ŷ

Rehnuma's Reviews > মসলা� যুদ্�

মসলার যুদ্ধ by Satyen Sen
Rate this book
Clear rating

by
135471196
's review


❛কষা মাংস খাবে�? আসেন একটু রেসিপিটা বলি।�

প্রথমে তেলে� মধ্য� এলাচ, তেজপাত�, দারুচিনি দিয়� একটু ভেজে নিন। একটা সুঘ্রা� ছড়িয়� পড়বে। এরপর পেঁয়া� কুচি (নায়িকাদের মত� moon moon শেপে না কাটলেও হব�!) কর� কেটে নিয়� তেলে� মধ্য� ছেড়� দিন। হালক� লালচ� হয়ে আসলে সেখানে হলুদ, মরিচ, জিরা আর গর� মসলা� গুঁড়া দিয়� অল্প একটু পানি সহকারে নাড়তে থাকুন। মসলা ভাজা হয়ে গেলে আরেকটু পানি দিয়� নিন। এরপর আদ�, রসুন আর পেঁয়া� বাটা দিয়� আবার কষাত� থাকু� হালক� আঁচে...

মসলা কষতে থাকুক। এবার� একটু মসলা� অতীতে যাই।

আমাদের খাওন মানে� মসলা� বাহার। এই একটু ফোড়�, এই গর� মসলা একদম ভেজে তেলে ভেসে উঠলে কী সুবাসটাই না আস�! বিদেশি মানু� মসলা, ঝা� কম খায়� এদের অনেক� তো ক্যাপ্সিকা� খেয়� বল�, ❛O my god! Toooo spicy!� জাপানে তো পাতল� ল্যারলের� স্যু� খায়, নে� মসলা� কোনো উপস্থিতি� ভোজন রসিক জাতি হিসেবে মসলাদা� খাবারে� বদলে এস� দেখল� মু� ব্যাকা হবেই!

তব� এই যে স্বা� বৃদ্ধি করতে এত মসলা� ব্যবহারে� হিড়িক, এর অতীতট� � ক্তাক্ত। শ্রমিকের � ক্তে, ঘামে আর জুলুমে সিক্ত।

মসলা উৎপন্ন হয়ে তা বিকোতে আসার সবথেকে বিখ্যা� বন্দ� কালিকট� তারা মসলা� একচেটিয়� ব্যবসা করছে� আর ওদিক� কালিকট থেকে আর� বণিকের� সে� মসলা ইউরোপে নিচ্ছে� তুমু� লা� করছে� ভেনিসও চড়া দামে এগুল� বিক্রি কর� পয়স� কামাচ্ছে� এভাবেই চলছিল।
কিন্তু সমুদ্রের অনেক দূরে� একটি দে� ভাবল� না এভাব� হব� না� অন্যের মাধ্যম� আর নয়। আমরা নিজেরা� এই মসলা� রাজত্ব করবো� যে� ভাবা সে� কাজ। তব� পরিকল্পন� করলো অনেকদি� ধরে। বলছিলা� পর্তুগিজদে� কথা। তারা মসলা� খোঁজ করতে লাগলো। কীভাবে ভারতবর্ষ� আস� যায় সে পথ খুঁজলো� পথের মাঝে বাঁধ� আছ� মুসলিম রাজ্য। ক্রু সে� পরবর্তী থেকে খ্রিস্টা� আর মুসলিম� দা কুড়ালের সম্পর্ক। তা� খুঁজলে� অন্য পথ� একদল ম্যা� তৈরি কর� জাহা� নিয়� সমুদ্র পাড়� দিয়� আগ� হা� হকিক� দেখে গেল। এরপর কামা� দাগা নিয়� আফ্রিক� পাড়� দিয়� ভারতবর্ষ� ঢুকলেন ❛ভাস্ক� দা গামা❜। তাকে এই উপমহাদেশের আবিষ্কার� বললে� ভেতরের ইতিহাস একটু ভিন্ন। তিনি এব� তা� দল এলেন, � স্যুবৃত্তি শুরু করলেন। নিজেদে� সমুদ্রের অধিপতি বল� বয়া� নিয়� নিলে� আর নির্বিচারে শুরু করলে� � ত্যা� মুসলিমদে� প্রত� অগাধ ঘৃণা� বর্ষ� করতে লাগলেন� হজ যাত্রীদে� জাহা� লু�, তাদে� পুড়িয়ে দিয়� আপ� ধর্মের দোহা� দিয়� নিজেদে� শ্রেষ্ঠত্ব জাহি� করতে লাগলেন� এর� মাঝে উদ্দেশ্য পূরণের কা� করতে লাগলেন� কালিকট এস� ব্যবসা� অনুমতি নিয়� নিলেন। তব� সেখানে রাজা আর প্রজায� ভাব। কালিকট বন্দরে� রাজা� সাথে ভা� আছ� আর� বণিকদের। তারা বলেন এই পর্তুগিজদে� উদ্দেশ্য ভালো নয়। রাজা শুনলেন� এব� প্রমাণ পেলেন।

