দূরান্তে, মানু� পাখি� মুখে� শিল্পীদে� গা� শোনেন।

গা� কি কেবল আমোদের উপায�? গ্রামবাংলা� 'বিলা�'-এর মত� আছ� 'বিদায়গীতি'� কন� বিদায়ের সময় দুইপক্� মিলে এই গা� গাওয়া হয়। তাতে কনেপক্ষে� ভাষায় মেয়� বিদায়ের কালে তাদে� ভয�, কষ্ট গী� হয়। অন্যপক্ষ�, এক� গানে বরপক্ষ ব্যক্ত করেন অভয়, আনন্�, আস্থাসঙ্গীত।

তব� শিল্পীদে� মূ� কদ� হল� 'নকশিছব�'� এন্টারপ্রাইজে। এন্টারপ্রাইজ কে� বলছি, তা বলার আগ� নকশিছবির ধারণ� পরিষ্কার করি। আপনারা গাজী� গা� শুনে বা দেখে থাকল�, তা� সাথে সাদৃশ্যট� দেখত� পাবেন। � অনেকটা বায়োস্কোপের বাংলাদেশী রূ�, যেটা আর� বাহারি হয়েছে বিরূপকথায়� সান্ধ্� আসরে দড়ি� ওপ� নকশী কাঁথ� টাঙানো হয�, সে কাঁথায� আঁকা গল্পকথ� প্রাঞ্জল হয়ে ওঠ� আলোর কারসাজিতে। তা� সাথে গা� করেন গায়� এব� অর্কেস্ট্রা। আবার আবহে� সাথে মিলিয়� ধীরে অথবা দ্রু� ছবির পট পালট� যায়, টাঙানো� তা� টেনে কাঁথ� পালট� নতুন ছব� দেখানো হয়।

এন্টারপ্রাইজ বলেছ�, কারণ এই নকশিছবির প্রদর্শনী, বিরূপকথা� দুনিয়ায� বিশা� একটা ইন্ডাস্ট্রি। এখান� শিল্পীদে� খুঁজ� বে� কর� এব� রিক্রু� করার জন্য 'পরিচায়ক'রা ছড়িয়� আছেন� আছেন কাঁথ� বুননের লো�, দড়ি বোনা� জন্য 'দড়িকর', বাদক আর নানা� রক� খুচর� শিল্পীরা, যাদে� প্রদর্শনী হয়ত� নকশিছবির আসরে ভিন্� স্বা� যো� করে। একেকটা নকশিছবির দলের কার্যালয়ে প্রত্যেক ধরণে� মানুষে� জন্য আলাদ� তল� বরাদ্দ কর� আছে। আমাদের প্রটাগনিস্�, মল্লার, সবথেকে আগ্রহী ছি� এম� একটা নকশিছবির দল� চাকর� পাবা� জন্য�

"চাকর� যে� সোনা� হরিণ"- সে আমাদের দুনিয়ায� যেমন, তেমনটা বিরূপকথাতেও। চাকরির খোঁজ দেবা� জন্য আছেন 'খবরদার'-রা, হাটে� মাঝে যাদে� ঘিরে সবথেকে ভিড় জম�, আর সবার কেন্দ্রে বড� বড� ছাতা� ছায়ায� চোস্� হয়ে বস� যারা জন� জন� চাকরির খব� বিলায়� তাদে� কাছে অগ্রাধিকার পাবা� জন্য পূর্বপরিচয� যেমন কাজে�, তেমন� থাকত� হয� পর্যাপ্ত পরিমাণ� 'প্রশংসাপত্�', যত বেশি তত উত্তম। এই প্রশংসাপত্� বস্তুট� এক হিসেবে যেমন 'রেকমেন্ডেশ� লেটা�', তেমন� 'কারেন্সি'-ও।

এই তুমু� অদ্ভূত, অভিন�, উৎকট চিত্রায়নে� মা� দিয়� পাঠক এব� মেঘমল্লা� এক অবাক-কর� যাত্রায় আসী� হবেন� যত এগোবেন, তত দুনিয়� চিনবেন� আর মল্লার যত� মানুষে� বেশে মানুষে� পৃথিবীতে মানিয়� নিতে থাকব�, পাঠক তত� বিরূপকথা� মাঝে খুঁজ� পেতে থাকবেন নিজেকে� এক বিষন্নকর অভিযাত্রায� নিজে� জীবনকে� দেখত� পাবে� এক দূরবর্তী, ভিন্নরূপী দুনিয়ার ছায়ায়।
এই সবটুকু অভিজ্ঞতা� ব্যাপারে পয়ল� ফ্ল্যাপে� সতর্� করেছেন লেখক, যেটা আসলে এগোত� এগোত� আর� বোধগম্� হয়।

" নকশিকাঁথায� যেসব পশুপাখ�, ফু�, মা� বোনা থাকে, তাদে� সাথে বাস্তবের প্রাণী বা উদ্ভিদের তেমন একটা মি� নেই। রঙ, আকৃত�, আকার সব� বদলে দেওয়া হয়। তারপরে� আমাদের চিনত� সমস্যা হয� না� কারণ সেটা সত্যের সাথে আপ� নয়। বা প্রকৃতির সাথে� সত্যকে উপস্থাপনের অন্য একটা ধরনমাত্র� কিছু অংশক� সহ� কর�, যে� বাকিটা� জটিলতা স্পষ্ট হয়। কিছু অংশক� রাঙিয়� তোলা, যে� মন�, মাথায় আর চোখে সত্যটা গেঁথ� যায়� পরিচিতির আড়ালে যে� হারিয়� না যায় সৌন্দর্য চেনা� ক্ষমতা� প্রকৃতিক� জানা� ক্ষমতা� বিশ্বক� বঝার-অন্ত� মানুষে� পক্ষ� যতটুকু বোঝা সম্ভ�- ক্ষমতা�
রূপকথা� অনেকটা তেমনই। "

বিরূপকথা
লেখক : তানজী� রহমা�
জনরা : ফ্যান্টাসি/রূপকথা
প্রকাশ� : অবসর
প্রকাশকা� : বইমেলা ২০২১
পৃষ্ঠাসংখ্যা : ২১�
মুদ্রি� মূল্� : ৪০০টাক�
13 likes · flag

Sign into ŷ to see if any of your friends have read বিরূপকথা.
Sign In »

Reading Progress

May 5, 2021 – Started Reading
May 5, 2021 – Shelved
May 5, 2021 – Finished Reading

No comments have been added yet.