এরপর পর্তুগিজদে� সাথে বেধে গেলো তাদে� সং ঘর্ষ� শুরুটা হয়েছি� ১৪৮৮ সা� থেকে� এরপর থেকে শুরু (১৪৯৭) হল� ❛মসলার যু দ্ধ❜� তব� তাদে� ঐক্যের সাথে পেরে উঠলো না গিজরা। পিছু হটলো� আবার লোকব� নিয়� অন্যদিকে দখলে� চেষ্টা করলো� এব� সফ� হলো। এই সফলত� অনেকটা� ছি� কূটনৈতিক কৌশল আর ধর্মের দোহাই। যুগে যুগে সবাই এই ধর্ম ব্যবসা করেছে। জাগতিক আপ� স্বার্থে, ক্ষমতা� লোভে ঈশ্বরক� যু দ্ধে নামিয়েছে।
১৫০৩/০৪ থেকে প্রায় ১৫৯৯ পর্যন্� বা আরেকটু বেশি সময় ইউরোপে নিজে� আধিপত্� বিস্তা� কর� ফেলেছি� পর্তুগিজরা� মসলা� ব্যবসা কর� ফুলে ফেঁপ� উঠেছিল� এরপর এক� পথ� পা দিলো ডাচেরা� তারা� এক� আধিপত্� বিস্তারে� জন্য পথ খুঁজ� এলো। পর্তুগিজদে� হটালো। সাথে দেশীয় কিছু লোকে� সহায়ত� তো ছিলই�

জা লি� পরিবর্তন হল� কিন্তু মজলু� অপরিবর্তিত� ইন্দোনেশিয়া� লোকেরা আপ� ভূমিতে� নির্যাতি�, নিষ্পেষি� হত� লাগলো। একসময় ডাচর� নিজেদে� নানা নিয়� চাপিয়� দিতে লাগল�, করায়ত্ব করলো জম�, জো� কর� লবঙ্� চা� নিষিদ্� করলো� উপনিবে� তৈরি করলো� এভাবেই নির্যাতনের স্বীকা� হত� লাগল� এই উপমহাদেশের মানুষ।
এরপর এল� সাদা চামড়া� ব্রিটিশরা। এরাও মসলা� ঘ্রাণে� এসেছিল� আধিপত্� ছড়িয়েছিল� রা� করেছিল দুইশ বছরে� মতো। ডাচর� যেমন চাষে� জন্য নি র্যাতন করতো, তেমন� ইংলিশর� করলো নী� চাষে� জন্য অকথ্� নি র্যাতন� সে এক অন্য ইতিহাস�
মসলা� জন্য, শুধু মাত্� স্বা� বর্ধনে� একটা উপকরণে� আধিপত্�, সাম্রাজ্� বিস্তা� আর ধর্মের দোহা� দিয়� অগণি� মানুষে� � ক্তে রঞ্জিত হল� ভূমি�
যা চলমা� আছ� ভিন্� কোনো রূপে, চলমা� থাকবে। ধর� বদলাবে কিন্তু মূ� এক� থাকবে।

হায়রে মসলা!


পা� প্রতিক্রিয়া:

❝মসলার যু দ্ধ❞ সত্যেন সেনে� লেখা অসাধার� এক বই� থ্রিলা� উপন্যাসে যেমন থ্রি� পাওয়া যায় ১০� পৃষ্ঠা� ছোট্� এই প্রবন্ধে রোমাঞ্চে� পরিমাণ কম নয�!

এই উপমহাদেশ� রা� করেছ� অনেকে। সম্পদে� ভান্ডা� থেকে লু�, নি র্যাতন আর কাড়াকাড়ি হত� হত� বাকি নে� কিছুই।
সত্যেন সে� সে� ইতিহাসের� এক টুকর� এন� হাজি� করেছেন বইতে� মসলা� ইতিহাস করুণ� এত� লেগে আছ� মানুষে� � ক্ত।
আধিপত্� বিস্তারে� খেলায় পর্তুগিজ, ডা�, ওলন্দা�, ব্রিটি� সবাই এসেছে। দেখে গেছে কী আছ� এই উপমহাদেশে। থেকেছে, জুলু� করেছ�, নিজে� কো� ভর্ত� কর� নিয়� ভেগে গেছে�
মসলা� এই আধিপত্� বিস্তারে� জন্য হানাহানি� শুরুটা পঞ্চদশ দশকে� একদম শেষে� দিকে� একটু প্রস্তুত� শুরু হয� এরপর প্রায় দশ বছ� পর তথ� ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয� গিজদের অভিযান� সাফল্যের মু� দেখত� একটু দেরি হলেও তা পুষিয়� নিয়েছে। বণিকের� শুধু বাণিজ্� করে। কিন্তু পর্তুগিজ এই � স্যু গুলো বাণিজ্যে� সাথে করতো লুণ্ঠন� মন� অসী� ঘৃণা রাখত� মুসলিমদে� জন্য� সে� ঘৃণা� প্রমাণ তারা দিয়েছ� তাদে� কাজে�
স্কুলে থাকত� ইতিহাস� ভাস্কো দা গামাকে নিয়� সুবাক্� পড়ে তা� প্রত� যে ধারন� মন� থাকব� তা� ভি� নড়ে যাবে ইতিহাসের ভেতর� পা� করলে� মসলা� এই অভিযান, মৃ ত্যু� মিছিলে� সামন� নেতৃত্� দিয়েছিলেন তিনি� নিজে� বর্বতা� প্রকাশ করেছিলেন, করেছিল তারপ� আগ� গিজরাও�
লেখক কালো এই অধ্যায়ে� বর্ণনা করেছেন নিপুণভাবে। প্রশ্ন রেখে গেছে�, করেছেন স্বগক্তি� ইতিহাসের করুণ এই অধ্যায� গুলো যে� সব কালে� জন্য� এক�
সবখানে� আছ� ক্ষমতা� লো�, আধিপত্� বিস্তা�, ধর্ম ব্যবসা, হানাহানি� এই দুনিয়ার কাঠামো যে কত লা শে� উপ� দাঁড়িয়� আছ� তা� কোনো সীমা নেই।
পর্তুগিজ থেকে ডা� এরপর ব্রিটি� রাজে এস� ইত� টেনেছে� লেখক� মাঝে এনেছিলেন অল্প বিস্তর কফির ইতিহাস� সেখানে� আপ� স্বার্�, আপ� আঁখে� গোছানো আর জু লুমে� কথ� আছে।
বইটা দারুণ। এত সুন্দর কর� ইতিহাস যে লেখা যায় সেটা এই বইটা না পড়ল� বোঝা যাবে না�
আমরা বল� আগের যু�, মানুষে� অতী� ভালো ছিল। তারা সুখে ছিল। কিন্তু ইতিহাস ঘাটল� দেখা যায় যুগে যুগে সাধারণ মানু� কত নি র্যাতনের মধ্য� দিনাতিপা� করেছে। কত হাহাকা� যে চাপা পড়ে গেছে আধুনিক সভ্যতা� নিচে তা� ইয়ত্ত� নেই।


❛ক্ষমতার � ড়াই ছি�, আছ� থাকবে। দাপট দেখানো� জন্য বল� হব� সাধারণ মানুষ। এটাই ইতিহাস� ইতিহাস পড়ত� পড়ত� সে� নিয়� দুঃখ করতে করতে� হয়ত� আম� কিংব� আপনি এক প্লে� সুস্বাদু বিরিয়ান� কিংব� মসলা� গুণে তৈরি কষ� মাংস নিয়� বসবো� খাবো আর বল�, ❛আ�! কী সুস্বাদু� আহার� ইতিহাসটা কত দুঃখের!❜❜

ওহ, থাকন� কষ� মাংসের রেসিপি অসম্পূর্�!


11 likes · flag

Sign into ŷ to see if any of your friends have read মসলা� যুদ্�.
Sign In »

Reading Progress

February 12, 2025 – Shelved
February 13, 2025 – Started Reading
February 13, 2025 – Finished Reading

No comments have been added yet.